২০২২: যে সব ঘটনা রেখে গেল ছাপ

বছরজুড়েই যুদ্ধ নানাভাবে ভুগিয়েছে, ভোগাচ্ছে এখনও; নতুন বছরকেও স্বাগত জানাচ্ছে মন্দার চোখ রাঙানিতে। এরমধ্যেই দেশের নানা ঘনঘটা ছাপিয়ে রাজনীতিও নজরে থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে নির্বাচনের ঠিক আগের এ বছরে।

মাসুম বিল্লাহবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2022, 07:29 AM
Updated : 31 Dec 2022, 07:29 AM

বছর শেষ হলেও যুদ্ধ থামেনি; গোলাবারুদ আর বোমার পাল্টাপাল্টিতেই কেটে গেল ১০ মাস, সীমানা ছাড়িয়ে যা ভোগাচ্ছে ধনী-গরিব, কাছে দূরের সব দেশকেই। নতুন বছরেও যুদ্ধ বিদায় হবে কি না সেই অনিশ্চয়তাতেই স্বাগত জানাচ্ছে মন্দা।

বছরের শুরুতে যখন প্রতিবেশী ইউক্রেইন সীমান্তে রাশিয়া সৈন্য সমাবেশ করছিল তখনও এ উত্তেজনা যুদ্ধে গড়াবে; সেটি এক দশক বাদে আবার এক মন্দার মুখোমুখি ঠেলে দেবে বিশ্বকে তা কতটাইবা কল্পনা করা গিয়েছিল।

হাজারো মাইল দূরের সেই যুদ্ধ নাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকেও। বছরজুড়েই নানাভাবে তা ভুগিয়েছে, ভোগাচ্ছে এখনও। অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার স্বাভাবিক গতিকে করে তুলেছে অস্থির।

মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতিতে ছন্দ আসার ঠিক আগের সময়টাতে সব কিছুই ওলটপালট হয়ে গেছে রাশিয়া-ইউক্রেইনের বারুদে ঠাসা যুদ্ধ দিনের কারণে। মাঠের যুদ্ধে না থাকলেও একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পশ্চিমের ধনী দেশগুলো তাতে রসদই জুগিয়েছে। এতে কাছের ইউরোপ যেমন ভুগছে, তেমনি বাংলাদেশেও মূল্য চুকাচ্ছে উচ্চ মূল্যস্ফীতির জালে আটকে গিয়ে।

বছরজুড়েই ভোগ্যপণ্যের চড়তে থাকা বাজারে গিয়ে খেই হারিয়েছে সীমিত আয়ের মানুষ। সুযোগ বুঝে তেল-চিনি বাজার থেকে উধাও করে মুনাফালোভীরা নিজেদের পুরনো চরিত্র নিয়েই হাজির হয়েছে।

জনগণের এমন দুরবস্থাকেই সরকারের বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে সংসদ নির্বাচনের বছর খানেক আগে কাজে লাগাতে উঠে পড়ে লেগেছে বিএনপি; যা বছরের শেষ দিকে এসে রাজনীতিতে কিছুটা উত্তাপ ছড়িয়েছে।

বছরজুড়ে ঘটনার নানা ঘনঘটা সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে, গুজব ও গুঞ্জনেও জড়িয়েছে মানুষ, ঘটেছে প্রাণহানিও। এমন আশা নিরাশার দোলাচলের মধ্যেই নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ হিসেবে পদ্মা সেতু চালু হয়েছে। মেট্রোরেল যুগে ঢুকেছে দেশ, দিয়েছে নতুন অভিজ্ঞতা। এ দুই মেগাপ্রকল্প ঘিরে উচ্ছ্বাস ছড়িয়েছে বছরের মাঝে ও শেষে। সামনের বছরেও দুয়ার খোলার দারপ্রান্তে পৌঁছেছে আরও কয়েক বড় প্রকল্প।

ব্যর্থতা ও অপ্রাপ্তির দিনগুলোকে পেছনে ফেলে সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে মেয়েদের অর্জন আনন্দে ভাসিয়েছে দেশকে, আশা জাগিয়েছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার।

হুমকি সত্যি করে ইউক্রেইনে যুদ্ধে জড়াল রাশিয়া

রাশিয়া ২৪ ফ্রেব্রুয়ারি যখন ইউক্রেইন আক্রমণ করে বসে সেসময়ও মস্কোবাসী ভেবেছিল যুদ্ধ আর কতটা গড়াবে; রুশ সেনারা দ্রুতই কিয়েভের দখল নেবে, জেলেনস্কির সরকারকে হটাবে আর পুতিনের পছন্দের সরকার বসাবে।

সেই থেকে ১০ মাস কেটে গেলেও তা আর হয়নি। অনেক জায়গাতেই বরং পিছু হটতে হচ্ছে রুশ বাহিনীকে, পুর্নদখল নিয়েছে ইউক্রেইন। এখনও অনেকগুলো ফ্রন্টে চলছে তুমুল লড়াই।

এসময়কালে মস্কোবাসীকেও দিতে হচ্ছে চরম মূল্য। যুদ্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় জেরবার তাদের জীবনযাত্রা। মাঠের যুদ্ধ প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও কয়েক দশক পরের বড় ধরনের এ যুদ্ধের মূল্য ইউরোপও চুকাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে।

যুদ্ধের ভয়বহতা টের পাওয়া যাচ্ছে মূল্যস্ফীতিতে। উচ্চ মূল্য ও পণ্যের সরবরাহ সংকটে যা ছড়িয়ে পড়ছে দেশে দেশে; এক দশক পর আরও এক মন্দার মুখে পড়েছে বিশ্ব।

করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার ওই সময়কালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নেটো জোটে ইউক্রেইনের যোগ দেওয়া নিয়ে লেগে যাওয়া এ যুদ্ধ পুরো বিশ্বকেই এখন সংকটময় এক সময়ে এনে দাঁড় করিয়েছে, যা থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও।

সুদূরের এ যুদ্ধে ভুগছে বাংলাদেশও; মহামারীর ক্ষত কাটিয়ে অর্থনীতি গতি পাবার মুখে আবার শুরু হয়েছে রক্তক্ষরণ।

তেঁতে ওঠা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানির চড়া মূল্য দিতে গিয়ে ডলার বেরিয়ে গেছে কাড়িকাড়ি। এতে পণ্যের বাজার হয়ে পড়েছে বেসামাল। শুল্ক ও কর কমিয়েও তা সহনীয় করতে পারছে না সরকার।

চিনি, তেল, আটাসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে সময়ে সময়ে বাজারে তৈরি করা হয় ‘কৃত্রিম’ সংকট, যা দামের উল্লম্ফনকে আরও লাগাম ছাড়া করে তোলে।

Also Read: ইউক্রেইনে বাংলাদেশি জাহাজে গোলা, নিহত ১

Also Read: আক্রান্ত ইউক্রেইন, ইউরোপে যুদ্ধ ফেরাল রাশিয়া

Also Read: ২০২২ ফেরাল যুদ্ধ, বিশ্ব ফের অনিশ্চিত পথে

Also Read: ভবিষ্যতের বিপদ এড়াতে আগেভাগে সতর্ক হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

যুদ্ধের অশনির কথা তুলে ধরে সাশ্রয় ও কৃচ্ছ্বতার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনীতির এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দেশবাসীকে যেমন ভরসা দিচ্ছেন, তেমনি ‘দুর্ভিক্ষ’ দিন ফেরার শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন। এরপরই আবার পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ থাকার নিশ্চয়তা দিয়ে নির্ভয় দিচ্ছেন। স্বাবলম্বী হয়ে আমদানিনর্ভরতা কমাতে প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদে আনার অনুরোধও করছেন।

যুদ্ধের আবহ বাড়ার মধ্যেই রিজার্ভ শূন্য শ্রীলঙ্কার দেউলিয়া হওয়ার খবরও যেন ভয় ধরিয়েছে। এসময়কালে সরবরাহ ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক দেদারসে ডলার বিক্রি করতে থাকলে রিজার্ভেও টান পড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামলাতে আরও গভীর সংকট এড়াতে ডলার সাশ্রয়ের পথে এগোয় সরকার।

জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়। উচ্চ মূল্যে খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ করা হয়। ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন থামিয়ে ডলার বাঁচানোর চেষ্টা চলে। হারিয়ে যাওয়া লোড শেডিং ঘোষণা দিয়ে ফিরিয়ে আনা হয়।

গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ হয় কারখানার চাকা, গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে ব্ল্যাক আউটের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয় দেশ। অথচ বছরের প্রথম প্রান্তিকেই দেশ ছুঁয়েছিল শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাইলফলক।

Also Read: ফের গ্রিড বিপর্যয় কেন? বিদ্যুৎ বিভাগও অন্ধকারে

Also Read: গ্যাস সঙ্কটে গতিহারা পোশাক খাত

Also Read: চাহিদা-উৎপাদনের ফারাকে লোড শেডিং আরও বাড়ছে

Also Read: সয়াবিন তেল: বাজার থেকে এখনও খালি হাতে ফিরছেন ক্রেতারা

Also Read: বাজারের চিনি গেল কোথায়?

যুদ্ধের কারণে বিশ্ব বাজারে উচ্চ মূল্যের প্রভাবে আটা, ভোজ্যতেল, চিনি থেকে শুরু করে চাল, মাছ-মাংস, শাক সবজি সবকিছুর দামই বাড়ে পাল্লা দিয়ে। যুদ্ধের সুযোগে তেল, ডিম ও চিনির সরবরাহ সংকট তৈরি করে দাম তোলা হয় আকাশে।

ডেঙ্গুর প্রকোপে আতঙ্ক

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রায় তিন বছরের মধ্যে এ বছর ছিল মহামারীর ধাক্কা সামলে ওঠার সময়। তবে ডেঙ্গুতে মৃত্যু আতঙ্ক ছড়িয়েছে, ঢাকা বাইরেও প্রকোপ বাড়ে মশাবাহিত এ রোগে। পাশাপাশি ডায়রিয়ার প্রবণতাও ছিল।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ বছর সংক্রমণ আস্তে আস্তে কমতে থাকে। ২০২২ সালের শেষ দিকে এসে দৈনিক সংক্রমণ ৫০ এর নিচে নেমেছে; মৃত্যুহীন দিনই কাটছে বেশি। তবে একেবারে নতুন আরেক উপধরন নতুন করে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা জাগাচ্ছে।

কোভিডের বিস্তার কমে আসার মধ্যে স্বস্তি ফেলার আগেই হানা দেয় ডেঙ্গুর প্রকোপ। ২০১৯ সালের রেকর্ড রোগী ও মৃত্যুর তিন বছরের মাথায় এবার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এইডিস মশাবাহিত এ রোগ।

Also Read: কোভিডের নতুন উপধরন: বন্দরে ‘স্ক্রিনিং’ জোরদারের নির্দেশ

Also Read: ডেঙ্গু: সময় ও উপসর্গে পরিবর্তন ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের

Also Read: ডেঙ্গু চিকিৎসা: খরচের খাতায় বাড়তি চাপ

Also Read: আইসিডিডিআর,বিতে ১৫ দিনে ১৮ হাজার ডায়রিয়া রোগী

বর্ষা পেরিয়ে বছরের শেষভাগে এসে মধ্য নভেম্বরে ৬৪ জেলার মধ্যে শুধু কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা ছাড়া সব জেলাতেই হাসপাতালে ভর্তি হয় ডেঙ্গু রোগী। নভেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা এযাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর ডেঙ্গুতে এবারই সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু দেখেছে বাংলাদেশ।

এবার সব মিলিয়ে অর্ধলক্ষাধিক ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ২২০ ছাড়িয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন রোগের উপসর্গ ও ধরন পাল্টানোর কারণে দ্রুতই রোগীর শারীরিক অবনতির হঠাৎ মৃত্যু হয়, যা আতঙ্ক ছড়ায় সবার মধ্যেই।

এ বছর দীর্ঘসময় জুড়ে তাপদাহের প্রভাব থাকায় মাঝসময়ে ডায়রিয়ার প্রকোপও বেড়েছিল বেশ। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও ছিল প্রচুর। এপ্রিলে ঢাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব কমাতে পাঁচ এলাকার ২৩ লাখ মানুষকে ডায়রিয়া ও কলেরার মুখে খাওয়ার টিকা খাওয়ানোর কর্মসূচি হাতে নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এক নৌকাডুবিতেই ৭১ জনের মৃত্যু

নদীর ওপারেই অল্প একটু দূরত্ব পাড়ি দিতে তারা নৌকায় উঠে পড়েছিলেন বেশি সংখ্যায়। সামান্য দূরে যেতেই তা কাত হয়ে ডুবে গেলে সলিল হয় সব বয়সী যাত্রীদের। ২৬ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে তীর্থযাত্রীদের এ নৌকা ডুবিতে প্রাণ যায় ৭১ জনের, যা দেশজুড়ে শোকের আবহ তৈরি করে।নৌকাটিতে প্রায় দেড় শতাধিক যাত্রী ছিলেন।

মর্মান্তিক আরেক দুর্ঘটনা ঘটে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে। ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে ৫১ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং আহত হয় দুই শতাধিক ৪ জুন রাতের এ আগুন নেভাতে সময় লেগেছে ৮৬ ঘণ্টা।

Also Read: পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি: ৪৭ দিন পর আরেক লাশ উদ্ধার

Also Read: করতোয়ার পাড়ে স্বজনদের আহাজারি, বাড়ি বাড়ি মাতম

Also Read: উৎসবের মুহূর্ত শোকে স্তব্ধ

মর্মান্তিক আরেক দুর্ঘটনা ঘটে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে। ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে ৫১ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং আহত হয় দুই শতাধিক ৪ জুন রাতের এ আগুন নেভাতে সময় লেগেছে ৮৬ ঘণ্টা।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে দিয়েও যেতে হয়েছে দেশকে। জুনের ভয়াবহ বন্যায় দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে সিলেটে ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়। সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পেছাতে হয়।

