শনিবার বিকাল ৩টা থেকে টানা এক ঘণ্টা গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যায় বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।
Published : 03 Feb 2024, 08:47 PM
দুদিন বন্ধ থাকার পর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অংশে ফের প্রচণ্ড গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। একটি গুলি এসে অটোরিকশাতে পড়লেও এতে কেউ হতাহত হয়নি।
শনিবার বিকাল ৩টা থেকে টানা এক ঘণ্টা এই গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যায় বলে জানান উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ চৌধুরী।
তুমব্রু সীমান্তের সড়কে চলাচলকারী আবু তাহেরের অটোরিকশায় একটি গুলি এসে লাগলে সামনের গ্লাসের একটি অংশ ভেঙে যায়। তবে চালক ওই সময় গাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। গোলাগুলির ঘটনায় পুরো সীমান্ত এলাকাজুড়ে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
রাখাইনে সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ের প্রভাব পড়ছে সীমান্তের এপারের জনগোষ্ঠীর মধ্যেও। ২৭ জানুয়ারি সংঘর্ষের খবরের মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উলুবনিয়া এলাকার নুরুল ইসলামের বাড়িতে একটি গুলি এসে পড়লে আতঙ্ক তৈরি হয়।
এরপর গোলাগুলির ঘটনায় আতঙ্কে ২৯ জানুয়ারি ঘুমধুম এলাকায় কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘ছুটি’ দিয়ে দেওয়া হয়। যদিও পরদিন স্কুলগুলো ফের বসে।
মঙ্গলবার ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তেঁতইয়ারছড়ায় এসে তিনটি মর্টার শেল পড়লে বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে পড়েন।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ চৌধুরী বলেন, “বিকাল ৩টার দিকে সীমান্তের ওপারে রাখাইনের তুমব্রু রাইট পিলার ক্যাম্প এলাকা থেকে এলোপাতাড়ি ফায়ারিং শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এই ফায়ারিং চলে। অন্তত ১০টি মর্টার শেল এবং দুই শতাধিক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
“এ সময় উখিয়ার বালুখালী থেকে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের দিকে যাচ্ছিল একটি অটোরিকশা। উত্তরপাড়া পৌঁছার পর সেখানে দাঁড় করিয়ে চালক আবু তাহের স্থানীয় একটি দোকানে পান কিনতে যান। এ সময় একটি বুলেট অটোরিকশাটির সামনের গ্লাসে এসে পড়ে। এতে অটোরিকশাটির সামনের গ্লাসের সামান্য অংশ ভেঙে গেলেও চালক অক্ষত রয়েছেন।”
তুমব্রু এলাকায় বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, বিকালে গাড়ি নিয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের দিকে যাচ্ছিলেন। উত্তরপাড়ায় গাড়িটি রেখে তিনি দোকানে পান কিনতে যান। এ সময় মিয়ানমারের দিক থেকে আসা একটি বুলেট গাড়ির সামনের গ্লাসে এসে পড়ে।
“এখন সীমান্ত এলাকায় যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে স্থানীয়দের জীবনের নিরাপত্তা নেই। কখন মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে প্রাণ হারাতে হয় তার কোনো গ্যারান্টি নেই।”
স্থানীয়রা জানান, মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ৩৪ পিলার রাইট ক্যাম্প, ঢেঁকিবুনিয়া ক্যাম্প বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া। ক্যাম্পগুলোর এপারের সীমান্তে প্রচুর বাংলাদেশি জনবসতি রয়েছে।
আরাকান আর্মি রাখাইনের অনেক ক্যাম্প দখল করে নিয়েছে। এখন এই ক্যাম্পগুলোর দখল নিতে গোলাগুলি করলে তার অংশ এপারের সীমান্তে চলে আসবেই। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটবে বলে আশঙ্কা করেন সীমান্তবাসী।
আরও পড়ুন:
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে এসে পড়ল ৩ মর্টার শেল
অভ্যুত্থানের ৩ বছরে প্রথমবার বেকায়দায় মিয়ানমারের জান্তা প্রধান
জান্তা আমলে মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে: ভলকার তুর্ক
মিয়ানমারের ওপর আবার যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
মিয়ানমার সীমান্তে লাগাতার গোলাগুলি, নাইক্ষ্যংছড়ির ৫ স্কুলে ‘ছুটি’
সীমান্তে ‘সর্বোচ্চ সতর্ক’ থাকার নির্দেশ বিজিবি মহাপরিচালকের
মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে ফের গোলাগুলি, এপারে আতঙ্ক
মিয়ানমারের গুলি এসে ভেদ করল টেকনাফের বাড়ির দরজা
মিয়ানমারে যুদ্ধ: রাখাইনের যে খবর পাচ্ছেন ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা
তুমব্রু সীমান্তে রাতেও গোলাগুলি, পরিদর্শনে ডিসি-এসপি
জান্তা আমলে মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে: ভলকার তুর্ক
বিদ্রোহী জোটের হামলায় বহু এলাকা হাতছাড়া, কোণঠাসা মিয়ানমার জান্তা
মিয়ানমারে পেরে উঠছে না জান্তা বাহিনী, সমর্থন হারাচ্ছেন মিন অং হ্লাইং
ভারতে পালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনারা, উদ্বিগ্ন মিজোরাম
প্রত্যাবাসন: রাখাইন ঘুরে ‘উন্নতি’ দেখেছে আরআরআরসি, রোহিঙ্গারা হতাশ
জরুরি অবস্থার প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা মিয়ানমার জান্তা সরকারের
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে এসে পড়ল ৩ মর্টার শেল
মিয়ানমারে যুদ্ধ: স্থল সীমান্তের পাশাপাশি নৌপথেও নিরাপত্তা জোরদার