কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী একটি খাল থেকে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মাথায় জলপাই রংয়ের হেলমেট আর খাকি পোশাক পরা লাশটি মিয়ানমার থেকে ভেসে এসেছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
রোববার দুপুরে উপজেলার বালুখালী কাস্টমস্ এলাকায় মরদেহটির দেখা মেলে বলে উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন জানান।
মিয়ানমারে দেশটির সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এর মধ্যে রাখাইন রাজ্যের সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি বিজিপি ক্যাম্প আরাকান আর্মি দখল করে নিয়েছে এমন খবর আসছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর ৩৩০ সদস্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। এখন তাদের পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
রাখাইনে যুদ্ধের মধ্যে বাংলাদেশের উখিয়ার পালংখালী সীমান্তের জলপাইতলী গ্রামে এসে মর্টার শেল পড়লে নারীসহ দুজন নিহত হন। গোলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া সীমান্তবর্তী গ্রামের মাঠে কাজ করতে গিয়েও মর্টার শেল, গুলি পাচ্ছেন স্থানীয়রা।
এই অবস্থায় বাহিনীর পোশাক পরা মরদেহটি ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ মিয়ানমার থেকে ভেসে আসার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
বালুখালী কাস্টমস্ এলাকায় খাল পাড়ের এক বাসিন্দা বলছিলেন, “মরদেহের মুখে কালি রয়েছে। মাথায় হেলমেট ও গায়ে খাকি পোশাক দেখে মনে হচ্ছে এটি মিয়ানমার বাহিনীর মরদেহ। আরাকান আর্মি বা তাদের কারও হতে পারে।
“এটি খালের পানিতে মিয়ানমারের ঢেঁকিবুনিয়া থেকে ভেসে এসেছে বলে মনে হচ্ছে। মরদেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে।”
উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন বলেন, “ছোট খাল দিয়ে মরদেহ ভেসে আসার খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা ফিরে এলে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
মিয়ানমারে যুদ্ধ: রাখাইনের যে খবর পাচ্ছেন ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা
মিয়ানমারের যুদ্ধ ছেড়ে সশস্ত্র অনুপ্রবেশ, বাড়ি ছাড়ছেন স্থানীয়রা
দুদিন পর নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গোলাগুলি, অটোরিকশায় লাগল গুলি
অভ্যুত্থানের ৩ বছরে প্রথমবার বেকায়দায় মিয়ানমারের জান্তা প্রধান
জান্তা আমলে মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে: ভলকার তুর্ক
মিয়ানমার সীমান্তে লাগাতার গোলাগুলি, নাইক্ষ্যংছড়ির ৫ স্কুলে ‘ছুটি’
আবারও গুলির শব্দ
এদিকে রোববার সকাল থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সীমান্তের নাফ নদীর ওপার থেকে আবারও গোলাগুলির শব্দ ভেসে এসেছে।
উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং সীমান্তে সকালে থেকে গোলাগুলির শব্দে আতঙ্কে রয়েছে বাসিন্দারা।
উনচিপ্রাং এলাকার মাহমুদ সেলিম বলেন, “একদিন পর পর এভাবে গোলাগুলির শব্দে কেঁপে উঠছে সীমান্ত। আমাদের মাঝেও আতঙ্ক রয়েছে।
মিয়ানমারে যুদ্ধ: রাখাইনের যে খবর পাচ্ছেন ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা
জান্তা আমলে মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে: ভলকার তুর্ক
বিদ্রোহী জোটের হামলায় বহু এলাকা হাতছাড়া, কোণঠাসা মিয়ানমার জান্তা
মিয়ানমারে পেরে উঠছে না জান্তা বাহিনী, সমর্থন হারাচ্ছেন মিন অং হ্লাইং
প্রত্যাবাসন: রাখাইন ঘুরে ‘উন্নতি’ দেখেছে আরআরআরসি, রোহিঙ্গারা হতাশ
জরুরি অবস্থার প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা মিয়ানমার জান্তা সরকারের
মিয়ানমারে যুদ্ধ: স্থল সীমান্তের পাশাপাশি নৌপথেও নিরাপত্তা জোরদার
“গভীর রাত কিংবা ভোরে গোলাগুলি ও বৃষ্টির মতো মর্টার শেলের শব্দে পুরো গ্রামের মানুষ চমকে ওঠে। এরকম হতে থাকলে আমাদেরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।”
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, “সকালেও উলুবনিয়া ও উনচিপ্রাং সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন স্থানীয়রা। তাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে সীমান্তে বিজিবি থাকায় তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেন না।”