মামলার তদন্তে খুনের কোনো সূত্র না মেলায় হতাশ এই বুয়েটছাত্রের বাবা; আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার তরুণী নির্দোষ হলে তা প্রমাণেও তদন্তের দ্রুত শেষ চান তিনি।
Published : 13 Dec 2022, 12:05 AM
বুয়েটছাত্র ফারদিন নূর পরশের লাশ উদ্ধারের পর তদন্তে নেমে ১০ দিনের মধ্যে মৃত্যুর আগে তার গতিবিধির তথ্য জানানোর পাশাপাশি মামলার একমাত্র আসামিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তভার পাওয়া গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে ছায়া তদন্তে নামা র্যাবেরও বেশ তৎপরতা দেখা গিয়েছিল।
কিন্তু তারপর তিন সপ্তাহ গেলেও তদন্তের আর কোনো অগ্রগতির খবর মিলছে না; যদিও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের কাজ চলছে।
ফারদিন নিখোঁজ হওয়ার রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে একটি লেগুনায় উঠেছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়ার কথা ১৭ নভেম্বর জানিয়েছিল ডিবি। এরপর তার অবস্থান কোথায় ছিল, কোথায় এই তরুণ খুন হলেন, সে বিষয়ে ডিবি আর কোনো তথ্য জানাতে পারেননি।
অন্যদিকে র্যাবের বরাতে গণমাধ্যমে খবর এসেছে, সেই রাতে ডেমরা সংলগ্ন চনপাড়ায় মাদক কারবারিদের হাতে খুন হয়েছিলেন ফারদিন। তবে তা নিয়ে সন্দিহান ডিবি কর্মকর্তারা। তদন্ত নিয়ে সংস্থা দুটির বিপরীত বক্তব্য নিয়েও রয়েছে আলোচনা।
ফারদিন চনপাড়ায় কেন গিয়েছিলেন, তিনি কোথায় খুন হয়েছিলেন, কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল, তার কোনো কূল-কিনারা এক মাসেও করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
সার্বিক অবস্থায় তদন্তের গতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফারদিনের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা, হতাশ বুয়েটে ফারদিনের সহপাঠিরাও।
এদিকে মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হয়ে ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরা এখনও রয়েছেন কারাগারে; যদিও এখনও তার সঙ্গে খুনের কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি পুলিশ।
বুশরাকে আসামি করে মামলা করলেও এখন ফারদিনের বাবা নুরউদ্দিন রানাও চান, নির্দোষ হলে এই তরুণীকে ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। আর সেজন্যই তদন্তটি দ্রুত শেষ করা দরকার।
সোমবার এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল আদালতে। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা তা দিতে না পারায় এই সময় এক মাস পিছিয়ে দিয়েছেন বিচারক।
নিখোঁজ বুয়েট ছাত্রের মরদেহ মিলল শীতলক্ষ্যায়
বুয়েটছাত্র ফারদিনের লাশ উদ্ধারের পর অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলছে না
হিসাব মেলাতে পারছেন না ফারদিনের সহপাঠী-স্বজনরা
ফারদিন হত্যা: চনপাড়ার মাদক কারবারিদের খোঁজে পুলিশ
সেই রাতে ৪ স্থানে ঘোরেন ফারদিন, যাত্রাবাড়ী থেকে ওঠেন লেগুনায়: ডিবি
বুয়েটের পুরকৌশলের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফারদিন (২৪) থাকতেন পরিবারের সঙ্গে ঢাকার ডেমরার কোনাপাড়ায়। পরিবারে তিন ছেলের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। বিতার্কিক ফারদিনের এই বছরই স্পেনের এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল।
