“অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ ছুটি দেওয়া হয়; পরে পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
Published : 29 Jan 2024, 06:31 PM
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লাগাতার গোলাগুলির ঘটনায় আতঙ্কে কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘ছুটি’ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বিভাগ।
স্কুলগুলো হল- উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমকুল তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা বলেন, “আজকে অতিমাত্রায় গোলাগুলি হয়েছে। বন্ধ করা নয়, সোমবার দুপুরের পর ছুটি দেওয়া হয়েছে। সীমান্তঘেঁষা লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ ছুটি দেওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগকে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে যা সিদ্ধান্ত আসে সেটাই করা হবে বলে জানান ত্রিরতন চাকমা।
বাংলাদেশের পাশে অবস্থিত মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) লড়াই চলছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে।
মিয়ানমারের গুলি এসে ভেদ করল টেকনাফের বাড়ির দরজা
মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে ফের গোলাগুলি, এপারে আতঙ্ক
সীমান্তে ‘সর্বোচ্চ সতর্ক’ থাকার নির্দেশ বিজিবি মহাপরিচালকের
এসব প্রতিবেদনে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দখলে থাকা অনেক শহর ও এলাকা বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে বলেও বলা হয়। দিন দিন দুপক্ষের মধ্যে লড়াই আরও তীব্র হচ্ছে।
এর রেশ এসে পড়েছে এপারের জনগোষ্ঠীতেও। শনিবার সংঘর্ষের খবরের মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উলুবনিয়া এলাকার নুরুল ইসলামের বাড়িতে এসে গুলিটি পড়লে আতঙ্ক তৈরি হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উলুবনিয়া, তুলাতুলি ও কাঞ্জরপাড়া সীমান্ত, উখিয়া উপজেলার পালংখালির আনজুমান পাড়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা তুমব্রু ও ঘুমধুম এলাকায় বেশি গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।
বাসিন্দারা সীমান্তের কাছে হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছেন। ভারী মর্টার শেলের শব্দও তারা শুনতে পাচ্ছেন। ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে ওঠে গোটা সীমান্ত এলাকা।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে সীমান্ত এলাকার কাছাকাছি না যেতে বারবার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। সবাইকে সতর্কভাবে চলাফেরার করতে বলা হয়েছে।
এরই মধ্যে সোমবার গোলাগুলির আতঙ্কে পাঁচটি স্কুলে ছুটি দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ডিসি শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, “সরকারি পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করা হয়নি। কেবল আজকের জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
“সীমান্তে কী হচ্ছে সবাই দেখছে। সেখানে উড়াউড়ি করছে। কখনও মর্টার শেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে নিরাপত্তার বিষয় মাথা রেখে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।”
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, “গোলাগুলির কারণে সীমান্ত এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিমাত্রায় সতর্ক অবস্থা জারি করা হয়েছে।”