আত্মহত্যার আগে নিজের সঙ্গে করা কারখানা কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতার কথা জানিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেন ওই শ্রমিক।
Published : 18 Apr 2025, 10:48 PM
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কারখানার ভেতরেই বিষাক্ত রাসায়নিক পানে আত্মহত্যা করেছেন এক শ্রমিক।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে মৌচাক এলাকায় মণ্ডল গ্রুপের মন্ট্রিমস্ লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে বলে কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক যোবায়ের বলেন।
মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ইদ্রিস আলী (২৩) কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সপরিবারে ভাড়া বাসায় থেকে ওই কারখানার কার্টন সেকশনে কাজ করতেন বলে বেশ কয়েকজন শ্রমিক সাংবাদিকেদের জানান।
বিষপানের আগে তিনি তার ফেইসবুকে (অগোছালো ভাষায়) পোস্ট দিয়ে কারখানার দুই কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করে তার আত্মহত্যার জন্য দুই কর্মকর্তাকে দায়ী করেন ইদ্রিস।
পোস্টে তিনি বলেন, “মণ্ডল গ্রুপের মন্ট্রিমস লিমিটেডে এক বছর যাবত চাকরি করি। কিছু লোক আসার তিন মাস এবং ছয় মাস হচ্ছে। তাদেরকে পার্মান (স্থায়ী) করে। আমাকে করে না। কারণ হচ্ছে, আমরা মেশিনের লোক।
“একদিন ৪টায় গিয়েছিলাম। তার জন্য আমাকে বিচার করছে, আমি কী অপরাধ করছি? তাদের জন্য আমার জীবন শেষ করে দেব।”
তিনি বলেন, “ওরা মানুষকে মানুষ মনে করে না। তারা মনে করে, ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির তৈরি। আমি আজকে সুইসাইড করব। ঈদের নিয়মে আমি অনেক কষ্ট পাইছি। এই পৃথিবীতে মানুষ বড় নিষ্ঠুর। আপনারা এর বিচার করবেন।”
পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
নিহতের ভগ্নিপতি বাবু বলেন, “ইদ্রিস আলী অনেকদিন মন্ট্রিমস্ লিমিটেড পোশাক কারখানায় কাজ করে। ওর সাথের সবাইরে চাকরিতে পার্মানেন্ট (স্থায়ী) করলেও কর্তৃপক্ষ ওকে পার্মানেন্ট করেনি। অসুস্থ থাকার আগের দিন সে ৬টায় কারখানা থেকে বের হয়। এজন্য পরের দিন দুই কর্মকর্তা তাকে ডেকে নিয়ে বকাঝকা করে। এ জন্য দুঃখ-যন্ত্রণায় সে আত্মহত্যা করেছে।”
মণ্ডল গ্রুপের মন্ট্রিমস্ লিমিটেড পোশাক কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, “কারখানার একজন শ্রমিক বিষ জাতীয় কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।”
কারণ জানতে চাইলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি আর ধরেননি।
কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক যোবায়ের বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”