শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, মতিঝিল এজিবি কলোনীর 'গ্র্যান্ড সুলতান রেস্তোরাঁ’ থেকে টিপু, গাড়ির চালক, তিনি ও তাদের একজন ‘সিনিয়র ভাই’ রওনা দেন।
“টিপু সামনে গাড়ির চালকের পাশে বসে। আমি আর সিনিয়র ভাই কালাম পেছনে ছিলাম। মানামা ভবনের সামনে আসার পর সামনে-ডানে-বায়ে রিকশায় যানজটে পড়ে গাড়ি।”
ওই অবস্থায় অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে জানিয়ে মিরাজ বলেন, “হেলমেট পরা এক যুবক এসে টিপু যে পাশে বসেছিল, সে পাশে দাঁড়িয়ে গুলি শুরু করে।
“গাড়ির জানালা বন্ধ ছিল, কিন্তু গুলিতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।… গাড়ির আশপাশে হেঁটে চলা মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে।”
বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির পর হামলাকারী চলে যায় জানিয়ে মিরাজ বলেন, “চালক মুন্না গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়েছিল টিপুকে। তারপর ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয় তাদের।”
প্রায় এক দশক আগে যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কী হত্যা মামলার আসামি ছিলেন টিপু। তবে সেই মামলা থেকে পরে টিপুকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে দাবি করেন মিরাজ।
কে কেন টিপুকে হত্যা করে থাকতে পারে জানতে চাইলে মিরাজ বলেন, “টিপু আর আমি বাল্যবন্ধু। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছি। একসময় বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল টিপু, কিন্তু এখন আস্তে আস্তে রাজনীতি থেকে দূরে। শুধু ব্যবসা নিয়ে ছিল।”
তিনি জানান, টিপুই মতিঝিল এজিবি কলোনীর গ্র্যান্ড সুলতান রেস্তোরাঁর মালিক। পাশাপাশি ঠিকাদারির কাজও করতেন।
প্রতিদিন ওই রেস্তোরাঁ থেকে রাত ১০টার আগে টিপু বাসায় ফিরতেন জানিয়ে তার বন্ধু মিরাজ বলেন, “কেন ওকে এভাবে হত্যা করা হল, কিছুই আমরা অনুমান করতে পারছি না।”
দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি গুলিতে মৃত্যু হয় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফনান প্রীতি নামের এক তরুণী। তিনি বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর মতিঝিল এজিবি কলোনি মাঠে জানাজা শেষে টিপুর মরদেহ ফেনীর ফতেপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন হবে বলে জানান মিরাজ।
তিনি বলেন, টিপুর দুই মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বন্ধুর এমন মৃত্যুতে দীর্ঘশ্বাস ফেলে মিরাজ বলেন, “টিপুর একটা ভালো কাজ ছিল, দুইশ পরিবারকে চাল-ডালসহ নিত্যপণ্য দিয়ে সবসময় সহযোগিতা করত।”