ময়মনসিংহ সিটি ভোট: ‘প্রতিপক্ষের বিভেদ’ টিটুকে সুবিধা দেবে?

এমপি-সমর্থক হিসেবে পরিচিতরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আছেন; এটি টিটুকে ‘সুবিধা দেবে’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

চন্দন সাহা রায়ইলিয়াস আহমদ. ময়মনসিংহ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2024, 06:46 PM
Updated : 2 March 2024, 06:46 PM

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থী ইকরামুল হক টিটু ৪৮ বছরের জীবনের অর্ধেকটাই কাটিয়েছেন জনপ্রতিনিধি হিসেবে। দুবার পৌরসভার কমিশনার, দুবার চেয়ারম্যান এবং এই নগরীর প্রথম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রায় আড়াই দশকের নির্বাচনি রাজনীতিতে তাকে কখনও পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়নি।

তার শুরুটা হয়েছিল ২০০০ সালে। তখন ময়মনসিংহ পৌরসভায় যে কজন কাউন্সিলর জনপ্রিয়তার দিক থেকে শহরবাসীর মনযোগ আকর্ষণ করেছিলেন তাদের মধ্যে বাবুল রায় ছিলেন অন্যতম। এক সময়ের তুখোড় বামপন্থি এই শ্রমিক নেতা সেই সময়ের সবচেয়ে বড় শ্রমিক সংগঠনের মোর্চা বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন।

দাপটের সঙ্গে পর পর দুইবার নির্বাচিত পঞ্চাশোর্ধ্ব এই কাউন্সিলর তখন তৃতীয়বার জয়ের জন্য কালীবাড়ী-কবরখানা-মহারাজ রোড এলাকা থেকে প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু তার সামনে ‘হাতি’ নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন নির্বাচনের রাজনীতিতে একেবারে নবিশ বছর পঁচিশের যুবক টিটু।    

সেই বাধা আর ডিঙ্গোতে পারেননি বাবুল রায়। সবাইকে চমকে দিয়ে বিপুল ভোটে কমিশনার নির্বাচিত হয়ে পৌরসভায় প্রবেশ করেন টিটু। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। গত আড়াই দশকে টিটু ওয়ার্ড ছেড়ে পৌরসভা, পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশনের প্রথম প্রধানের দায়িত্বও নেন।

বয়সের ভারে ন্যুজ্ব বাবুল রায় এবারও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। মার্কা কাঁটা চামচ। এক সময় নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র পদপ্রার্থী টিটুকে ‘পরিপক্ক রাজনীতিবিদ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বলছিলেন, “আমি সারাজীবন শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করেছি। অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি নম্র, ভদ্র ও ব্নিয়- একজন রাজনীতিবিদের তিনটি গুণ। এই তিনটি গুণই টিটুর আছে। পক্ষ-বিপক্ষ সবাইকে সে এক করতে পারে। আমি তো তাকে নিয়ে গর্ব করি।”

টিটুর মত এমন একজন শক্তিশালী প্রার্থীর বিরুদ্ধে তার বিরোধী পক্ষ সম্মিলিতভাবে একজনকে মেয়র পদে ভোটে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন; যারা মূলত স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহিত-উর রহমান শান্তর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত, দ্বিধা-বিভক্ত জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সেটি হয়নি। টিটুর বিরোধী হিসেবে পরিচিতরা এখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আছেন। এমপি-সমর্থকদের এই বিভক্তি টিটুকে সুবিধা দেবে বলে মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগ এবার সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে কারণে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দেয়াল ঘড়ি নিয়ে।

তার সঙ্গে মেয়র পদের ভোটের লড়াইয়ে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম (ঘোড়া প্রতীক), শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কী টজু (হাতি প্রতীক), কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ড. রেজাউল হক (হরিণ প্রতীক) এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল (লাঙ্গল প্রতীক)।

২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর ময়মনসিংহ পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন ঘোষণার গেজেট হয়। পরের বছর ৫ মে ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। যদিও সিটির প্রথম ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন টিটু। ওই ভোটে কেবল কাউন্সিলর পদগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এবারের নির্বাচনে টিটুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা এহতেশামুল ও টজু মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকেই সংসদ সদস্য শান্তর সমর্থন চেয়ে আসছিলেন। যদিও এ ব্যাপারে সরাসরি কোনো কথা বলছেন না সংসদ সদস্য।

মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ফারমার্জ আল নূর রাজীব। পরে তিনি ‘সংসদ সদস্যের’ নির্দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক এই সদস্য বলেছিলেন, “কথা ছিল আমরা দুজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে একজন থেকে যাব। তাতে এখানে নির্বাচন জমত। কিন্তু একজন রয়ে গেছেন।

“আমি পরিবর্তনের বৃহত্তর স্বার্থে এবং সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্তর নির্দেশে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।”