Also Read: বিএম ডিপো এখন পোড়া ধ্বংসস্তূপ

Also Read: বিএম ডিপোর আগুন রাসায়নিক থেকেই, দায় ছিল সবারই: তদন্ত কমিটি

বন্যার পাশাপাশি এ বছর জুলাই-সেপ্টেম্বরে বজ্রপাতের প্রবণতা বাড়ায় প্রাণহানি, কয়েক দফা তাপপ্রবাহে দেশজুড়ে বিরূপ আবহাওয়া, উপকূলে সিত্রাংয়ের মত ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে।

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে ২০ মার্চে সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন একটি মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির পর অন্তত ছয়জনের প্রাণহানি ঘটে।

Also Read: দেড় যুগে এমন বন্যা দেখেনি সিলেটের মানুষ

Also Read: ঝড় গেছে, এবার ক্ষতির হিসাব

Also Read: শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: ৬ লাশ উদ্ধার, রাতে বন্ধ তল্লাশি

Also Read: গার্ডার চাপায় চিড়ে চ্যাপ্টা গাড়ি, ভেতরেই গেল ৫ প্রাণ

Also Read: খৈয়াছড়ায় ১১ মৃত্যু: থেমে থেমে মাতম, চোখের জলে বিদায়

Also Read: প্রাণে বেঁচে গেছে, হারিয়েছে ‘জীবন’

অন্যান্য বছরের মত এবারও সড়কে প্রাণহানির ঘটনা ছিল বেশ। বিশেষ করে মোটরসাইকেলে দুর্ঘটনার খবর এসেছে একের পর এক। বেসরকারি এক সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, জুন মাসেই দুই চাকার এ বাহনে ২০৪ আরোহীর প্রাণ যায় সড়কে।

অগাস্টে উত্তরায় গার্ডারের চাপায় ৫ জনের মৃত্যুরঘটনাও আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। ১৫ অগাস্ট ঢাকার উত্তরায় বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেইন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কংক্রিটের গার্ডার আছড়ে পড়ে থেঁতলে যায় রাস্তায় থাকা একটি গাড়ি, ভেতরেই প্রাণ গেছে এক পরিবারের পাঁচজনের।

এর আগে ২৯ জুলাই চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে লেভেল ক্রসিংয়ে উঠে পড়া পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়।

অন্য দুর্ঘটনার মধ্যে ১৫ অগাস্টে পুরান ঢাকার চকবাজারে একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুনে ঘুমের মধ্যে ৬ হোটেল কর্মীর মৃত্যু হয়।

প্রকাশ্যে সড়কে গুলিতে আওয়ামী লীগ নেতা খুন, রিকশায় প্রাণ গেল ছাত্রীর 

ঢাকার শাহজাহানপুরে সড়কে ভিড়ের মধ্যে মোটরসাইকেলে করে এসে সবার সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে।

২৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে এলোপাথাড়ি গুলিতে টিপুর গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন গাড়িচালক মুন্নাও।

অনেকেই এ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের হিসেবে উল্লেখ করেন। নানামুখী আলোচনায় এ খুনের সঙ্গে দুবাইয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের সংযোগের কথাও আছে। টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলির করা মামলায় চার-পাঁচ ধরে মোট ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

Also Read: ঢাকায় শাহজাহানপুরে সড়কে গুলি, আওয়ামী লীগ নেতাসহ দুজন নিহত

Also Read: বাড়ি ফিরতে চেয়েও ফেরা হল না প্রীতির

Also Read: গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে টিপুকে গুলি করে হেলমেটধারী এক লোক: প্রত্যক্ষদর্শী

বছর শেষে এসে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের রহস্যময় মৃত্যু বেশ নাড়া দেয়। ৪ নভেম্বর দুপুরে কোনাপাড়ার বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন ফারদিন; বলে গিয়েছিলেন, পরদিন তার পরীক্ষা রয়েছে বলে রাতে বুয়েটের হলেই থাকবেন। এরপর আর বাসায় ফেরেননি, পরীক্ষাও দেননি। তিন দিন নিখোঁজ খাকার পর ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে তার লাশ পাওয়া যায়।

প্রথমে হত্যাকাণ্ড এবং এরপর দুই তদন্তকারী সংস্থা ডিবি ও র‌্যাবের ভিন্ন ধরনের তথ্য দেয়। ২৪ বছর বয়সী এ শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে দুই সংস্থার ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য প্রথমে বিভ্রান্তি ছড়ায়।

পরে তদন্তে ‘আত্মহত্যার’ উপসংহারে পৌঁছায় র‌্যাব ও ডিবি। ৪০ দিন পর ১৪ ডিসেম্বর দুই সংস্থাই বলেছে, নিখোঁজ হওয়ার দিন ভোররাতে ডেমরার সুলতানা কামাল সেতু থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ফারদিন। ফারদিনের বাবা সাংবাদিক কাজী নূরউদ্দিন রানা অবশ্য মানতের রাজি নন।

Also Read: ফারদিন খুন হননি, আত্মহত্যা: ডিবি-র‌্যাব

Also Read: ফারদিন যাত্রাবাড়ী গেলেন, লেগুনায় উঠলেন, তারপর? তদন্ত গতিহারা

Also Read: ফারদিনের ‘আত্মহত্যা’: ডিবি-র‌্যাবের ব্যাখ্যায় ‘সন্দেহ কেটেছে’ সহপাঠীদের

Also Read: শিক্ষককে পিটিয়ে খুন: আশুলিয়ার সেই ছাত্র গ্রেপ্তার

Also Read: টাঙ্গাইলে বাসে যাত্রীবেশে ‘ডাকাতি, দলবেঁধে ধর্ষণ’

Also Read: ডা. বুলবুল হত্যায় গ্রেপ্তার আরও দুজনের স্বীকারোক্তি

বছরের মাঝামাঝিতে ঢাকার আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্কুলমাঠে আশরাফুল ইসলাম জিতু নামে এক শিক্ষার্থী ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষকের মৃত্যুর এ ঘটনা নাড়া দেয় অনেককেই।

২৭ মার্চ ভোরে রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকায় গরিবের ডাক্তার হিসেবে পরিচিত আহমেদ মাহী বুলবুল (৩৮) নামে এক দন্ত চিকিৎসককে ছুরি মেরে হত্যার ঘটনাও আলোচনা তৈরি করে।

হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে সেদিন বুলবুলের উপর হামলা হয়েছিল বলে জানায় পুলিশ। মগবাজারের ‘রংপুর ডেন্টাল’ নামের একটি চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখতেন। পাশাপাশি ঠিকাদারিতে যুক্ত ছিলেন।

পদ্মা সেতু খুললো, মেট্রোরেল চললো

বিশ্ব ব্যাংকের সরে যাওয়ার এক দশক পর এ বছরের মাঝামাঝিতে চালু হয় নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু। ২৫ জুন সেতু উদ্বোধনের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ স্মরণীয় করে রাখতে দেশজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ।

আর বছরের শেষ প্রান্তে ২৮ ডিসেম্বর ঢাকাবাসীর স্বপ্নের দেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন তা যানজটের নগরীতে যাত্রী পরিবহন শুরু করে।

ঢাকাতে আরেক মেগাপ্রকল্প বিআরটি, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর নিচে দেশের প্রথম টানেল, কক্সবাজারে রেল সংযোগের কাজও শেষের পথে; যা উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা উন্মোচন করবে বলে আশায় সরকার।

Also Read: একটি সেতু, খুলবে নতুন যুগের দুয়ার

Also Read: পদ্মা সেতু: স্বপ্ন থেকে বাস্তবের পথরেখা

Also Read: এক নজরে পদ্মা সেতু

Also Read: মেট্রোরেলে চড়ে যোগাযোগের নতুন পর্বে ঢাকা

Also Read: ফুরাচ্ছে অপেক্ষা, দুয়ার খুলছে মেট্রো ট্রেন

Also Read: বাংলাদেশ যেভাবে পৌঁছাল মেট্রোরেল স্টেশনে

ডলারের সেঞ্চুরি

বছরের শেষ দিকে এসে ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবসহ নানা কারণে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি নিম্নমুখী হলেও তা এখনও সহনীয় নয়। বিশ্ববাজারে উচ্চমূল্যে আমদানি ব্যয় বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে সরবরাহ সংকটে ডলারের দাম বাড়তে থাকে বছরের শুরু থেকেই।

একটু একটু করে তা বেড়ে এক পর্যায়ে সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে যায়। ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে টাকার মান কমে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ব্যাংকেই ১১০ টাকা ছাড়িয়ে যায়; খোলাবাজারে ওঠে ১২১ টাকা।

Also Read: খোলা বাজারে একশ ছাড়াল, ডলার ‘মিলছে না’ তবুও

ডলারের চাহিদা সামলাতে শুধু জুলাই থেকে গত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬০৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ নিয়ে শুরু করা ২০২২ সালের শেষ মাসের মাঝামাঝিতে তা ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

রেকর্ড বাণিজ্য ঘাটতির দায় মেটাতে বিশ্বজুড়ে মন্দার পদধ্বনির মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন এবং বিশ্ব ব্যাংক থেকে এক বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা চায় বাংলাদেশ।

দীর্ঘ আলোচনা শেষে আইএমএফের সঙ্গে ঋণ চুক্তির প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছে বাংলাদেশ। ঋণ পেতে আর্থিক খাতের সংস্কারও শুরু করে সরকার।