গত ৪ নভেম্বর দুপুরে বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন ফারদিন; বলে গিয়েছিলেন, পরদিন তার পরীক্ষা রয়েছে বলে রাতে বুয়েটের হলেই থাকবেন। পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফিরবেন।
কিন্তু পরদিন পরীক্ষায় তার অনুপস্থিত থাকার খবর জেনে খোঁজাখুজি করে ছেলেকে না পেয়ে থানায় জিডি করেন নূরউদ্দিন রানা। তিন দিন পর ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে লাশ পাওয়া যায়।
নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসক শেখ ফরহাদ বলেন, নিখোঁজ হওয়ার দিনই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন ফারদিন। তার মাথা ও বুকে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে৷ মৃত্যুর আগে শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ওই ছাত্র৷
ময়নাতদন্তে খুনের চিহ্ন পাওয়ার কথা চিকিৎসক জানানোর পর বিষয়টি তুমুল আলোচনা সৃষ্টি করে। এরপর ফারদিনের বাবা হত্যামামলা করলে তার তদন্তভার দেওয়া হয় ডিবিকে।
ফারদিনের বাবা শুধু বুশরাকে আসামি করেই মামলা করেছিলেন। তার যুক্তি ছিল, সেদিন ফারদিন ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এই তরুণীর সঙ্গেই রাত পর্যন্ত ছিলেন।
এরপর পুলিশ বুশরাকে গ্রেপ্তার করে, আদালতের অনুমতি নিয়ে হেফাজতে রেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করে। এরপর ১৬ নভেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এই তরুণী।
বুশরাকে জিজ্ঞাসাবাদে খুনের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে গত ১৭ নভেম্বর জানিয়েছিলেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।
ফারদিনের মধ্যে সেদিন কোনো অস্বাভাবিকতাও দেখেননি বুশরা। তাকে উদ্ধৃত করে ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেছিলেন, “বুশরার বক্তব্য হচ্ছে, তারা যতক্ষণ একসঙ্গে ছিলেন, ততক্ষণ ফারদিন স্বাভাবিকই ছিলেন। তারা রেস্তোঁরায় খেয়ে নিজ নিজ বিল দিয়েছেন। তাকে রামপুরা নামিয়ে দিয়ে ফারদিন চলে যায়।”
বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্লেষণ করে ফারদিনের যাওয়ার পরের নানা দৃশ্য দেখে ডিবি জানায়, ৪ নভেম্বর রাত ২টায় যাত্রাবাড়ী থেকে তারাবগামী একটি লেগুনায় উঠেছিলেন ফারদিন।
তার মোবাইল ফোনের ট্র্যাক করে যাত্রাবাড়ী যাওয়ার আগে মধ্যরাতে বুড়িগঙ্গা পাড়ে কেরানীগঞ্জে এবং গুলিস্তানে তার অবস্থানও শনাক্ত করে ডিবি।
যাত্রাবাড়ী থেকে ফারদিন ডেমরা পেরিয়ে রূপগঞ্জের তারাব হয়ে কোথায় গেলেন- সেই প্রশ্নের উত্তর ডিবির কাছে না মিললেও র্যাবের এক অভিযান ঘিরে আলোচনায় চলে আসে ডেমরার কাছের রূপগঞ্জের চনপাড়া।
গত ১১ নভেম্বর চনপাড়ায় র্যাবের কথিত এক বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন চনপাড়ার মাদক কারবারের হোতা হিসেবে চিহ্নিত শাহীন মিয়া ওরফে সিটি শাহীন। এই খুনের সঙ্গে ফারদিন খুনের কোনো যোগসূত্র না থাকার কথা র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হলেও এই বাহিনীর নানা সূত্র উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবরে আসে, ৪ নভেম্বর রাত আনুমানিক ২টা ৩৫ মিনিটে ফারদিনের অবস্থান ছিল চনপাড়া বস্তি এলাকায়।
কিন্তু চনপাড়ার বস্তিতে ফারদিনের যাওয়ার খবর আবার নিশ্চিত করতে পারেনি ডিবি। গত ১৭ নভেম্বর ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেছিলেন, ফারদিন সেখানেই মারা গেছেন, তারা তা নিশ্চিত নন।
এদিকে মাদকের আখড়ায় ফারদিনের যাওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান তার বাবা ও বুয়েটে তার সহপাঠিরা।
তবে পরে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া একটি ভিডিওতে ফারদিনকে তারাবমুখী ওই লেগুনা থেকে ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারে নেমে (স্থানটি ফারদিনের বাড়ির কাছে) চনপাড়ামুখী আরেকটি সিএনজি অটোরিকশায় উঠতে দেখা যায়। আর ভিডিওর ওই তরুণ যে ফারদিন, সেটা তার বাবাও নিশ্চিত করেন।
তাহলে ফারদিন কেন সেখানে গেলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও খুঁজে পাননি ডিবি কর্মকর্তারা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যে লেগুনা দিয়ে যাত্রাবাড়ী থেকে গেছে, সেই লেগুনার চালককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। লেগুনার চালক জানিয়েছে যে ফারদিন যাত্রী হিসেবে তার লেগুনায় করে গেছে। তাকে কেউ ধরে নেয়নি।”
এই তদন্তের প্রয়োজনে ঢাকা শহরের অনেক স্থানের সিসি ক্যামেরার তথ্য নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তদন্তের সর্বশেষ হালের বিষয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, “তদন্ত চলছে। আশা করি, অচিরেই ভালো কোনো ফলাফল জানানো সম্ভব হবে।”
কয়েকদিন আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে ফারদিন হত্যার তদন্ত নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তারা কাজ করছেন।
তিনি বলেন, “অগ্রগতি যে নেই তা না। সত্যিকার মোটিভ ও প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করতেই তদন্ত এগিয়ে চলছে।”
সহপাঠি খুনের তদন্তের গতিতে হতাশা প্রকাশ করে সম্প্রতি কর্মসূচি পালন করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। সেখানে ডিবি এবং র্যাবের পরস্পরবিরোধী তথ্যে বিভ্রান্ত হওয়ার কথাও বলেন তারা।
ফারদিন হত্যা: রিমান্ড শেষে জামিন মেলেনি বুশরার
ফারদিন খুন: বুশরা নিরাপরাধ, বলছেন চাচা
ফারদিন হত্যা: তদন্তের ‘দীর্ঘসূত্রতায়’ হতাশা, অশ্রু
তদন্তে ‘মনগড়া’ উপসংহার যেন না হয়: ফারদিনের বাবা
মাস গড়ালেও তদন্তে আশা সঞ্চারের কিছু এখনও পাননি ছেলেহারা নূরউদ্দিন রানা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফারদিনের হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত। যারা করেছে খুবই পরিকল্পনা করেই করেছে। কোন কোন জায়গা দিয়ে নিয়ে গেলে ফুটেজ পাওয়া যাবে না, সেসব ব্যাপারগুলো ছিল। যার কারণে বোধ হয় তাদের (গোয়েন্দা পুলিশ) সময় লাগছে।”
তারপরও কেন হতাশ- তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “বুশরা কখন বাসায় যাচ্ছে, সে ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে আর ফারদিন রামপুরার মতো জায়গা থেকে কখন কোথায় গেল, কোনো ফুটেজ পাওয়া গেল না! তদন্তের মাধ্যমে কোনো কিছু আনতে পারল না তদন্তকারী সংস্থা। এটা খুবই হতাশাজনক।
“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ফারদিন যে জায়গা (রামপুরা) থেকে নিখোঁজ হয়েছে, সে অংশ থেকে এক মাস পরেও কিছু পাননি; কোনো ধরনের ফুটেজ বা জন জিজ্ঞাসা থেকে কিছু পাননি। এটা আসলে হতাশাজনক বিষয়।”
যাত্রাবাড়ীতে লেগুনায় ওঠার ভিডিওতে ফারদিনকেই দেখা গেছে বলে নিশ্চিত করেন নূরউদ্দিন রানা; তবে ছেলের মধ্যে তিনি অস্বাভাবিকতা দেখার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমি ৯০ শতাংশ নিশ্চিত যে ওই ফারদিন ছিল। যদি এটা ফারদিন হয়ও, তবে তার চলাফেরা ও হাঁটা স্বাভাবিক ছিল না। আমার ছেলে যেভাবে হাঁটে, চলাফেরা, এটা তার সঙ্গে যায় না। প্যানিকড হাঁটা, সে রকম একটি ব্যাপার ছিল। এলোমেলো হাঁটা, ভয় তাড়ানোর মতো হাঁটা।”
