সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাসে। তাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০১ জনে।
এই এক দিনে আরও ১ হাজার ৯৭৫ জনের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হল ৩৫ হাজার ৫৮৫ জন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর একদিনে এত বেশি রোগী আর কোনোদিন শনাক্ত হয়নি।
সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৩৩ জন। সব মিলয়ে এ পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ৩৩৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা সোমবার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ, ৫ জন নারী। তাদের মধ্যে ১১ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা; ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জনের বাড়ি রংপুর বিভাগে।
এই ২১ জনের মধ্যে দুইজনের বয়স আশি বছরের বেশি। ২ জনের বয়স ছিল ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরেরর মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
নাসিমা সুলতানা বলেন, শনাক্ত রোগীর সংখ্যার বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০ দশমিক ৬১ শতাংশ, মৃত্যু হার ১ দশমিক ৪১ শতাংশ।
বুলেটিনে জানানো হয়, গত এক দিনে দেশের ৪৮টি ল্যাবে ৯ হাজার ৪৫১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ঢাকায় নতুন যুক্ত হয়েছে ল্যাব এইড হাসপাতালের ল্যাব।
এই সময়ে নতুন করে ২৮৪ জনকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে আইসোলেশনে রয়েছেন ৪ হাজার ৬৫৩ জন।
দিনের পরিসংখ্যান দেওয়ার আগে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছ জানিয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, “ঈদুল ফিতরের শিক্ষা আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে উদ্বুদ্ধ করুক, এই কামনা করি। তবে করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে আমাদের জীবনের বাস্তবতা। করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের চিরকালীন ঈদ উৎসবের ব্যাপ্তি আর আমেজ ঢাকা পড়েছে স্বাস্থ্যবিধি মানার শৃঙ্খলে।
“বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে আমাদের সকলের প্রার্থনা করোনামুক্ত বিশ্বের জন্যে। পরম করুণাময়ের কাছে আমাদের প্রার্থনা, এ পৃথিবী আবার আগের মতো … সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাক। নতুন শিক্ষা নিয়ে শুরু হোক আমাদের সচেতন পথচলা।”
ঈদের দিনেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, চিকিৎসক ও অন্যান্য সেবাকর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান নাসিমা সুলতানা।
“করোনার কঠোর বাস্তবতা মাথায় রেখে স্বাস্থ্য সচেতনতার নিয়ম, বিধি মেনে ঈদের আনন্দ সকলে ভাগ করে নেব, এই আমাদের প্রত্যাশা।”
এদিন স্বাস্থ্য বুলেটিনে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিন বলেন, “যারা গ্রামে গেছেন, তারা যেন অহেতুক মানুষের সাথে মেলামেশা করে অন্যদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে না ফেলেন।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্ল্যানিং ও গবেষণা) ইকবাল কবির, এমআইএস শাখার পরিচালক হাবিবুর রহমান ও করোনাভাইরাস ল্যাব সেন্টারের কর্মকর্তারাও এদিন বুলেটিনে যুক্ত হয়েছিলেন।
পুরনো খবর