গ্যাস সঙ্কটে গতিহারা পোশাক খাত

পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, গ্যাস সঙ্কটে তাদের উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে; এ অবস্থা চললে সামনে বড় বিপদের মুখে পড়তে হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকনারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2022, 07:01 PM
Updated : 11 Oct 2022, 07:01 PM

এক সময় রাত-দিন সচল থাকলেও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ডাইং অ্যান্ড ক্যালেন্ডারিং মিলসে গত কয়েক মাসে কাজের সময় নেমেছে আট-নয় ঘণ্টায়, পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়ায় সেপ্টেম্বরে উৎপাদন নেমেছে অর্ধেকে; সময়মত পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা হারানোর শঙ্কায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ।

কারখানার মালিক ফজলে শামীম এহসান বলেন, ডাইং কারখানা গ্যাস ছাড়া উৎপাদন সম্ভব না। অথচ গত কয়েক মাস ধরে গ্যাসের চাপ থাকে একেবারেই কম।

“যেখানে ১৫ পিএসআই থাকার কথা, সেখানে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র দেড় থেকে দুই পিএসআই। গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ তিন পিএসআই উঠেছে। তাতে শিপমেন্ট সময়মত দিতে পারছি না।”

গত সেপ্টেম্বরে উৎপাদন ৬০ শতাংশ ব্যাহত হওয়ার হিসাব দিয়ে শামীম বলেন, “বিদেশি ক্রেতাদের সাথে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। তারা আস্থা হারাচ্ছেন আমাদের ওপর।”

নারায়ণগঞ্জের মত শিল্প নগরী গাজীপুরেও গ্যাসচালিত শিল্পের চাকা গতি হারাচ্ছে। গত জুলাইয়ে দেশে গ্যাসের সঙ্কট যখন বেড়ে গেল, সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার প্রত্যাশা ছিল সরকারের।

কিন্তু বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সোমবার নিজেই সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, নভেম্বরের আগে গ্যাস সঙ্কট দূর কমার আশা দেখছেন না তিনি।

এদিকে গ্যাস সঙ্কটে উৎপাদনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়লে কারখানাগুলো শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহ-সভাপতি ফজলে শামীম।

তার ভাষ্য, এমনিতেই ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে অবস্থা খারাপ। তার উপর গ্যাস সঙ্কটের কারণে শিল্প কারখানাগুলোর এ পরিস্থিতি সামনে ‘আরও খারাপ’ অবস্থা তৈরি করতে পারে।

“শিপমেন্ট ঠিকমত দিতে না পারলে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া যাবে না। তাতে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হবে। আগামী মাসেই (নভেম্বর) এমন এক পরিস্থিতির আশঙ্কা করছি।”

বিকেএমইএর হিসাবে, নারায়ণগঞ্জে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮ শতাধিক পোশাক কারখানা রয়েছে। সংগঠনটির তালিকাভুক্ত ডাইং কারখানার সংখ্যাই ১১৩টি। এর বাইরেও জেলায় আরও ডাইং কারখানা রয়েছে। ডাইং কারখানা মূলত গ্যাসনির্ভর। এ ছাড়া কিছু কারখানায় ক্যাপটিভ জেনারেটরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের ব্যবহার করা হয়।

শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে রপ্তানি কমে গেলেও উতরে সম্ভাবনা দেখছিলেন শিল্প কারখানার মালিকরা। তবে গ্যাস সঙ্কটে এখন লোকসানের শঙ্কা করছেন তারা। উৎপাদনে ঘাটতি হলে তা শ্রমিকদের বেতনেও প্রভাব ফেলবে।

গত সপ্তাহে গ্যাস সঙ্কটের কারণে এমবি নিট ফ্যাশন লিমিটেড নামের পোশাক কারখানা চার দিন বন্ধ রাখার কথা জানালেন এর মালিক বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমার কারখানা অন্য কারখানা থেকে ফেব্রিক নিয়ে কাজ করে। যে কারখানা থেকে ফেব্রিকের জোগান আসে, সেখানে গ্যাসের অভাবের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে পর্যাপ্ত ফেব্রিক না পেয়ে আমার কারখানার উৎপাদনও বন্ধ রাখতে হয়েছে।”

গ্যাস সঙ্কট ‘চরমে পৌঁছেছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সারাদিন গ্যাস থাকে না। রাতের বেলা কিছুটা থাকে। নারায়ণগঞ্জের মত গাজীপুরের শ্রীপুর, ভালুকা অঞ্চলেও বিকাল ৫টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। এতে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

“গতমাসে রপ্তানিতে ৯ শতাংশ নেগেটিভ গ্রোথ হয়েছে। অথচ এর আগের মাসেও ২৮ শতাংশ পজেটিভ গ্রোথ ছিল। এইটার অন্যতম কারণ গ্যাসের সঙ্কট। কোভিডের বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া রপ্তানিতে দেশে এই প্রথম এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে।”

