দেড় যুগে এমন বন্যা দেখেনি সিলেটের মানুষ
মঞ্জুর আহমেদ, সিলেট প্রতিনিধি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 20 May 2022 01:46 PM BdST Updated: 20 May 2022 07:10 PM BdST
-
ছবি: এখলাছ উদ্দিন
-
ছবি: এখলাছ উদ্দিন
-
ছবি: এখলাছ উদ্দিন
-
ছবি: এখলাছ উদ্দিন
-
ছবি: এখলাছ উদ্দিন
-
ছবি: এখলাছ উদ্দিন
-
-
-
-
উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে বন্যার স্রোতে ভেসে গেছে ঘর, আসবাবপত্র, গবাদিপশু; পানির সঙ্গে বাড়ছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। সিলেটবাসী এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি বহু দিন।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীরগাঁও গ্রামের ষাটোর্ধ্ব রমজান আলীর মনে পড়ে, এর আগে ২০০৪ সালে তাদের এলাকায় এমন বন্যা হয়েছিল। এবার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় কি না, সেই শঙ্কায় আছেন তিনি।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সিলেটের ১৩টি উপজেলার ৮৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ৩২৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
কিন্তু সেখানেও বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকটের কথা বলছেন আশ্রয়গ্রহণকারীরা। পানিবন্দি মানুষগুলো ‘চোখে অন্ধকার’ দেখছেন বলে ভাষ্য রমজান আলীর।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পুর্ব রংপুর বস্তির বাসিন্দা রাশিদা বেগমের ঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। চার সন্তান নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভাসুরের ঘরে। কিন্তু চার দিকে পানিঘেরা কাঁচা ঘর কখন ভেঙে যায়, এ শঙ্কায় তার ঘুম নেই। রয়েছে সাপের উপদ্রবও।
রাশিদা বলেন, “ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারি না। ঘরে সাপ চলে আসে। ঘরে খাবারও নেই। চার সন্তান নিয়ে বিপদে পড়ে গেছি।”
কোম্পানীগঞ্জের কাঁঠালবাড়ি সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় থানাবাজার আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন বৃদ্ধা রুমিনা আক্তার।

“বন্যায় সব কেড়ে নিয়েছে। এখন আশ্রয়কেন্দ্রে এসেও পেটের ক্ষিধা মিটছে না। সরকারি ত্রাণ সহায়তা অত পাচ্ছি না। গরীবের কোনো উপায় নেই। এখন সামনের দিনগুলোতে কীভাবে খেয়ে বাঁচব তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা হচ্ছে।”
হঠাৎ আসা পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো বেশি বন্যা কবলিত হয়েছে। সীমান্ত উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কানাইঘাটের বাসিন্দারা দুর্বিষহ দিন পার করছেন। সড়কে বন্যার পানি থাকায় মানুষের যাতায়াত বন্ধ। বন্ধ রয়েছে স্কুলগুলো।
কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নের আব্দুল করিম বলেন, মহামারীর কারণে প্রায় দুই বছর স্কুল বন্ধ ছিল। এখন হঠাৎ বন্যার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের সহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা জানান, এ পর্যন্ত সিলেট জেলায় সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ৩৪টি বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে বিভিন্ন এলাকায়।
তাতে সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পর এবার বিয়ানীবাজার এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলারও বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
“পানি উঠেছে কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলা কমপ্লেক্সে। এসব উপজেলার অনেক বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রেও পানি ওঠায় আশ্রিতরা বিপাকে পড়েছেন,”বলেন নিলয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, সুরমা-কুশিয়ারা ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও হবিগঞ্জ জেলার নদীর পানির সমতল কিছু স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
এই সময়ে সিলেট জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে, তবে সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু স্থানে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে।
বন্যাকবলিত মানুষের বড় সংকট খাবার পানি। টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি পাওয়ার উপায় নেই।
জৈন্তাপুর উপজেলার ঘাটের ছটি গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, “টিউবওয়েলও পানির নিচে। বিদ্যুৎ নাই। খাবার পানিও নেই। বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়ে হাওরের পানিই খাচ্ছি, জীবনতো বাঁচাতে হবে।”
উপজেলাগুলোর মত সিলেট মহানগরেও খারাপ দিকে মোড় নিয়েছে বন্যা। বিদ্যুৎ না থাকায় পানির সংকটে পড়েছেন নগরবাসী। নিচু এলাকায় ঘরের ভেতর হাঁটু পানির কারণে রান্না করতে পারছেন না।
নগরীর তালতলা এলাকার বাসিন্দা আফজাল করিম জানান, গত তিন ধরে তার বাসায় বন্যার পানি। জরুরি কাগজপত্রসহ বিভিন্ন জিনিস নষ্ট হয়েছে।
“বাসায় পানি ওঠায় পরিবারের সদস্যদের আত্মীয়র বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। পাহারা দেওয়ার জন্য কাছের একটা আবাসিক হোটেলে উঠেছি আমি।”

তিনি বলেন, “ঘরে কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরপানি। এর উপর বিদ্যুৎ নেই তিন দিন ধরে। জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।”
নগরীর শেখঘাট বস্তির বাসিন্দা অনামিকা দাশ বলেন, “পুরো ঘরে জল। মাটির চুলা ছিল সেটাও তলিয়ে গেছে, রান্না করতে পারছি না। খাবার পানিও নেই। আমার এক আত্মীয় কিছু খাবার রান্না করে নিয়ে এসেছিলেন, সেটাই কাল খেয়েছি। আজ রাতে কী করব জানি না।”
অনামিকার মত একই অবস্থা বন্যাকবলিত নগরীর বিভিন্ন এলাকার বস্তির মানুষদের। নগরীর যতরপুর এলাকার বাসিন্দা আজমল হোসেন জানান, বাসার সামনে পানির স্রোত বইছে। বাসা দোতলায় হওয়াতে রক্ষা পেয়েছেন।
“কিন্তু ঘর থেকে বের হলেই হাঁটুপানি। প্রতিনিয়ত পানি বাড়ছে। এত দ্রুত পানি বাড়তে আগে দেখিনি। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।”
সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহসান জানান, জেলার ১৩টি উপজেলার ৮৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ৩২৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বর্তমানে ৯৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৭ হাজার ৩৪৯ জন আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।
আশ্রিতদের শুকনো খাবার সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সিলেট মহানগর ও উপজেলাগুলোতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য ১৩ লাখ টাকা, ২৩৪ মেট্টিকটন চাল, ৩ হাজার ৯৯ প্যাকেট শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।
-
বানভাসি শাহিদা, আয়েশাদের সড়কের দিনরাত্রি
-
নড়াইলে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ
-
কুমিল্লায় পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ
-
কুমিল্লায় চেয়ারম্যানের সামনে নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ
-
আশুলিয়ায় শিক্ষক খুন: জিতু বহিষ্কার, স্কুল খুলছে শনিবার
-
জামালপুরে ‘বজ্রপাতে’ চাচাত ২ ভাই নিহত
-
নড়াইলে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত: আওয়ামী লীগ নেতাকে অব্যাহতি
-
ময়মনসিংহে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
-
বানেভাসা সুনামগঞ্জ: সব হারিয়ে শাহিদা, আয়েশাদের সড়কের দিনরাত্রি
-
কুমিল্লায় পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ
-
কুমিল্লায় চেয়ারম্যানের সামনে নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ
-
জামালপুরে ‘বজ্রপাতে’ চাচাত ২ ভাই নিহত
-
ময়মনসিংহে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
-
নড়াইলে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ
- যা হচ্ছে, তার জন্য নূপুর শর্মা দায়ী: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
- বাঘাইড় বিক্রি করায় সুপার শপকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
- অধ্যাপক রতন সিদ্দিকীর বাসায় হামলা
- পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী বাসের ভাড়া বাড়ল
- রাষ্ট্রপতির ছেলের গাড়িচালককে মারধর: জবি ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত
- নাঈমের ৫ উইকেট, সৌম্যর ৮১
- হলি আর্টিজানের সেই রাত যেভাবে বদলে দেয় বাংলাদেশকে
- সাদা বলের নেতৃত্বে ফিরলেন রোহিত, ওয়ানডে দলে জাদেজা-হার্দিক
- অফসাইডের জটিলতা দূর করতে কাতার বিশ্বকাপে নতুন প্রযুক্তি
- বড় ভাইয়ের মৃত্যু: প্যারোলে মুক্ত হাজী সেলিম