সংসদ নির্বাচনের পথে ইসির কর্মপরিকল্পনায় ৯ অগ্রাধিকার

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একগুচ্ছ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2022, 07:34 PM
Updated : 14 July 2022, 07:34 PM

ইভিএম নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনার মধ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, আইনি সংস্কার, সীমানা পুনর্নির্ধারণসহ ৯টি কাজকে অগ্রাধিকার হিসেবে রাখা হয়েছে এ কর্মপরিকল্পনায়।

খসড়া পরিকল্পনা ধরে কাজ গোছালেও নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন নিয়ে শিগগির প্রতিটি কাজের ‘সময় কাঠামো’ চূড়ান্ত করবে ইসি সচিবালয়।

ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়া পাঁচ সদস্যের কমিশন নাগরিক সমাজের নানা শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধি, গণমাধ্যম সম্পাদক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, পর্যবেক্ষকের মতামত ইতোমধ্যে নিয়েছে।

ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। আবার চলতি মাসে দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপ শুরু হবে।

এরই মধ্যে প্রস্তুতিমূলক কাজের খসড়া পরিকল্পনাও করছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।

এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিশন প্রস্তুতিমূলক কাজ ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছে। এরমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নতুন দলের নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি, সবার সঙ্গে আলোচনা করে মতামত নেওয়া, ইভিএমের বিষয়ে দলের মতামত, আইনি সংস্কারের পর্যালোচনার মতো বিষয়গুলো চলমান।

তিনি বলেন, “ভোটকে সামনে রেখে যেসব কাজ রয়েছে, এ লক্ষ্যে আমরা খসড়া একটি রোডম্যাপ করেছি। এ নিয়ে কমিশন আরও পর্যালোচনা করে কোন সময়ে কোন কাজ শেষ করতে হবে, তা চূড়ান্ত করবে। দলগুলোর সঙ্গেও সংলাপ রয়েছে।

“রোডম্যাপ গত সংসদ নির্বাচনের সময়ও করেছিল তৎকালীন কমিশন। এবার আমাদের কাজও চলমান রয়েছে, কমিশন সব বিবেচনা করে এবারের খসড়াটি চূড়ান্ত করবে।”

আগামী বছর নভেম্বর থেকে পরের বছর জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়রি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সেক্ষেত্রে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, আগামী বছর নভেম্বরে-ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণার সম্ভাব্য সময় ধরে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব ধরনের কাজ শেষ করার রূপরেখা থাকবে এ কর্মপরিকল্পনায়।

অগ্রাধিকার ৯ বিষয়ে

>> আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার

>> নির্বাচন প্রক্রিয়া সময়োপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ

>> সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ

>> নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ

>> বিধি-বিধান অনুসরণ করে ভোটকেন্দ্র স্থাপন

>> নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও নিবন্ধিত দলের নিরীক্ষা

>> সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম

>> নির্বাচনে অধিকতর প্রযুক্তির ব্যবহার

>> পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন ও নবায়ন কার্যক্রম

চলতি বছরের মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন, সংলাপ, আইনি সংস্কার, প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়গুলো এবং আগামী বছর শুরুতে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত, সীমানা পুনর্নির্ধারণসহ বাকি কাজগুলো শেষ করার পরিকল্পনা থাকছে।

ধাপে ধাপে সবগুলো কাজ শেষ করে নির্বাচনের বাজেট, ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা, নির্বাচনী সামগ্রী প্রস্তুত, দেশি-বিদেশি সংস্থা ও দলের সঙ্গে আলোচনা এবং প্রচার কাজের বিষয়েও রোডম্যাপে থাকবে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা।

বর্তমান ইসির অন্য চার সদস্য হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা এমিলি, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান।

নতুন ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৫ জুন ইভিএমে সিটি, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউপির ভোট হয়েছে।

এসব ভোটে আওয়ামী লীগ স্বস্তি প্রকাশ করলেও নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। এছাড়া ইসির সংলাপে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ একটি বড় অংশ এলেও সাড়া দেয়নি বিএনপিসহ অনেকে। বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণাও দিয়ে রেখেছে।

তবে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার বিষয়ে বরাবরই আশ্বাস দিয়ে আসছেন সিইসি হাবিবুল আউয়াল।

সিইসির ভাষ্য, কমিশন চায় নির্বাচন সুন্দর হোক, গ্রহণযোগ্য হোক। সরকারও সে সহায়তা করবে বলে তিনি আশাবাদী।

এই সম্পর্কিত খবর