এ ঘটনায় শিশু দুটির বাবার করা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
Published : 19 Apr 2025, 05:14 PM
গাজীপুরের টঙ্গীতে দুই শিশু সন্তানকে হত্যায় মাকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতে শিশুদের মা আলেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে শনিবার দুপুরে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের ডিসি এনএম নাসিরুদ্দিন।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জাহিদ হাসান বলেন, “ঘটনাটি নিয়ে এখন তদন্ত চলছে।”
শুক্রবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর আরিচপুর (জামাই বাজার) এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে মালিহা আক্তার (৬) ও মো. আবদুল্লাহ (৪) নাম দুই ভাই-বোনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় রাতেই শিশুদের বাবা আবদুল বাতেন মিয়া অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বাতেন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তাতুয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা।
পরিবার নিয়ে আরিচপুর জামাইবাজার এলাকার সেতু ভিলা নামে আট তলা একটি ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থেকে পরিবহন ব্যবসা করেন তিনি।
বাতেন মিয়ার তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে ছিল নানাবাড়িতে। শুক্রবার দুপুরে বাড়িতে থাকা শিশুদের বাবা, মা ও দাদি একসঙ্গে খাবার খান। এরপর মা আলেয়া বেগম একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। দাদি ওপরতলার ফ্ল্যাটে বেড়াতে যান ও বাবা তাদের ঘরে রেখে বাইরে যান। কিছু সময় পর আলেয়া বেগম ঘুম থেকে জেগে ঘরে তার দুই শিশু সন্তান খুন হয়েছেন বলে স্বজনদের জানান।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
শুক্রবার রাতেই শিশুদের মা আলেয়া বেগমকে (৩০) আটক করে টঙ্গী (পূর্ব) থানা পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, টঙ্গীর আরিচপুরের যে বাড়িতে ওই পরিবার ভাড়া থাকত, সেখানে আশপাশে বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। এসব ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, ঘটনাটি যে সময়ে ঘটেছে, সে সময় তাদের ঘরে বা ফ্ল্যাটে আলেয়া বেগম ছাড়া আর কেউ যাতায়াত করেননি।
কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় সন্ধ্যায় তাকে আটক করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় তার হাতে কাটা দাগ দেখে পুলিশের সন্দেহ বাড়ে।
সংবাদমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ দাবি করে, প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয় যে, বাদীর স্ত্রী আলেয়া বেগম এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
আলেয়া বেগম মাইগ্রেনের অসুখে ভুগছেন বলে পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন স্বজনরা । তবে তার মানসিক কোনো সমস্যা আছে কি না, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের এসি মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, “এ ব্যাপারে তদন্তকাজ চালছে। তদন্তের পরে আসল তথ্য জানা যাবে।”
আরো পড়ুন:
টঙ্গীতে ফ্ল্যাট থেকে ছেলে-মেয়ের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার, বাবা-মাকে