Also Read: ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে আইএমএফ, প্রাথমিক সমঝোতা

Also Read: আইএমএফের ঋণ: দুয়ার খুলবে আরও বিদেশি অর্থায়নের

Also Read: বিশ্ব ব্যাংকের কাছে আরও ঋণ চাইলেন অর্থমন্ত্রী

ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের উত্তাপ রাজনীতিতে

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চার বছর পার হলেও রাজনীতির মাঠ ছিল অনেকটাই উত্তাপহীন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির তেমন কোনো পাল্টাপাটি কর্মসূচি ছিল না।

বছরের শেষে আওয়ামী লীগ কাউন্সিল ও সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বিএনপি কাউন্সিল না করলেও নির্দলীয় সরকারের আন্দোলনকে সামনে এগোতে বিভাগীয় সমাবেশে সফলতার সঙ্গে শেষ করে। জাতীয় পার্টি নিজেদের অভ্যন্তরীলণ বিরোধ সামলাতে ছিল ব্যস্ত ছিল।

২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারকে চাপে ফেলার মতো কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। এরমধ্যে কোভিড মহামারী স্বাভাবিক রাজনৈতিক তৎপরতায়ও ছেদ ঘটায়। তবে দীর্ঘদিনের ব্যর্থতা ঝেড়ে পরবর্তী নির্বাচনের এক বছর আগে আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। বছরের শেষ প্রান্তিকের বিভাগীয় সমাবেশগুলো ভরে ওঠে নেতাকর্মীতে।

এরমধ্যে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশ করার সূচি দিয়ে সেখানে সরকার পতনের ঘোষণা দেবে বিএনপি- এমন কথা ডালপালা ছড়ায়। সরকারও তা পাল্টা মোকাবিলার কথা বললে সাধারণের চোখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে ১০ ডিসেম্বর। এ নিয়ে কথার খেলায় এ সমাবেশকে ঘিরে উত্তাপ মাঠে গড়ায়। সমাবেশের স্থান বাছাই নিয়ে চলা নাটকীয়তার মধ্যে বিএনপির কর্মীরা সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশের সঙ্গে; মৃত্যুও হয় একজনের।

পরে বিএনপি অফিসে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে; একে একে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ অন্যদের।

নানা শঙ্কার মধ্যেই অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই গোলাপবাগে সমাবেশ করে বিএনপি। এ সমাবেশ থেকে ১০ দফা দাবিও তুলে ধরা হয় এবং ঘোষণা আসে সংসদে থাকবে না দলটির সাতজন সংসদ সদস্য। উত্তেজনার যে পারদ চড়েছিল ১০ ডিসেম্বর ঘিরে তাতে নেমে যাওয়ায় হাঁফ থেকে মুক্তি মেলে সবার।  

রাজনীতির ডামাডোলের মধ্যে ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে সভাপতি ও ওবায়দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক পুনর্নির্বাচিত করেন দলের কাউন্সিলররা।

এদিকে জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির এক সময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

দুই দলের রাজপথে আন্দোলনের পাল্টাপাল্টি ‘খেলা’ চললেও ঘর গোছাতেই বছর পার হয়েছে জাতীয় পার্টির। এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর দলের কর্তৃত্ব নিয়ে রওশন এরশাদের সঙ্গে দেবর জি এম কাদেরের দ্বন্দ্ব প্রকট ছিল অনেকটা সময়জুড়েই।

Also Read: আওয়ামী লীগে ‘অপরিহার্য’ শেখ হাসিনা দশম বার সভাপতি

Also Read: পরিবর্তনে গেলেন না শেখ হাসিনা, কমিটি অপরিবর্তিতই

Also Read: ঢাকার সমাবেশ থেকে বিএনপি দিল ১০ দফা

Also Read: একসঙ্গে গণভবনে রওশন এরশাদ ও জিএম কাদের

এসবের মধ্যে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশনের অধীনেই ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। সর্বোচ্চ দেড়শ’ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজও শুরু করে ইসি।

এদিকে এ কমিশনকে প্রত্যাখান করে ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি নির্বাচন বর্জন অব্যাহত রাখে।

ইভিএম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ভোটে স্বচ্ছতা আনতে সব ধরনের নির্বাচনে ইভিএম এবং সিটি, পৌর সাধারণ নির্বাচন ও সংসদীয় আসনের উপ নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।

এমন পরিস্থিতিতে ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা ৫ উপ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ায় পুরো আসনের ভোট বন্ধ করে দেয় কমিশন। সেই সঙ্গে তদন্ত কমিটিও করা হয়।

ইসির ইতিহাসে নজিরবিহীন এ সিদ্ধান্তে বেশ প্রতিক্রিয়াও হয়। অবশেষে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ নির্বাচনের পুনঃ ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ৪ জানুয়ারি।

Also Read: সংসদ নির্বাচনে সর্বাধিক ১৫০ আসনে ইভিএম, সিদ্ধান্ত ইসির

Also Read: সংসদ নির্বাচনের পথে ইসির কর্মপরিকল্পনায় ৯ অগ্রাধিকার

Also Read: নতুন সিইসি হাবিবুল আউয়াল: কে তিনি?

