এই ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজটি তৈরি করা হয়েছিলে চীনের শিয়ামেন এয়ারলাইন্সের জন্য। সিয়াটলের বোয়িং ফিল্ডে অবতরণের সময়ও এর গায়ে শিয়ামেনের লোগো ও নকশা আঁকা ছিল।
Published : 20 Apr 2025, 01:18 PM
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বাধানো শুল্ক যুদ্ধের বলি হয়ে চীনের একটি এয়ারলাইন্সের জন্য বানানো বোয়িংয়ের একটি জেট যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত গেছে।
রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১১ মিনিটের দিকে জেটটি নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের সিয়াটল উৎপাদন কেন্দ্রে নামে বলে এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এই ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজটি তৈরি করা হয়েছিলে চীনের শিয়ামেন এয়ারলাইন্সের জন্য। সিয়াটলের বোয়িং ফিল্ডে অবতরণের সময়ও এর গায়ে শিয়ামেনের নাম ও লোগো আঁকা ছিল।
ফেরার জন্য পাঁচ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে হয়েছে জেটিটিকে, মাঝে জ্বালানি নিতে বিরতি নিয়েছে গুয়াম ও হাওয়াইয়ে।
চীনা এয়ারলাইন্সকে সরবরাহের আগে ‘ফিনিশিং টাচ দিতে’ বোয়িংয়ের ঝোশান কেন্দ্রে যে ক’টি ৭৩৭ ম্যাক্স জেট অপেক্ষায় ছিল, রোববার নামা বিমানটি তার একটি।
ট্রাম্প চলতি মাসে চীন থেকে আমদানি পণ্যে ন্যূনতম শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করেছেন। এর পাল্টায় চীনও মার্কিন পণ্যে ১২৫% শুল্ক বসিয়েছে।
উড়োজাহাজ খাত সংশ্লিষ্ট পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইবিএ-র হিসাব অনুযায়ী, এখন একটি নতুন ৭৩৭ ম্যাক্স জেটের বাজার মূল্য সাড়ে ৫ কোটি ডলারের মতো; তার সঙ্গে এই পরিমাণ শুল্ক বোয়িং জেট নিতে চাওয়া চীনা এয়ারলাইন্স কোম্পানিকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে পারে।
ক্রেতা না বিক্রেতা, চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে জেটটির ফেরত যাওয়ার সিদ্ধান্ত কারা নিয়েছে তা জানা যায়নি।
এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে রয়টার্স যোগাযোগ করলেও বোয়িং ও শিয়ামেনের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
কয়েক দশক ধরে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া উড়োজাহাজ খাত এখন এই সুবিধার বাইরে চলে যাওয়ায় নতুন বিমান সরবরাহ যে বিরাট ঝক্কির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে চীন থেকে বোয়িংয়ের এই ৭৩৭ ম্যাক্সের যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়াই তার প্রমাণ। ৭৩৭ ম্যাক্স বোয়িংয়ের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া মডেল।
শুল্ক নিয়ে বেশ বিভ্রান্তিও কাজ করছে। ট্রাম্প কোনো কোনো দেশের পণ্যে একবার শুল্ক দিচ্ছেন, কখনো স্থগিত করছেন, আবার প্রত্যাহার করছেন বা করার ঘোষণা দিচ্ছেন, তারপর ফের শুল্ক আরোপ করছেন।
এই ধরনের বিভ্রান্তিও উড়োজাহাজ সরবরাহে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অনেক এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহীরা বলছেন, শুল্ক দেওয়ার বদলে তারা এখন বিমান সরবরাহই পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন।