জার্মানিতে এসেছি তিন বছর আগে। এর আগে ছিলাম দুবাইয়ে। ওখানে খাওয়া-দাওয়া ভালোই হতো। দেশি মাছ, শুটকি, শাক-সবজি কোনোকিছুরই অভাব ছিলো না।
খাদ্যের অভাব বুঝতে পেরেছি জার্মানিতে আসার পরে। জার্মানিতে তাজা খাবার একটু কমই পাওয়া যায়। শাক-সবজি আমাদের দেশের তুলনায় অনেক কম এখানে। ভাবছেন, জার্মানরা তাহলে কী খায়? জার্মানরা আলু বেশি খায়।
যাই হোক, সে আমাকে জিজ্ঞেস করেনি যে কিছু মরিচ পাঠিয়ে দেবো নাকি? দিলে ভালোই হতো। চিন্তায় আছি, কী করি? আমার তো মরিচ চাই। পরে কাঁচা মরিচ নিজেই চাষ করতে শুরু করলাম। অনেক মরিচ ধরেছিলো আমার গাছে। তখন নিজের গাছের মরিচ খেলাম। আর বাকি মরিচ শুকিয়ে রাখলাম শীতকালের জন্য।
অবশ্য বড় শহরে তুর্কিস বা আরবি মার্কেটে মাঝে মধ্যে কাঁচা মরিচ পাওয়া যায়। মরিচ আসে ভারত থেকে। প্রতি কেজি ৫ ইউরো ৯৯ পয়সা, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ছয়শ’ টাকার মতো।
দেশ-বিদেশে বাংলাদেশি রেস্তোরাঁয় টেবিলের উপর কাঁচা মরিচ রাখতে দেখা যায়। দুবাই থাকাকালীন অবস্থায় অনেক ভারতীয়-পাকিস্তানি লোক আমাকে জিজ্ঞেস করতো, তোমাদের রেস্তোরাঁয় টেবিলের উপর কাঁচা মরিচ রাখা হয় কেন? উত্তরে মজা করে আমি বলতাম, চায়ের সাথে খাওয়ার জন্য।
কিছুদিন আগে কাঁচা মরিচ নিয়ে দেশের কিছু খবর পড়লাম। দেশে মরিচের চড়া দাম! প্রতি কেজি মরিচ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। কেউ কিনেছেন বিশ টাকায় বাইশটি মরিচ। খবর পড়ে অবাকই হলাম। যে দেশের মাটি এতো খাঁটি, সে দেশে মরিচের এতো অভাব? যে দেশে ছাদের উপরে ধান চাষ হয়, সে দেশে রান্নাঘরে কাঁচা মরিচ চাষ করা তো সময়ের ব্যাপার মাত্র।
সঠিক পদ্ধতিতে মরিচের চারা রোপন করলে ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যেই গাছে মরিচ ধরে যায়। আর কীভাবে ঘরের ভেতরে-বাইরে, কিংবা বাসার ছাদে মরিচ চাষ করতে হয়, তা নিয়ে আজকাল ইউ টিউবে হাজারও ভিডিও পাওয়া যায়।
সুতরাং মরিচ চাষ করুন, আর প্রাণভরে মরিচ খান।
লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি
ইমেইল- md.naim@aol.com
এই লেখকের আরও লেখা