Also Read: সিইসির নয়, গাইবান্ধার ভোট বন্ধের সিদ্ধান্ত ইসির: হাবিবুল আউয়াল

Also Read: গোপন কক্ষে ব্যাপক অনিয়ম, মাঝপথে বন্ধ হল গাইবান্ধার ভোটগ্রহণ

বিজ্ঞান পড়াতে গিয়ে শিক্ষক হেনস্তা

ক্লাসে পড়ানোর সময় ধর্ম নিয়ে এক প্রশ্নের সূত্র ধরে ২২ মার্চ মুন্সিগঞ্জের সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিক্ষোভের মুখে আটক করা হয়। বিজ্ঞান নিয়ে ক্লাসে আলোচনা করছিলেন হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল। এক ছাত্রের ধর্ম নিয়ে করা প্রশ্ন মোবাইলে রেকর্ড করে এবং তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ নিয়ে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে স্থানীয়রা। ঘটনার পরম্পরায় গ্রেপ্তার করা হয় তাকে, যা নানামুখী আলোচনার জন্ম দেয়। শিক্ষাবিদ, অধিকারকর্মী, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এর প্রতিবাদে সরব হয়। দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়ার মধ্যে ১০ এপ্রিলে জামিনের পর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

Also Read: শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল গ্রেপ্তার: ঘটনার পূর্বাপর

Also Read: ১৯ দিন পর জামিন পেলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল

আরেক ঘটনায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে হেনস্তার ঘটনা ঘটে ১৭ জুন। কলেজের ছাত্র ও স্থানীয়রা গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় এ শিক্ষককে। পরে গ্রেপ্তার করা হয় স্বপনকে।

দেশব্যাপী আলোড়ন তোলা এ ঘটনায় নিয়ে সমালোচনার মধ্যে হেনস্তা করার পেছনে শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের ‘অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের’ যোগসূত্র পায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

নরসিংদী রেলস্টেশনে ১৮ মে এক তরুণীর পোশাক নিয়ে আপত্তি তুলে হেনস্তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে মামলা হয় ও আদালতে গড়ায়। 

Also Read: শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থার বিচার দাবিতে শাহবাগে সমাবেশ

Also Read: পুলিশের সামনে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা: চলছে প্রতিবাদ

Also Read: নড়াইলে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত: শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল, শিক্ষককে ‘শোকজ’

Also Read: ‘পোশাকে আপত্তি তুলে’ তরুণী লাঞ্ছিত নরসিংদী স্টেশনে

মজুরি নিয়ে চা শ্রমিকদের আন্দোলন

দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৯ অগাস্ট থেকে প্রথমে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেন চা শ্রমিকরা। পরে ১৩ অগাস্ট অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে সিলেট ভ্যালির ২৩টি, হবিগঞ্জের ২৪টি এবং মৌলভীবাজারের ৯২টি বাগানসহ মোট ২৪১টি চা বাগানের শ্রমিকরা অংশ নেন।

টানা ধর্মঘটের মধ্যে ২৭ অগাস্ট গণভবনে চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকের পর নতুন মজুরির ঘোষণা আসে। এরপর শ্রমিকরা নিজ নিজ বাগানে কাজে ফেরেন।

সাবিনাদের সাফ জয়

স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মত দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শিরোপা জেতে বাংলাদেশের মেয়েরা। কাঠমান্ডু থেকে ফেরার পর ছাদখোলা বাসে তাদের বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

নারী ফুটবলারদের এই অর্জনে দেশের নানা প্রান্তে হয়েছে আনন্দ উৎসবের আয়োজন। শিরোপা জয়ের পর বেশ কয়েকজন ফুটবলারের বঞ্চনার জীবন সামনে চলে আসে। 

Also Read: দক্ষিণ এশিয়ার সেরা বাংলাদেশের অদম্য মেয়েরা

Also Read: চ্যাম্পিয়ন মেয়েরা হবে ‘ট্যাবু ভাঙার সাহস’

Also Read: বীর মেয়েদের আনন্দযাত্রায় পথে পথে উৎসব

Also Read: বাংলাদেশের মানুষকে আর্জেন্টিনা কোচের ধন্যবাদ

Also Read: ‘এরা আমাদের মতোই পাগল’

