দক্ষিণ জার্মানির বাডেন-ভুর্টেমবের্গ রাজ্যের একটি ছোট শহর থেকে লিখছি। আশেপাশে ছোট ছোট গাঁয়ের ভিড়ে এ শহর।
Published : 26 Apr 2018, 11:57 AM
বড় শহরের মতো উঁচু উঁচু দালান নেই এ শহরে। নেই যানজট। শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে রেল লাইন। চেপে বসলেই যাওয়া যাবে লন্ডন, প্যারিস বা আমস্টার্ডাম।
এই ব্যাপারটি সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। গোটা জার্মানিকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনা হয়েছে। রেল যোগাযোগ সারা ইউরোপের সাথে আছে।
অবসরের বিকালে প্রায়ই আশপাশের গ্রামগুলোতে ঘুরে বেড়ানো হয়। জুতো খুলে মাঠে খালি পায়ে হাঁটা হয়। আলু, ভুট্টা আর স্ট্রবেরি ক্ষেত দেখতে দেখতে দেশের কথা মনে পড়ে।
ক্ষেত-খামারে, বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে আমার খুব ভালো লাগে। প্রায়ই ঘুরে বেড়াই জার্মানির বন-বাদারে। দৈনিক ঘুম ভাঙে পাখিদের ডাকাডাকিতে। বেশ ভালোই লাগে।
প্রতিবেশী হেলমুট সাহেব প্রায়ই ডাকেন আমাকে। হেলমুট সাহেব পাখিদের প্রতিদিন খাবার ও পানি দেন। পাখিদের বাসাবাড়ি তৈরি করে দেন। পাখিদের বিলাসবহুল বাসা কিনে দেন। পাখিরা পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে-শান্তিতে থাকে এসব বাসাতে।
ব্যাপারটি আমি খুবই উপভোগ করি। দেশের বাড়ির উঠোনে লাউ, শিম গাছে, আম ও কদম গাছের ডালে চড়ুই, দোয়েল, আর ঘুঘু পাখির ডাকাডাকি-উড়াউড়ি খুব মনে পড়ে।
সুপার মার্কেটে পাখির ছোটো ছোটো বাসা কিনতে পাওয়া যায় এখানে। মার্কেটের পুরো এক কোণা ভর্তি থাকে পশু-পাখির খাবারে। হেলমুট সাহেব পাখিদের ভরণ-পোষণ করেন এসব দিয়ে।
হাঁসেরা থাকে লেকে। ডিম পাড়ে কিনারে এসে। ডিম পড়ে থাকে গাছের গোড়াতে। লেকের মধ্যে নানান জাতের মাছ আছে। পরিষ্কার পানির মধ্যে মোটা মোটা মাছের ছোটাছুটি স্পষ্ট দেখা যায়। দেখে মনে লোভ জাগে। জার্মানিতে তাজা মাছের যে দাম! ইচ্ছে হয় রাতের আঁধারে লেক থেকে মাছ ধরে নিয়ে আসি।
এখানকার প্রায় সব বাসায় বাসায় আছে পাখির জন্যে বাসা। সেসব বাসায় পাখিদের বসবাস, খেলাধুলা ও ঝগড়াবিবাদ। পাখিরা এসব বাসায় বংশবিস্তার করে। তারপর বড় হয়ে ডাকাডাকি করে, উড়াউড়ি করে। আর এসব দেখেই জার্মানদের যত আনন্দ।
শহরের গাছে গাছে বন-জঙ্গলেও দেখা যায় পাখিদের জন্য আকর্ষণীয় নানান রঙের বাসা। শহরের পক্ষ থেকে পাখিদের এগুলো দেওয়া হয়েছে কিনা কে জানে?
লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি
ইমেইল- [email protected]
এই লেখকের আরও লেখা
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |