আক্রান্ত আট হাজার ছাড়ালো, মৃত্যু বেড়ে ১৭০

দেশে এক দিনে আরও ৫৭১ জনের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ২৩৮ জন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2020, 08:46 AM
Updated : 1 May 2020, 10:16 AM

শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭০ জন হয়েছে।

গত এক দিনে হাসপাতালে থাকা আরও ১৪ জন জন সুস্থ হয়ে ওঠায় এ পর্যন্ত মোট ১৭৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা শুক্রবার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি জানান, গত একদিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে এক জন পুরুষ, এক জন নারী। তাদের মধ্যে একজনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, অন্যজন ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। একজন ছিলেন ঢাকার বাসিন্দা, অন্যজন ঢাকার বাইরের।

সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৩১টি ল্যাবে এখন করোনাভাইরাস পরীক্ষা হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় এসব ল্যাবে ৫ হাজার ৫৭৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

বুলেটিনে জানানো হয়, গত এক দিনে আইসোলেশনে আনা হয়েছে ১৭৫ জনকে; এখন আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ৫২২ জন। হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ২ হাজার ৩৮১ জন।

কোভিড-১৯ আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির লক্ষণ-উপসর্গগুলো মিলিয়ে যাওয়ার পর দুই দফা পরীক্ষা করা হয়। প্রথম পরীক্ষাটির এক সপ্তাহ পরে আরও একটি পরীক্ষা হয়। পরপর দুটি পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এলে রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ বলা হয়।

নাসিমা সুলতানা বলেন, “শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৮০০ জন সুস্থ আছেন। মানে তাদের মধ্যে কোনো লক্ষণ-উপসর্গ নেই। কিন্তু পরপর তাদের দুটি টেস্ট করতে হবে। সে টেস্টে কারও হয়তো একটি টেস্ট হয়েছে, একটি টেস্ট এখনও হয় নাই। কারও হয়তো একটি টেস্টও হয় নাই। কারণ এখানে সময়ের বিষয়। লক্ষণ-উপসর্গ সম্পূর্ণভাবে নিরাময় হওয়ার পরে আমরা রিপিট বা পুনরায় টেস্টগুলো করি।”

এই ৮০০ জনের মধ্যে কেউ হাসপাতাল, কেউ বাড়িতে রয়েছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের বাড়িঘরে হামলা, তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার খবর এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

ওইসব এলাকার বাসিন্দাদের ‘মানবিক’ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, “যারা শনাক্ত হন, তারা দোষী ব্যক্তি না, তারা কোনো অপরাধী না। আবেদন রাখছি সকলের প্রতি… যারা কোভিড আক্রান্ত হচ্ছেন, শনাক্ত হচ্ছেন, তাদেরকে কোনোভাবেই হেয় করবেন না।”

তিনি বলেন, “কোয়ারেন্টিনে যারা আছেন, তারা হয়ত কেউ অসুস্থ নন। যারা সনাক্ত হয়েছিলেন, তাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন বলে হয়ত তাদেরকে আলাদা কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। ইনাদের মধ্যে লক্ষণ-উপসর্গ কারোরই নাই। লক্ষণ-উপসর্গ থাকলে আমরা সনাক্ত করতে পারতাম।

“অন্য যে কোনো অসুখের মতো এ অসুখেও সুস্থ হয়ে যান রোগী। আমরা আগেও বলেছি, আশি ভাগ মানুষের মধ্যে মৃদু লক্ষণ-উপসর্গ থাকে। বাকি তিন থেকে পাঁচ শতাংশ রোগীর মধ্যে সিরিয়াস লক্ষণ-উপসর্গ থাকে। তাদের হাসপাতাল বা আইসিইউ সাপোর্ট লাগে।”

দেশব্যাপী লকডাউনের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব না মেনেই অনেকে পথে বেরিয়ে এসেছেন, স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না। তাদের সতর্ক করে দিয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, “যে কোনো মুহূর্তে আপনি নিজেও কোভিড আক্রান্ত হতে পারেন। কারণ সামাজিকভাবে সংক্রমিত হচ্ছে। আজকে যে নেগেটিভ আছে, কালকে সে পজিটিভ হবে না, এটার কোনো গ্যারান্টি আমরা দিতে পারি না। “

 

পুরনো খবর