মিয়ানমারের কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্রোহী বাহিনীর ‘তীব্র হামলার’ মুখে পড়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
Published : 16 Nov 2023, 06:31 PM
মিয়ানমারের জান্তা শাসকরা দেশটির সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের জরুরি পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিয়েছে।
দেশটির বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্রোহী বাহিনীর ‘তীব্র হামলার’ মুখে পড়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার জান্তা সরকার থেকে এমন নির্দেশ আসে বলে জানান দেশটির একজন সরকারি কর্মকর্তা।
দশকের পর দশক ধরে বিভিন্ন আদিবাসী সংখ্যালঘু বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং বিদ্রোহী গেরিলাদের সঙ্গে লড়াই করে আসছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। কিন্তু ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী পুনরায় দেশটির ক্ষমতা দখলের পর জান্তা-বিরোধী অভূতপূর্ব এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে সেনাবাহিনীকে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে।
অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের তিনটি সংখ্যালঘু আদিবাসী বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী একজোট হয়ে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাচ্ছে। এরই মধ্যে সমন্বিত এই জোট কয়েকটি ছোট ছোট শহর ও সেনাপোস্ট দখল করে নিয়েছে।
বিদ্রোহীরা এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন ১০২৭’। প্রাথমিকভাবে তারা চীন সীমান্তের শান রাজ্যে জান্তা নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করেছে এবং সেখানে সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে কয়েকটি শহর ও শতাধিক সেনাপোস্টের দখল কেড়ে নিয়েছে।
ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সাথে মিয়ানমারের চীন রাজ্যের সীমান্ত রয়েছে। গত সোমবার সেখানে সেনাবাহিনী সঙ্গে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত তুমুল লড়াইয়ের পর বিদ্রোহীরা গুরুত্বপূর্ণ দুইটি সেনাপোস্টের দখল নিয়ে নেয়। লড়াইয়ের কারণে চীন রাজ্য থেকে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়ে মিজোরাম রাজ্যে চলে গেছে।
রাজধানী নেপিতো-র প্রশাসনিক কাউন্সিলের সম্পাদক তিন মাউং সেউই বলেন, জান্তা শাসকরা সব সরকারি কর্মী এবং সাবেক সেনাসদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় ইউনিট গঠন করতে বলেছেন। যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে তারা সাড়া দিতে পারেন।
বলেন, “যদি প্রয়োজন পড়ে এ ধরণের ইউনিটকে এলাকার বাইরে গিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং নিরাপত্তা জনিত দুর্যোগে কাজ করতে হতে পারে।
“জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তার জন্য এ পরিকল্পনা করা হয়েছে।”
তবে বিষয়টি নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করার মত কিছু হয়নি জানিয়ে তিনি জোর দিয়ে আরো বলেন, রাজধানীর পরিস্থিতি শান্তই রয়েছে।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেতারা নানা বিদ্রোহী গ্রুপের সঙ্গে জোট বেঁধে জান্তা প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেশটিতে একটি প্যারালাল সরকার গঠন করেছে এবং তারা ‘রোড টু নেপিতো’ নামে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। তাদের লক্ষ্য রাজধানী গিয়ে ক্ষমতার দখল নেওয়া।