থাইল্যান্ডে মধ্যরাতেও নিরাপদ নারীরা

থাইল্যান্ডে কোনও রাষ্ট্রীয় ধর্ম নেই। তবে বৌদ্ধ ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্ম থেকে কেউ কখনও রাজা হতে পারবেন না ।

নাঈম হাবিব, জার্মানি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2017, 04:04 AM
Updated : 20 Sept 2017, 12:42 PM

থাইল্যান্ডে প্রচলিত প্রধান ধর্ম হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্ম। তাই ধারাবাহিকভাবে থাইল্যান্ডের  রাজাও আসবেন বৌদ্ধ ধর্ম থেকেই। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৯৩ ভাগ বুদ্ধ, সাড়ে পাঁচ ভাগ মুসলিম, আর বাদবাকি অন্য ধর্ম।

রাজধানী ব্যাংককের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কিংবা সুপারমার্কেটে অনেক সময় দেখা মেলে মুসলিম নারীদের। খুব সহজেই চিনে নেওয়া যায় মুসলিমদের। কারণ থাই মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরে থাকেন। রাজধানীর বাইরে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের দৃশ্য আরও  চমৎকার।

থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের শহর কারাবি, অয়নাং, পাত্তানি, আলা, নারাথিওয়াৎ ও সংখালে দেখা যাবে থাই মুসলিমদের দৈনিন্দন জীবন-যাপন। থাই মুসলিম নারীরা সবসময় হিজাব পরেই থাকেন। ঘরে-বাইরে হিজাব পরেই দৈনন্দিন কাজকর্ম ও ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। দক্ষিণাঞ্চলে দেখা যাবে, থাইল্যান্ডের মুসলিম নারীদের মোটরসাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্যও। সে যেন এক ভিন্ন জগৎ!

থাইরা অনেক কর্মঠ। মেয়েরা এখানে অনেক নিরাপদ। মধ্য রাতেও দেখা যায় মহিলারা মনের আনন্দে মোটরসাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য দোকান বন্ধ করে বা কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরছেন তারা। মেয়েরা অনেক স্বাধীন ও অনেক নিরাপদ এখানে।

অয়নাং টাউনে রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছিলাম। কেউ একজন পেছন থেকে বলছিলেন,
ট্যাক্সি লাগবে ট্যাক্সি? মেয়েদের গলা স্বর, ফিরে তাকিয়ে দেখি হিজাব পরা একজন থাই মেয়ে। মোটরসাইকেলে সংযুক্ত বিশেষ এক ধরনের থাইল্যান্ডের ট্যাক্সিচালক।

থাইল্যান্ডে অনেক ঘুরলেও দক্ষিণাঞ্চলে না গেলে হয়তো এমন দৃশ্য দেখাও হতো না। দুনিয়ার দেশে-দেশে যখন চলছে জাতিগত দাঙ্গা, কোথাও চলছে জাতিগতভাবে নির্মূল করার চেষ্টা, কোথাও বোরকা আর হিজাব নিষিদ্ধ তো কোথাও নিষিদ্ধ বিকিনি, তখন আমার মনে হলো- বেশ সুখেই আছেন থাইল্যান্ডের এই মুসলমানরা।

অয়নাং টাউনে দু’টো মুসজিদ দেখতে পেলাম। দুটির মধ্যে একটি অত্যন্ত সুন্দর মসজিদ। তাই এটি হলো শহরের পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়। রাতের বেলা মসজিদটিকে খুবই চমৎকার দেখায়। নানা রঙের বাতি আর মিনিটেই বাতির রঙ পরিবর্তন হয়। থাইল্যান্ডের মসজিদে আওয়াজ করেই মাইকে আজান দেওয়া হয়।

অয়নাং টাউনে লক্ষ্য করলাম ভিন্ন কিছু! এখানে তুলনামূলক মসজিদের সংখ্যা কম হওয়ায় তার সংযোগে সারা টাউনে মাইক লাগানো হয়েছে। আজান হয় মসজিদ দুটিতে, কিন্তু শুনতে পান সারা টাউনবাসী।

আজান শেষে দেখলাম লুঙ্গি-পাঞ্জাবি পরে মোটরসাইকেলে করে মসজিদের দিকে ছুটছেন থাই মুসলিমরা। সারা থাইল্যান্ডে মসজিদের সংখ্যা মোট ৩ হাজার ৪৯৪টি। তার মধ্যে বেশিরভাগই দক্ষিণ থাইল্যান্ডে অবস্থিত।

লেখক:

 প্রবাসী বাংলাদেশি

ইমেইল- md.naim@aol.com

এই লেখকের আরও লেখা

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!