বড়লেখা, জুড়ি ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন স্থানে ঢাকা-বিয়ানীবাজার ও ঢাকা-মৌলভীবাজার সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।
Published : 24 Aug 2022, 06:48 PM
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় সড়ক অবরোধ করেছেন।
বুধবার তারা বড়লেখা, জুড়ি ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন স্থানে ঢাকা-বিয়ানীবাজার ও ঢাকা-মৌলভীবাজার সড়ক অবরোধ করেন। এতে বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন; ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন চা শ্রমিকরা।
মৌলভীবাজারের ৯২টি, সিলেট ও হবিগঞ্জের ২৩টি করে চা বাগানের শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন ৯ অগাস্ট থেকে।
মৌলভীবাজার ও সিলেটের কয়েকটি বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও অধিকাংশ বাগানের শ্রমিকরা কাজ থেকে বিরত রয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকরা উপজেলার দক্ষিণভাগ এলাকায় ঢাকা- বিয়ানীবাজার সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সড়কে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে।
বিয়ানীবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করা ইকরাম মাহমুদ চৌধুরী জানান, সকাল সাড়ে ১১টায় বিয়ানীবাজারে গাড়িতে উঠেছেন। বড়লেখার দক্ষিণভাগে প্রায় সোয়াঘণ্টা আটকা ছিলেন।
জুড়ি উপজেলায় দেখা যায়, বেলা ২টার দিকে উপজেলার চৌমুহনীতে কয়েকটি চা বাগানের শ্রমিকরা জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করেন; চলে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। এ সময় তারা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে শ্লোগান দেন।
যাত্রীবাহী বাস শ্যামলী পরিবহনের চালক তাজুল ইসলাম জানান, বড়লেখায় ১ ঘণ্টা এবং জুড়িতে দেড়ঘণ্টা আটকা পড়েন তিনি। সাড়ে ১১টার গাড়ি শ্রীমঙ্গলে আসতে ২ ঘণ্টার স্থলে ৫ ঘণ্টা লেগেছে।
এদিকে বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল সাতগাও চা বাগান কারখানার সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন চা শ্রমিকরা। এ বিক্ষোভে শ্রীমঙ্গলের সাইফ, মাকড়ীছড়া, মীর্জাপুর, সাতাগাও, বৌলাছড়া ও ইছামতিসহ কয়েকটি বাগানের শ্রমিকরা অংশ নিয়েছেন।
বিকাল ৫টার দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলি রাজিব মাহমুদ মিঠুন সাতগাও চা বাগান কারখানার সামনের অবরোধ স্থলে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে তারা রাস্তা অবরোধ তুলে নেন।
সরজমিনে দেখা যায়, শ্রমিকরা রাস্তার এপার-ওপার বাঁশ বেঁধে তাতে বিভিন্ন বাগানের নামে ব্যানার-ফেস্টুন বেঁধে রাখেন। আন্দোলনরত নারী-পুরুষ চা শ্রমিকদের রাস্তায় বসে চা পাতা ভর্তা তৈরি করে খেতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে শ্রীমসঙ্গলের সাঁতগাও চা বাগানের বাগান পঞ্চায়েত কাজল কালিন্দি বলেন, ১৬ দিন হচ্ছে আন্দোলন করছেন। তাদের যৌক্তিক দাবি মালিকরা মানছেন না। তাই বাধ্য হয়ে তারা আন্দোলন কঠোর করছেন।
আন্দোলনকারী রাধাকান্ত কৈরী বলেন, পেটের জ্বালায় তারা আন্দোলন করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চলবে।
আরও পড়ুন:
মৌলভীবাজারে শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত, নানামুখী চাপে চা-শিল্প
বাগানে বাগানে মৌলভীবাজারের ডিসি, কর্মবিরতিতে অনড় চা শ্রমিক
চা শ্রমিকদের এক ঘণ্টার অবরোধে সিলেটের পথে ট্রেন চলাচল ব্যাহত
সিলেটে পঞ্চায়েত ও চা শ্রমিক নেতাদের বৈঠক, কর্মবিরতি থাকছেই
মজুরি বৃদ্ধির দাবি: হবিগঞ্জে চা শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত
সিলেটের ২৩টির মধ্যে কাজে ফিরেছেন চার বাগানের শ্রমিক
চা শ্রমিক ইউনিয়ন কাজে ফিরছে ১২০ টাকা মজুরিতেই
চা শ্রমিকের মজুরি বেড়ে ১৪৫ টাকা, আন্দোলন প্রত্যাহার
মজুরি ৩০০ টাকা করতে দুদিন সময় দিয়ে রাস্তা ছাড়ল চা শ্রমিকরা
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চা শ্রমিকদের অবরোধ, দীর্ঘ যানজট
শ্রমিক ধর্মঘট: মৌলভীবাজারে ফিনলে টি’র ৫ বাগানের জিডি
কর্মবিরতির মধ্যে শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠকে চা শ্রমিকরা
বাগানে বাগানে মিছিল, এমপিকে স্মারকলিপি চা শ্রমিকদের
ভরা মৌসুমে শ্রমিক ধর্মঘটে শঙ্কায় চা বাগান
মজুরি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান চা শ্রমিকরা
১২০ টাকায় কীভাবে সংসার চলে, প্রশ্ন চা শ্রমিকের
অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে চা শ্রমিকরা
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা বাগানে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি