প্রেসিডেন্টের এক নির্বাহী আদেশে, পাসপোর্টে শুধুমাত্র জৈবিকভাবে দুটি স্বতন্ত্র লিঙ্গ, নারী ও পুরুষ শনাক্ত করার জন্য সরকারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
Published : 19 Apr 2025, 08:15 PM
ট্রান্সজেন্ডার ও অবাইনারি আমেরিকানদের নিজস্ব লিঙ্গ পরিচয় অনুযায়ী পাসপোর্ট না দেওয়ার ট্রাম্প প্রসাশনের নীতিকে ‘সম্ভবত অসংবিধানিক’ বলে মন্তব্য করেছেন একজন ফেডারেল বিচারক। তবে তিনি সারা দেশে এ নীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের জেলা বিচারক জুলিয়া কোবিক শুক্রবার এই প্রাথমিক রায় দেন।
রয়টার্স লিখেছে, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দিকনির্দেশনায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেওয়া এক নীতির বিরুদ্ধে সাতজন ট্রান্সজেন্ডার ও অবাইনারি মানুষ মামলা করেন। তাদের পক্ষে বিচারক কোবিক এ নীতির প্রয়োগের ওপর প্রাথমিক স্থগিতাদেশ জারি করেন। এর ফলে মামলার সাতজন বাদীর মধ্যে ছয়জনের ওপর এই নীতি প্রয়োগ করা যাবে না।
বিচারক কোবিক জানিয়েছেন, পাসপোর্ট নীতি এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা একটি নির্বাহী আদেশ লিঙ্গের ভিত্তিতে বৈষম্যমূলক পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে এবং এটি ট্রান্সজেন্ডার আমেরিকানদের প্রতি একটি ‘বিদ্বেষ’ থেকে উদ্ভূত, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী দ্বারা সুরক্ষিত সমতা নীতির লঙ্ঘন।
রায়ে কোবিক লিখেছেন, “এই নির্বাহী আদেশ ও পাসপোর্ট নীতি ট্রান্সজেন্ডার আমেরিকানদের প্রতি যুক্তিহীন পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাবের ভিত্তিতে তৈরি, যা আমাদের দেশের সংবিধানপ্রদত্ত সকল নাগরিকের জন্য সমান অধিকার নীতিকে লঙ্ঘন করে।”
যদিও এই ছয় বাদীকে তাদের লিঙ্গ পরিচয় অনুযায়ী পাসপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক, কিন্তু তারা কেন জাতীয়ভাবে এই নীতির ওপর স্থগিতাদেশ পাওয়ার অধিকারী তারা মামলায় তা তুলে ধরেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এবং আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের লি নওলিন-সোল বলেন, “প্রশাসনের ভুল ও অসাংবিধানিক নীতির দ্বারা প্রভাবিত সবার ক্ষেত্রেও যাতে এই আদেশ কার্যকর হয়, তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, যেন আমাদের নিজের মতো করে থাকার স্বাধীনতা থাকে।”
এই বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং হোয়াইট হাউজ সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ক্ষমতায় ফিরে আসার পর দেওয়া ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশে, পাসপোর্টে শুধুমাত্র জৈবিকভাবে দুটি স্বতন্ত্র লিঙ্গ, নারী ও পুরুষ শনাক্ত করার জন্য সরকারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ওই নির্বাহী আদেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরও বলা হয়, এমন পাসপোর্ট ইস্যু করতে হবে, যাতে ‘ধারকের লিঙ্গ সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়’।
এর পরপরই মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের নীতিমালা পরিবর্তন করে এবং জানায়, আবেদনকারীদের জন্মসূত্রে জৈবিক লিঙ্গ চাওয়া হবে; তারা আর নিজেদের লিঙ্গ পরিচয় নিজেরা নির্ধারণ করতে পারবে না এবং শুধু পুরুষ বা নারী এই দুটি লিঙ্গই পাসপোর্টে লেখা যাবে।
এর আগে, ২০২২ সালে বাইডেন প্রশাসন পাসপোর্ট আবেদনকারীদের জন্য একটি নিরপেক্ষ লিঙ্গ চিহ্ন হিসেবে “এক্স” বেছে নেওয়ার সুযোগ চালু করে; পাশাপাশি আবেদনকারীরা “এম” বা “এফ” দিয়ে নিজেদের লিঙ্গ পুরুষ বা নারী হিসেবে নিজে থেকে নির্ধারণ করতে পারত।