নিপুণ বললেন, সত্যের জয়; জায়েদ খান বললেন, মামলা করব

বাংলা‌দেশ চল‌চ্চিত্র শিল্পী স‌মি‌তির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তে সন্তোষ জানিয়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। অন্যদিকে ক্ষোভ জানিয়ে মামলার হুমকি দিয়েছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান।

গ্লিটজ প্রতি‌বেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2022, 02:49 PM
Updated : 5 Feb 2022, 02:49 PM

গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হলেও তার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছিলেন পরাজিত নিপুণ।

তার অভিযোগ আমলে নিয়ে শনিবার এই নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত জানান।

জায়েদের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার প্রমাণ পাওয়ায় তার প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা দেন তিনি।

সোহান বলেন, জা‌য়ে‌দের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় সাধারণ সম্পাদক পদে তার নিকটতম প্রার্থী নিপুণ‌কে বিনা প্রতিদ্ব‌ন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হল।

শনিবার এফডিসিতে নিপুণ আক্তার।

এই ঘোষণার পর সেখানে উপস্থিত নিপুণ সাংবা‌দিক‌দের বলেন, “আমার কাছে অনেক ডকুমেন্টস ছিল। জানুয়ারির ২৮ তারিখ থেকে আমি নির্বাচন কমিশনকে সব বিষয় জানিয়েছি, কিন্তু আমাকে হেল্প করে নাই। এবার সত্যের জয় হয়েছে। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।”

গত ২৮ জানুয়ারি ভোটের পর নিপুণ অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুললেও জায়েদ তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। শনিবার আপিল বোর্ডের সামনেও হাজির হননি তিনি।

আ‌পিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত না মানার ঘোষণা দিয়ে জা‌য়েদ সাংবা‌দিক‌দের ব‌লেন, “এটা আইন বহির্ভূত, পৃথিবীতে এটা নজিরবিহীন ঘটনা, ভো‌টের ফলাফল ঘোষণার পর মৃত আপিল বোর্ড রায় ঘোষণা করে!

“আমি আইনি নোটিস দেওয়ার পরও তারা যা করেছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।”

শিল্পী সমিতির গত দুই বারের সম্পাদক জায়েদ আগেও বলেছিলেন, “২৯ জানুয়ারির পর আপিল বোর্ড বিলুপ্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।“

বিষয়টি নিয়ে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানসহ পাঁচজনের নামে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

জায়েদ খান। ফাইল ছবি

আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ফলে এখন শিল্পী সমিতিতে শীর্ষ পদে দুজনই একই প্যানেলের হলেন।

নিপুণের এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে গত দুই বার জয়ী মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের নেতৃত্বে প্যানেল হয়েছিল।

গত ২৮ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের পরদিন ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চনকে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত ফলে দেখা যায়, জায়েদ খান হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ১৩ ভোটে হারিয়েছেন নিপুণকে।

নির্বাচনের সময়ই টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ করেছিলেন নিপুণ। তাতে সাড়া না পেয়ে তিনি আপিল করেন।

তার আপিলে ভোট পুনর্গণনা হলেও তাতে ফল একই থাকলে নিপুণ সংবাদ সম্মেলন করে সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃভোটের দাবি তোলেন।

সেখানে তিনি অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুলে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দেন।

পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন তিনি।

তার আবেদনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেছিলেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহান।

মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে আপিল বোর্ডকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলে শনিবার ‍দুই পক্ষকে নিয়ে বসার উদ্যোগ নেন সোহান। তাতে জায়েদ না গেলেও সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় আপিল বোর্ড।