ঘুরে এলাম স্পেনের কর্ডোভা মসজিদ

নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাসই হতো না যে এতো আগে নির্মাণ, এতো সুন্দর মসজিদ তখন হয়তো কোনো আরব দেশেও নির্মাণ হয়নি।

নাঈম হাবিব, স্পেনের কর্ডোবা থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2017, 11:11 AM
Updated : 15 July 2017, 11:11 AM

স্পেনিশ ভাষায় মসজিদকে বলা হয় ‘মেজকিতা’। ৭১১ থেকে ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্পেনে মুসলিম শাসনামলে নির্মাণ করা হয় অনেক ইসলামিক স্থাপনা। স্পেনের আন্দালুসিয়ার কর্ডোভা মসজিদ তার মধ্যে অন্যতম। কাঠামোটি মুরিশ স্থাপত্যের সর্বাপেক্ষা নিখুঁত স্তম্ভগুলির মধ্যে একটি।

১২শ’ বছর আগে খলিফা প্রথম আব্দুর রাহমানের আমলে ৭৮৪ থেকে ৭৮৬ সালে স্পেনের তৎকালীন রাজধানী কর্ডোভায় নির্মাণ করা হয় ঐতিহাসিক কর্ডোভা মসজিদ, যা ‘লা মেজকিতা’ কিংবা ‘দ্য গ্রেইট মসজিদ অব কর্ডোভা’ নামেও পরিচিত।

স্থাপনের পর প্রায় পাঁচশ’ বছরেরও বেশি সময় এ মসজিদে নামাজ আদায় করেন মুসলমানরা। সে সময় মসজিদটি ইসলামি শিক্ষা, শরিয়া আইন ও সালিস কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তারপর ক্যাসলের রাজা তৃতীয় ফার্দিনান্দ ও রাণী ইসাবেলা ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দে মুসলমানদের পরাজিত করে স্পেন দখল করলে পাল্টে যায় কাহিনি।

জানা যায় মুসলমানদের সরিয়ে দিয়ে মসজিদটিকে রোমান ক্যাথলিক গির্জায় রূপান্তরিত করা হয়। তবে ঐতিহাসিক এ স্থাপনাটিকে এখনো পর্যটক ও স্পেনিশরা মসজিদ হিসেবেই দেখেন ও ডাকেন।

উর্দু ভাষার কবি ইকবাল কর্ডোভা মসজিদ ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি এ মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সাতটি কবিতা লিখেছিলেন। ‘বালে জিবরিলে দুআ’ শিরোনামে দীর্ঘ কবিতাটি ওই মসজিদে বসেই লিখেছিলেন তিনি।

অত্যন্ত সুন্দর এ মসজিদটিতে মার্বেল, গ্রানাইট, জেসপার, অনিক্স পাথরে তৈরি কলাম রয়েছে মোট ৮৫৬টি। জানা যায় বিখ্যাত এক সিরিয় স্থপতির নকশায় নির্মাণ করা হয় এ মসজিদটি। প্রথম দফায় নতুন করে সংস্কার করে সোনা, রুপা ও তামাসহ অনেক মূল্যবান উপাদান ব্যবহার করে এর সৌন্দর্য আরও বাড়ানো হয়।

১৯৮৪ সালে ঐতিহাসিক এ মসজিদটিকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃত দেয়। মসজিদের ভেতরে ঢোকার জন্য টিকেট ফি ১০ ইউরো। প্রতিদিন অনেক পর্যটক ভিড় করেন ঐতিহাসিক এ মসজিদটি দেখার জন্য।

বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য পরামর্শ হলো প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা বিনা টিকিটে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ ও ছবি তোলা যায়।

লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি

এই লেখকের আরও পড়ুন

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!