হাতেম বলেন, “চাহিদা ১৫ পিএসআই, কিন্তু অনেক সময় সেটা একের নিচেও থাকে। অন্তত চার-পাঁচে গ্যাসের চাপ থাকলেও আমরা মেশিন চালাতে পারি। গ্যাসের চাপ কম থাকায় বহুমুখী সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।”

দেশের পোশাক কারখানাগুলো স্পিনিং, নিটিং, ডাইং ইউনিটে বিভক্ত। এগুলো পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। পোশাকের মৌলিক কাঁচমাল কাপড় বা ফেব্রিক যদি সময়মত দেশের কারখানাগুলোতে না পাওয়া যায়, তাহলে তা আমদানি করতে হয়। আর রিজার্ভ কমায় এবং ডলারের বাজার চড়ে যাওয়া আমদানিও ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে।

নারায়ণগঞ্জে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। এর আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নারায়ণগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় ৬৬ হাজার বৈধ আবাসিক গ্রাহক রয়েছে। তিতাসের গ্যাস সংযোগ রয়েছে ৫৯১ শিল্প কারখানায়। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় গ্রাহক পর্যায়ে সংকট তৈরি হয়েছে।

আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মামুনুর রশীদ বলছেন, প্রতি মাসে ৮০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাসের চাহিদা রয়েছে তার এলাকায়। তবে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ৬৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটারের মত। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

নারায়ণগঞ্জে আগে থেকেই গ্যাস সংকট রয়েছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, “এখন আরও বেড়েছে। আমরা এ ব্যাপারে কাজ করছি। কিন্তু মূল ব্যাপার হচ্ছে সিস্টেম থেকে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস পাচ্ছি না। তার ওপর বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে পাওয়ার প্ল্যান্টে বেশি গ্যাস সরবরাহ করতে হচ্ছে। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে পর্যাপ্ত গ্যাস দিতে পারছি না।”

আসছে শীতে এই সঙ্কট কমার আশা প্রকাশ মামুনুর রশীদ বলেন, “শীতের সময় বিদ্যুতের ব্যবহার কম হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোতেও গ্যাসের সাপ্লাই কমানো যাবে। তখন গ্যাস সরবরাহ গ্রাহক পর্যায়ে বাড়ানো যাবে।”

উৎপাদন নেমেছে ‘অর্ধেকে’

পোশাক রপ্তানিকারকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিজিএমইএ এর সভাপতি মো. ফারুক হাসান বলছেন, শুধু নারায়ণগঞ্জ বা গাজীপুরে নয়, গ্যাসের এই সঙ্কট দেশের প্রায় সব এলাকাতেই উদ্যোক্তাদের ভোগাচ্ছে।

“এ কারণে পোশাক উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ক্রেতাদের কাছে সময়মত ও চাহিদামত পণ্য সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এতে তারা অন্য দেশ থেকে চড়া দামেও পোশাক কিনছে। তিন মাস ধরে আমাদের অর্ডার কমে গেছে।”

গাজীপুরের জায়ান টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক বলেন, “পোশাক কারখানায় ফেব্রিক্স প্রক্রিয়াজাত করতে গ্যাসের মাধ্যমে স্টিম তৈরি করে ব্যবহার করা হয়। প্রয়োজনীয় গ্যাস না থাকায় ফেব্রিক্স উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।”

গ্যাসের বিকল্প হিসাবে ডিজেল ব্যবহার করার কথা জানান গাজীপুরের লক্ষ্মীপুরা এলাকার স্প্যারো এপারেলস কারখানার জিএম (এডমিন) মো. ফজলুল হক।

তিনি বলেন, ডিজেল ব্যবহারে উৎপাদন খরচ কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। আগে যখন গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক ছিল, তখন যে উৎপাদন খরচ ১০ লাখ টাকা ছিল, বর্তমানে সেখানে খরচ হয় ৪০ লাখ টাকা।

“এছাড়া গ্যাস সঙ্কটের কারণে উৎপাদনও অর্ধেকে নেমে এসেছে। সময়মতো শ্রমিক-স্টাফদের বেতন দিতে পারি না, সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না।”

গাজীপুরের ইকো গার্মেন্টস ও ফ্রন্টিনা এপারেলসর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মোর্শেদী জানান, গ্যাস সঙ্কটে গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানাগুলোতে উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষ করে টেক্সটাইল কারখানাগুলোতে কন্টিনিউ গ্যাস সরবরাহ দরকার হয়।

“তা না হলে উৎপাদিত পণ্যের মান নষ্ট হয় এবং কারখানা কর্তৃপক্ষ বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ অবস্থায় পোশাক খাতের টিকে থাকাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।”

গত অর্থবছর বাংলাদেশের পাঁচ হাজার ২০৮ কোটি ২৬ লাখ ডলার রপ্তারি আয়ের প্রায় ৮২ শতাংশের যোগান দিয়েছে পোশাক খাত। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেও রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির খবর আশা জাগাচ্ছিল।

