করোনাভাইরাস: এক দিনেই শনাক্ত দুই হাজারের বেশি রোগী

প্রথমবারের মত এক দিনে দুই হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের মধ্য দিয়ে দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2020, 08:51 AM
Updated : 29 May 2020, 03:08 AM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এ রোগে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে; বাংলাদেশে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৫৯ জন।

এই সময়ে রেকর্ড ২ হাজার ২৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৪০ হাজার ৩২১ জন হয়েছে।

সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫০০ জন। সব মিলয়ে এ পর্যন্ত মোট ৮ হাজার ৪২৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বৃহস্পতিবার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, গত একদিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী। তাদের মধ্যে ৬ জন ঢাকা মহানগরী, ১ জন নারায়ণগঞ্জ, ২ জন চট্টগ্রাম মহানগরী, ২ জন চট্টগ্রাম জেলা, ২ জন কুমিল্লা এবং ২ জন কক্সবাজারের রোগী ছিলেন।

এই ১৫ জনের মধ্যে একজনের বয়স ছিল নব্বই বছরের বেশি। এছাড়া ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ছিলেন ২ জন রোগী।

অধ্যাপক নাসিমা বলেন, শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

বুলেটিনে জানানো হয়, গত এক দিনে দেশের ৪৯টি ল্যাবে ৯ হাজার ৩১০ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নতুন যুক্ত হয়েছে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ল্যাব।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ২৪৮ জনকে। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৯৮৪ জনকে আইসোলশেন নেওয়া হয়েছে।

সংক্রমণের গতি এখনও বাড়ছে

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগীর খোঁজ মেলে গত ৮ মার্চ; তার দশ দিনের মাথায় ঘটে প্রথম মৃত্যু।

শুরুতে কেবল আইইডিসিআরে পরীক্ষা করার সুযোগ ছিল বলে ভাইরাসের বিস্তারের প্রকৃত চিত্র আসছিল না। এপিলের শুরুতে পরীক্ষার আওতা বাড়ার পর দেশে আক্রান্তের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যাওয়ার খবর দেয় ৬ এপ্রিল। এক দিনে ৩৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয় ১২৩ জন।

ছয় দিনের মাথায় ১২ এপ্রিল শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচশ ছাড়িয়ে যায়। এক দিনে ১৩৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় সেদিন পর্যন্ত মোট ৬২১ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানায় অধিদপ্তর।

শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়াতে এরপর সময় লাগে মাত্র দুই দিন। ১৪ এপ্রিল ২০৯ জন নতুন রোগী শনাক্তের তথ্য দেওয়া হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বুলেটিনে, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ১ হাজার ১২ জন। 

আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়ায় ২৬ এপ্রিল, সেদিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪১৮ জন। তাতে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ হাজার ৪১৬ জন।

আর আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারে পৌঁছায় ৪ মে। সেদিন ৬৮৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজার ১৪৩ জন হয়।

অর্থাৎ, দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ৫৭ দিনের মাথায় শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা দশ হাজারের ঘরে পৌঁছায়।

এরপর মাত্র ১১ দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ হাজারের ঘর ছড়িয়ে যায়। ১৫ মে ১ হাজার ২০২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজার ৬৫ জন হয়।

শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩০ হাজারের ঘর পার হতে এরপর সময় লাগে মাত্র সাত দিন। ২২ মে ১ হাজার ৬৯৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ৩০ হাজার ২০৫ জন।

পরের দশ হাজার রোগী শনাক্ত হতে সময় লাগল আরও কম, ছয় দিন। বৃহস্পতিবার দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪০ হাজার পেরিয়ে গেল।

পুরনো খবর