নূরউদ্দিন রানা বলেন, ফারদিন কেরানীগঞ্জে কখনও গিয়েছে বলে তিনি শোনেননি। আর মাদক তো দূরের কথা সিগারেটও ছোঁয়নি তার ছেলে।
বুশরাকে মামলার আসামি করা নিয়ে ফারদিনের বাবা বলেন, “মনে হয়েছে, ফারদিনের ঘটনায় তার কাছে তথ্য থাকবে। কারণ যে যদি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত নাও হয়, সে তদন্তকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করতে পারবে।
“এছাড়া বুশরার সঙ্গে ঘুরছিল যখন, তখন হোটেলে বসে ফারদিন একটি পোস্ট দিয়েছিল। আমার ব্যক্তিগত মতামত, বুশরার সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। কারণ ফারদিনের পরীক্ষার আগের দিন পাঁচ ঘণ্টা সময় কেন তার সঙ্গে কাটাল বুশরা, কী এমন ব্যাপার ছিল। এই পাঁচ ঘণ্টায় কি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছিল? নাকি বুশরাও আরেকটা ভিকটিম, এমনটিও হতে পারে।”
পরিবারের কোনো শত্রু খুনের কারণ হতে পারে কি না- প্রশ্ন করলে নূরউদ্দিন রানা বলেন, “আমার জীবদ্দশায় কোনো শত্রু তৈরি হয়নি। যা তৈরি হয়েছে বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী।
“ছেলে (ফারদিন) ২৩ বছর ৫ মাস ১০ দিন পর্যন্ত এই পৃথিবীতে ছিল, কোথাও কখনও কারও সঙ্গে বাক-বিতর্কে জড়িয়েছে বা কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে, এমন কিছু নেই।”
তদন্তকারীরা সময় নিলেও আসল ঘটনা বের হোক, সেটাই চান নূরউদ্দিন রানা।
তিনি বলেন, “তদন্তের গতি অনেক স্লো, তবে আস্থা রাখতে চাই এই জন্য যে, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সময় দিতে হবে এবং আমি সময় দিতে চাই। প্রকৃত সঠিক আসামিদের গ্রেপ্তার করুক এবং রহস্য ভেদ করুক।
“তবে কোনোভাবে বিভ্রান্তিকর বা বিভ্রান্তি করে যেন ধামাচাপা দেওয়া না হয়। আমার মনে হয় আমার ছেলের ক্ষেত্রে এমন কিছু আনতে পারবেন না যে ছেলেটা নিজে নিজে সুইসাইডাল কিছু করে ফেলেছে বা কোনো অপরাধে জড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। এরকম কিছু পাওয়া যাবে না।”
“অন্তত এটা চাইব জাস্টিস যদি না দিতে পারেন, প্রকাশ করে দেন পারব না। মনগড়া কোনো গল্প বা তদন্ত যেন না হয় ফারদিনের ক্ষেত্রে,” বলেন তিনি।
বুশরা নির্দোষ হলে সেটাও তদন্তের মাধ্যমে খোলসা করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নূরউদ্দিন রানা বলেন, “মেয়েটা (বুশরা) যাকে আমি সন্দেহের তালিকায় রেখেছি, তাকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসা করা হোক। পাঁচ ঘণ্টা কী কী আলাপ হয়েছিল (ফারদিনের সঙ্গে)? সে (বুশরা) যদি নিরাপরাধ হয়ে থাকে, দ্রুত তাকে মুক্ত করে দেওয়া হোক।
“দুটি জীবন শেষ করার কোনো অধিকার নেই। আমিও অধিকার রাখি না। আমার ছেলে চলে গেছে, আরেকটা মেয়েছে জীবন … তাই দ্রুত তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দেওয়া হোক।”
বুশরার চাচা মাজহারুল ইসলাম কারাবন্দি বুশরার পড়াশোনা অব্যাহত থাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কারগারে থাকার কারণে তৃতীয় সেমিস্টার ড্রপ করতে বাধ্য হয়েছে। এভাবে তো আর পরীক্ষা দেওয়ার উপায় নেই।
তিনি বলেন, ১৫ দিন আগে বুশরার বাবা কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে মেয়ের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন।
বুশরা ‘নির্দোষ’ হলেও চাঞ্চল্যকর মামলার আসামির হিসেবে নাম থাকায় জামিন পাচ্ছেন না বলে মনে করেন তার চাচা।