এখন উৎপাদন কমে গেলে তার ধাক্কা অর্থনীতিতে কতটা লাগবে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তা স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা।    

আয় কমছে, ছাঁটাইও হচ্ছে

গ্যাস সঙ্কট ও কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় শ্রমিকদের আয় কমে যাচ্ছে এবং ছাঁটাইও করা হচ্ছে বলে জানান বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের নিট সেকশনে দুই ধরনের শ্রমিক আছে। কিছু শ্রমিক মজুরি পান কাজ অনুযায়ী, আবার কিছু শ্রমিক নিয়মিত বেতনে কাজ করেন।

“প্রোডাকশন কম হওয়ায় বেতন কম হচ্ছে। অন্যদিকে যারা স্যালারি বেইজড শ্রমিক তাদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। কারণ কারখানায় কাজ হচ্ছে না।

“শ্রমিকের বেতন দেবে কোথা থেকে? তাই ছাঁটাই করছেন মালিকরা। আমার নিজের কারখানার শতাধিক শ্রমিক ছাঁটাই করতে হয়েছে। ৩৪টা লাইনের মধ্যে ১৮টা লাইন চলছে। প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ চলছে না।”

সহসা এই সঙ্কটের সমাধান দেখছেন না জানিয়ে হাতেম বলেন, এভাবে চললে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। এর একমাত্র সমাধান নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা।

“এ ব্যাপারে জ্বালানি উপদেষ্টা, মন্ত্রী, সচিব, তিতাসের চেয়ারম্যান, এমডির সাথে একাধিকবার আমরা বসেছি। কিন্তু কোনো আশার বাণী আমরা পাইনি।”

ঘাটতি কতটা?

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার হিসাবে, চার মাস আগে গত ১০ জুন দেশে দৈনিক ৩ হাজার ৭৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের সক্ষমতার বিপরীতে উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ১১৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন ঘনফুট।

সেসময় এলএনজি আকারে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আসা গ্যাসের জোগান ছিল দৈনিক ৭৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট আর দেশীয় গ্যাসকূপগুলো থেকে আসত বাকি ২ হাজার ৩৬২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ঘনফুট।

১০ অক্টোবরে এসে দেশে মোট গ্যাস সরবরাহ করা গেছে ২ হাজার ৬৭১ দশমিক ৭ মিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ চার মাস আগের সময়ের তুলনায় সরবরাহ কমেছে ১৪ শতাংশের মত। 

দেশীয় গ্যাসকূপ থেকে ১০ অক্টোবর উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ২৯১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস, এলএনজি থেকে এসেছে ৩৮০ দশমিক ৬ মিলিয়ন ঘনফুট।

অর্থাৎ, এই চার মসে দেশীয় কূপ থেকে সরবরাহ যেখানে কমেছে ৩ শতাংশ, এলএনজির পরিমাণ কমে হয়েছে অর্ধেক। 

ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা তিতাসের সরবরাহও কমছে। দৈনিক ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে ১০ অক্টোবর তিতাস ১ হাজার ৩৭৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে পেরেছে। চার মাস আগে ১০ জুন সরবরাহ ছিল ১ হাজার ৭২০ দশমিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

কী বলছে বিদ্যুত-জ্বালানি বিভাগ?

অক্টোবর আগে গ্যাস আমদানি করে চাহিদা পূরণ করতে চাইলেও তা হয়নি বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

সোমবার তিনি বলেন, “এটা সাময়িক সমস্যা হিসাবে আমরা ভেবেছিলাম, কিন্তু সেটা আর সাময়িক হচ্ছে না। বিশ্ব পরিস্থিতি সবকিছুকে অন্যরকম করে দিচ্ছে।”

গ্যাস সংকটে আরও এক থেকে দুই মাস ‘কষ্ট’ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “এই মাসটা (অক্টোবর) কষ্ট করতেই হবে। সামনের মাসে আরেকটু ভালো করার চেষ্টা আমরা করছি। আমাদের টার্গেট হচ্ছে, মিল কারখানায় গ্যাসের চাহিদা আগে পূরণ করতে চাচ্ছি।

“বিশেষ করে রপ্তানিমুখী ইন্ডাস্ট্রিকে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। অন্তত গত মাসের ক্রয়াদেশগুলো যেন তারা পূরণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। সার কারখানাকে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। সে কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। সবগুলো বিষয় একসাথে এসে যোগ হয়েছে।”

গাস সঙ্কটের কারণেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, “গ্যাস আনতে না পারায় নভেম্বরের আগে লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতির আশা নেই। আমরা দিনের বেলা কিছু পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ রাখছি।

“আবার দিনে যেগুলো চালাচ্ছি, সেগুলো রাতে বন্ধ রাখছি। এজন্য লোডশেডিংয়ের জায়গাটা একটু বড় হয়ে গেছে।”