রাঙামাটির মেয়ে ঋতুপর্ণা-রূপনার সাফল্যে কাউখালী উপজেলার একটি অংশে সড়ক আর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারের পাশাপাশি অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও সাফজয়ী মেয়েদের পরিবারের পাশে দাঁড়ায়।

সাফ শিরোপাজয়ী নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; খেলোয়াড়দের প্রত্যেকের হাতে তুলে দেন ৫ লাখ টাকার চেক।

বছরজুড়ের ঘটনাপ্রবাহে আরও ছিল

Also Read: আদালত প্রাঙ্গণে ‘পুলিশকে স্প্রে মেরে’ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি ছিনতাই

Also Read: নিখোঁজ ৪ তরুণসহ সাতজনকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানাল নতুন জঙ্গি দলের নাম

Also Read: নিখোঁজ ‘৫৫ জন’ নতুন জঙ্গি দলে, ৩৮ জনের তালিকা দিল র‌্যাব

Also Read: নতুন জঙ্গি সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক জামায়াত আমির: পুলিশ

Also Read: পাহাড়ে জঙ্গি শিবিরে বিদ্রোহ, পাহাড়ি সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষের খবর দিল পুলিশ

Also Read: নতুন জঙ্গিদের সঙ্গে পুরনোরাও মিলছে?

Also Read: নতুন জঙ্গি দলের ‘পাহাড়ি যোগ’ পেয়েছে র‌্যাব

Also Read: হুমায়ুন আজাদ হত্যা: ৪ জঙ্গির ফাঁসির রায়

Also Read: মিয়ানমারের আকাশে গোলাগুলি, দুটি গোলা পড়ল বাংলাদেশের ভেতরে

Also Read: মিয়ানমারের গোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, হতাহতের খবর

Also Read: মা আত্মগোপনই করেছিলেন, এখন বলছেন মরিয়ম

Also Read: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর থেকে বাদ পড়লেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Also Read: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বললেন, ভারতে গিয়ে অমন কথা বলিনি

Also Read: এখন থেকে ‘সাবধান’ হবেন মোমেন

Also Read: মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারের মামলায় তার বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র

Also Read: পিবিআই প্রধানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ‘হেফাজতে নির্যাতনের’ অভিযোগ বাবুল আক্তারের

Also Read: রেলের অব্যবস্থাপনা: সেই রনি আবার নামছেন আন্দোলনে

Also Read: রেলে অব্যবস্থাপনা: বৈঠকের পর কর্মসূচি স্থগিত করলেন রনি

Also Read: টিকিটবিহীন যাত্রীর সঙ্গে আত্মীয়তা স্বীকার করলেন মন্ত্রী, টিটিইর বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার

Also Read: চবিতে যৌন নিপীড়ন: দুই ছাত্রকে চিরতরে বহিষ্কার

Also Read: উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনে শাবি শিক্ষার্থীরা

Also Read: নিউ মার্কেট দোকানকর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

Also Read: নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ: মোরসালিনকেও বাঁচানো গেল না

Also Read: পি কে হালদার ভারতে গ্রেপ্তার

Also Read: পি কে হালদারের জের টানছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো

Also Read: পাচার অর্থ ফেরালে দায়মুক্তি থাকছে, স্থাবর-অস্থাবরে বাদ

Also Read: ইসলামী ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকে পর্যবেক্ষক বসাল বাংলাদেশ ব্যাংক

Also Read: তিন ব্যাংকের ‘অস্বাভাবিক ঋণ’: অনুসন্ধানের নির্দেশ হাই কোর্টের

Also Read: হলমার্ক কেলেঙ্কারি: সোনালী ব্যাংকের হুমায়ুন কবিরের আরেক মামলায় সাজা

Also Read: প্যান্ডোরা পেপার্স: বাংলাদেশি ঠিকানার আরও ২ কোম্পানি, ৩ নাম

Also Read: নিপুণ বললেন, সত্যের জয়; জায়েদ খান বললেন, মামলা করব

Also Read: সম্পাদকের চেয়ারে ফের বসে যে ইচ্ছা জানালেন নিপুণ

Also Read: শাকিব-বুবলী একই দিনে ফেইসবুকে, তবে এক সঙ্গে নয়

Also Read: বিয়ের পর বুবলীকে নিয়ে শাকিব গিয়েছিলেন তাজমহলে

Also Read: বেটিং সাইটের সঙ্গে সাকিবের সংযোগ খতিয়ে দেখছে বিসিবি

Also Read: শেয়ার কারসাজিতে সাকিবের নাম, যা বলছে বিএসইসি

Also Read: রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জিতে সিরিজ বাংলাদেশের

Also Read: লিটনের অসাধারণ ইনিংসের পরও পারল না বাংলাদেশ