দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যু বেড়ে ২০৫২

একদিনে আরও অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সরকারি হিসাবে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2020, 09:00 AM
Updated : 5 July 2020, 04:47 PM

এ ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায়। তাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৫২ জন।

গত এক দিনে আরও ২ হাজার ৭৩৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ জন হল।

আইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৯০৪ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। তাতে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট ৭২ হাজার ৬২৫ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা রোববার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তার ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে।

প্রায় এক মাস পর মৃতের সংখ্যা ২০ এপ্রিল ১০০ ছাড়িয়েছিল। মৃতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়ায় গত ২৫ মে। গত ১০ জুন মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়। দেড় হাজার ছাড়িয়েছিল ২২ জুন। প্রথম মৃত্যুর ৮৫ দিন পর ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা দুই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে গেল।

এই হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়াতে সময় লেগেছিল ২ মাস ৭ দিন। পরের ৫০০ জনের মৃত্যু ঘটে ১৬ দিনের মধ্যে। তার পরের ৫০০ জনের মৃত্যু ঘটে ১২ দিনে। মৃতের তালিকায় আরও ৫০০ জন যোগ হতে সময় লাগল ১৩দিন।

নাসিমা সুলতানা বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩৭ জন পুরুষ এবং ১৮ জন নারী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪১ জনের এবং বাড়িতে থাকা অবস্থায ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

তাদের মধ্যে ১৯ জন ঢাকা বিভাগের, ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন রাজশাহী বিভাগের, ২ জন সিলেট বিভাগের, ৬ জন খুলনা বিভাগের, ৮ জন রংপুর বিভাগের, ৫ জন বরিশাল বিভাগের এবং ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

এই ৫৫ জনের মধ্যে ১২ জনের বয়স ছিল ৭০ বছরের বেশি, একজনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। এছাড়া ৯ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ১৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।

নাসিমা সুলতানা জানান, দেশে এ পর্যন্ত যে ২০৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে এক হাজার ৬২৪ পুরুষ, ৪২৮ জন নারী।

তাদের মধ্যে এক হাজার ৬০ জন ঢাকা বিভাগে, ৬৩৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১০২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৮৬ জন সিলেট বিভাগের, ৬১ জন রংপুর বিভাগের, ৮৮ জন খুলনা বিভাগের, ৭২ জন বরিশাল বিভাগের এবং ৪৯ জন ময়মনসিংহ বিভাগের।

দেশে এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন, তাদের ৮৯০ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫৯৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩১১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১৫১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৭০ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ২৪ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে, ১৩ জনের বয়স ১০ বছরের নিচে।

বুলেটিনে জানানো হয়, সারা দেশে ৭৩টি পরীক্ষাগার চালু হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮টি পরীক্ষাগার থেকে নমুনা সংগ্রহের তথ্য এসেছে।

নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে সাভারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি ও ঢাকার সিআরএল ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

৬৮টি পরীক্ষাগারে গত এক দিনে ১৩ হাজার ৯৮৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে; এ পর্যন্ত দেশে পরীক্ষা হয়েছে ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৬২টি নমুনা।

পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৪ দশমিক ৭২ শতাংশ, মৃত্যু হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ।

সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে সাধারণ শয্যায় ভর্তি আছেন ৭ হাজার ১১৩ জন কোভিড-১৯ রোগী, আইসিইউতে ভর্তি আছেন ৩৫৫ জন।

তাদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭১৭ জন। এই সময়ে ৪৪৯ জন রোগীকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। সারা দেশে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৬ হাজার ৭১৫ জন রোগী।

নাসিমা সুলতানা জানান,হাসপাতালের তথ্যের জন্য ১৩১৩৭৯১১৩০, ০১৩১৩৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ নম্বরে ফোন করলে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির উপাত্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় রোববার দুপুর পর্যন্ত বিশ্বে ১ কোটি ১২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৫ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৫ লাখ ৩১ হাজার ৫৬ জন।

 

পুরনো খবর