“আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারকে আবারও সংখ্যালঘু সুরক্ষার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি”, বলেন জয়সওয়াল।
Published : 19 Apr 2025, 11:38 PM
দিনাজপুরের বিরলে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের এক নেতার মৃত্যুকে ‘পদ্ধতিগত হত্যাকাণ্ড’ দাবি করে নয়া দিল্লি এর সঙ্গে হিন্দু সংখ্যালঘু নির্যাতনের যোগসূত্র দেখার কথা বলছে।
শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ’এক্সে’ লিখেছেন, "আমরা বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায়ের ‘অপহরণ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের’ বিষয়টি দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি।
“এ হত্যাকাণ্ড অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর ‘পদ্ধতিগত নির্যাতনের’ একটি নমুনা।”
গত বৃহস্পতিবার বিরল উপজেলায় ভবেশ চন্দ্র রায় (৫২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তিনি বিরল উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, “বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে পিটিআই (প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া) ভবেশের মৃত্যুর খবর দিয়েছে, যেখানে তাকে অপহরণের পর পিটিয়ে হত্যার কথা বলা হয়েছে।”
‘পদ্ধতিগত’ বা ‘সিস্টেমেটিক’ নির্যাতন বলতে সাধারণত জাতি, ধর্ম বা রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে কারও ওপর চালানো নির্যাতনকে বর্ণনা করা হয়।
এক্স পোস্টে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জয়সওয়ালের অভিযোগ, এ ধরনের ঘটনার আগের অপরাধীরা ‘বিনাবিচারে’ ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে পট পরিবর্তনের পর থেকে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের উপর ‘নির্যাতন’ চালানো নিয়ে সোচ্চার ভারত সরকার। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি পাল্টা বিবৃতির ঘটনাও ঘটেছে।
বিরলে মারা যাওয়া ভবেশের ছেলে স্বপন চন্দ্র রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে তার বাবা এলাকার পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে পাশের বাজারে যান।
“এরপর রাত ৮টার দিকে রতন নামের একজন ফোন করে বাবার অসুস্থতার কথা জানান। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
ওই সময় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মর্তুজা মৃত্যুসনদে লেখেন, হাসপাতালে আনার আগেই ভবেশ চন্দ্র মারা যান।
শনিবার সন্ধ্যায় বিরল থানার ওসি আব্দুস ছবুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।”
সুরতহালে ভবেশ চন্দ্রের শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি বলে তুলে ধরেন তিনি।
শনিবার এক্স পোস্টে এ মৃত্যুর কথা তুলে ধরে জয়সওয়াল বলেন, “আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে কোনো বৈষম্য বা অজুহাত ছাড়া হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুর সুরক্ষার দায়িত্ব পালনের বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারকে আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।”