দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৯ অগাস্ট থেকে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন তারা।
Published : 22 Aug 2022, 10:56 AM
‘প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে’ কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে আপাতত ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চা শ্রমিক ইউনিয়ন।
রোববার রাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের এক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
তাতে বলা হয়, মজুরি বাড়ানোর দাবি নিয়ে শ্রমিকরা দুর্গাপূজার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলবেন, যা আয়োজনের উদ্যোগ নেবে জেলা প্রশাসন।
আর বাগান মালিকরা বাগানের প্রচলিত প্রথা অনুসারে ধর্মঘটকালীন মজুরি শ্রমিকদের পরিশোধ করবেন।
এরপর সোমবার সকালেই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ অগাস্ট থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন দেশের ২৪১টি চা বাগানের প্রায় সোয়া লাখ শ্রমিক। প্রথম চারদিন শ্রমিকরা প্রতিদিন দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। ১৩ অগাস্ট থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা।
১১ দিন পর গত ২০ অগাস্ট শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠকে দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকায় রাজি হয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। কিন্তু আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে রোববার রাজপথে নামে।
চা শ্রমিকের মজুরি বেড়ে ১৪৫ টাকা, আন্দোলন প্রত্যাহার
মজুরি ৩০০ টাকা করতে দুদিন সময় দিয়ে রাস্তা ছাড়ল চা শ্রমিকরা
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চা শ্রমিকদের অবরোধ, দীর্ঘ যানজট
এই প্রেক্ষাপটে রোববার রাতে আবার চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাহিদুল ইসলাম।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ‘সম্মান’ জানিয়ে ১২০টাকা মজুরিতেই সোমবার থেকে কাজে যোগ দিচ্ছেন তারা।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে বিজয় ছাড়াও রয়েছেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেণ পাল, সহসভাপতি পংকজ চন্দ্র, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালন্দি প্রমুখ।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “মামনীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তার সম্মানে চা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং-বি ৭৭ তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আগামীকাল ২২/০৮/২২ কাজে যোগ দেবেন। আপাতত চলমান মজুরি অর্থাৎ ১২০/-(একশত বিশ) টাকা হারেই শ্রমিকগণ কাজে যোগদান করবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্স পরবর্তীতে মজুরির বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার পর চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে মর্মে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দাবি জানান।
“আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার পূর্বে মামনীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হওয়ার জন্য চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আবেদন করেছেন যা জেলা প্রশাসক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থাপিত হবে। চা শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিসমূহ লিখিত আকারে জেলা প্রশাসকের নিকট দাখিল করবেন। জেলা প্রশাসক প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার জন্য দাবিসমূহ প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করবেন।"
আরও পড়ুন-