এর মধ্যে সংসদ-সদস্যের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে টজুর হাতি প্রতীকের পক্ষে মিছিল ও প্রচারে অংশ নিতে দেখা গেছে।  

তবে সেটি ‘সংসদ সদস্যের নির্দেশে’ নয়; বরং ‘নিজেদের উদ্যোগেই’ মাঠে নেমেছেন বলে জানালেন ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল পাঠান। তিনি বলেন, “মঙ্গলবার থেকে মাঠে নামছি, দেখি কী হয়।”

“আশা করি, সাত দিনের মধ্যে মাঠ পরিবর্তন হয়ে যাবে।”

এ সময় তিনি কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, “আমরা ২০ জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে সাপোর্ট দেব। তারা ইনশাল্লাহ বেরিয়ে আসবে। এটা আমাদের লাগবে।”

দলীয় নেতাকর্মীদের বেশির ভাগ হাতি প্রতীকের সঙ্গে আছে বলে দাবি করেন রাসেল পাঠান।

ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি টিটু এবং একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক শান্তর রাজনৈতিক দ্বৈরথ পুরনো। বিগত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিটি করপোরেশনের মেয়র টিটু তার আপন ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হক শামীমের ট্রাক প্রতীকের পক্ষে ছিলেন। তখন ময়মনসিংহের আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।

সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ছেলে শান্ত আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কায় নির্বাচন করে জয়লাভ করেন। তখন এহতেশামূল আলম ও টজু দুজনই নৌকার পক্ষে কাজ করেন। ফলে দুজনই আশা করছিলেন যে, সংসদ সদস্য তাদের সমর্থন দেবেন।

২৬ ফেব্রুয়ারি সাদেক খান মিল্কী টজুর পক্ষে ১৫ দফা ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। সেখানে লিখিত বক্তব্যেও এই প্রার্থী সংসদ সদস্যের সমর্থন পেয়েছেন বলে দাবি করেন। যদিও এ নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। এ সময় সেখানে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থী অ্যাডভোকেট ফারমার্জ আল নূর রাজীব, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফারুক খান উপস্থিত ছিলেন।     

আনন্দমোহন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক খান বলেন, “শান্তর লোকজন তো টজুর পক্ষে নেমে গেছে। অনুসন্ধান করলেই দেখা যাবে, টজুর পক্ষে যারা নির্বাচন করছে তারা সবাই এমপির লোক। আর আলম সাহেব তো নিজেই বলছেন, তার এমপির সমর্থনের দরকার নাই। টজুর জনপ্রিয়তা নাই তাই তার এমপির সমর্থনের দরকার আছে। তিনি এমপির সমর্থন পাচ্ছেন না বলেই এ কথা বলছেন।”

সংসদ সদস্যের অনুসারীরা চাচ্ছিলেন টিটুর বিরুদ্ধে একক প্রার্থী দিতে, এখন দুজন প্রার্থী আছেন, সেটা বড় বাধা বলে মনে করেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, “যারা বিগত নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন বা নৌকায় ভোট দিয়েছেন তারা কখনই টিটু পক্ষে থাকবেন না।

“তারা টিটুর বিরুদ্ধে নৌকার পক্ষে কাজ করা দুজনের মধ্যে একজনকে বেছে নেবেন। আমার মনে হয় না, তাদের বাছাইয়ে কোনো ভুল হবে।”

মানুষের মধ্যে পরিবর্তনের হাওয়া লাগছে ফলে অসম্ভব কিছুই না বলেও অভিমত দেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতাতেই জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিভেদ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পড়েছে বলেও নগরীতে আলোচনা আছে। এবং সেটি আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কার কথা বলছেন অনেকে।  

এ ব্যাপারে হাতি প্রতীকের প্রার্থী টজু বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত একটা সংসদ নির্বাচন হয়েছে সেখানে অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল। নৌকা ভার্সেস স্বতন্ত্র। এই জায়গায় তো নৌকা নাই। সকলেই স্বতন্ত্র। আমার মনে হয় না এখানে বিভেদ সৃষ্টি হবে ভবিষ্যতে।

এ সময় সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দল যখন সমর্থন করেছে স্বভাবতই প্রচার-প্রচারণা বেড়ে গেছে। কারণ আমি শুধু আজ নয়, চিরকালই নৌকার পক্ষে ছিলাম। মূলত ময়মনসিংহের রাজনীতিতে বিবাদমান গ্রুপে আমি অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের চিরকালই অনুসারী ছিলাম। এখানে আওয়ামী লীগের প্রায় সকল নেতাকর্মীই মতিউর রহমানের অনুসারী এবং তার ছেলে বর্তমান সংসদ সদস্যের অনুসারী।

“আর এই কারণেই সংসদ সদস্য নিজে যেহেতু সমর্থন করতে পারেন না। কিন্তু যেহেতু আমি নৌকার নির্বাচন করেছি সেই কারণে সকল তৃণমূলের নেতাকর্মী আমার সঙ্গে আছে বিধায় গত কয়েকদিনে আমাদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা তুঙ্গে উঠেছে।”

তবে ময়মনসিংহ সদর-৪ আসনের সংসদ সদস্য শান্ত বলেন, “স্থানীয় কোনো নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রকাশ্যে কারো পক্ষে অবস্থান নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে নেতাকর্মীদের প্রতি আমার নির্দেশনা থাকবে, যারা বিগত সময়ে নৌকার পক্ষে কাজ করেছে তাদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য।” 

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম বলেন, “আমি মাঠে নামার পর সংসদ নির্বাচনে নৌকার জোয়ার উঠেছিল। আর সেই জোয়ারে নৌকার মাঝি হয়েছেন মোহিত-উর রহমান শান্ত। অপরিকল্পিত নগরীকে গোছানোর জন্য সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আমি প্রার্থী হয়েছি। মানুষ উন্নয়ন চায়, যা ময়মনসিংহ নগরীতে হয়নি। সাধারণ মানুষের ওপর করের চাপ বাড়লেও তাদের দুর্ভোগ কমেনি।

“প্রত্যাশা ছিল স্থানীয় এমপির সমর্থন পাব। তবে না পেলেও নেতাকর্মী এবং ভোটাররা আমার সঙ্গে রয়েছে। আশা করছি জয় ঘোড়ার পক্ষেই আসবে।”

এহতেশামুলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত মোস্তুফা রায়হান অসীম বলেন, “ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী এহতেশামুল আলম একজন স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ। তাকে সাধারণ ভোটাররা প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। এখানে কে কাকে সমর্থন করল সেটা মুখ্য বিষয় নয়। সাধারণ মানুষের ভোটেই মেয়র নির্বাচিত হবেন। যার পক্ষে সাধারণ মানুষ নাই তার পক্ষে নেতারা থাকলে লাভ কী?”

ঘোড়া প্রতীকের আরেক সমর্থক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “আলম ভাই নৌকার নিবেদিত প্রাণ। গত সংসদ নিবার্চনে তিনি নৌকার পক্ষে ছিলেন বলেই জয় সহজে হয়েছে। সেই হিসেবে নেতার প্রত্যাশা ছিল এমপি শান্তর সমর্থন তার পক্ষে থাকবে।

“কিন্তু এখনও এমপি কাউকে সমর্থন করেননি। আর এমপি অন্য কাউকে সমর্থন করলেও ঘোড়া প্রতীকে কোনো প্রভাব পড়বে না।”

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র টিটু বলেন, “দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের কাছে আমার একটা অবস্থান রয়েছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করে চলেছি। আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবের কারণে লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হয়নি।"

তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচন ও সিটি নির্বাচন দুটি ভিন্ন মাত্রার। এক্ষেত্রে সংসদ নির্বাচনের প্রভাব খুব একটা পড়বে না। উন্নয়নের স্বার্থে মানুষ আমাকেই বেছে নেবে।”

সাবেক এই মেয়রের সমর্থক আবু বকর বলেন, “৩৩টি ওয়ার্ডে মেয়র টিটুর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে রয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থী মিলে যে ভোট পাবে, আশা রাখছি, টেবিল ঘড়ি তাদের চেয়ে বেশি ভোট পাবে।”

টেবিল ঘড়ির আরেক সমর্থক হোসেন আলী বলেন, “এখন পর্যন্ত টিটুর ধারেকাছেও কোনো প্রার্থী নেই। টিটুর সবচেয়ে বড় শক্তি জনপ্রিয়তা। তিনি সব মানুষের প্রিয় নেতা। দ্বিতীয় তৃতীয় হওয়া নিয়ে টজু এবং আলমের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। আর জনগণের রায় টিটুর পক্ষেই আসবে।”

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রব এবারের নির্বাচনে টিটুর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলছিলেন, “সংসদ সদস্য শান্ত তাদের একজনকে প্রার্থী করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পারেননি; দুজন রয়ে গেছেন। এর ফলে নৌকা মার্কা নয়; শান্ত-সমর্থকদের ভোট দুই ভাগ হয়ে যাবে।”

তবে সাবেক ধর্মমন্ত্রী মতিউরের সব অনুসারীর ভোট টিটু-বিরোধীরা পাবেন এমনটা মনে করেন না মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক এই জেলা কমান্ডার।

তিনি বলেন, “অধ্যক্ষ মতিউর রহমানই তো পৌরসভার মেয়র হওয়ার সময় টিটুকে সমর্থন দিয়েছিলেন। তখন মতিউর রহমানের অনুসারী মাসকান্দার কয়েকবারের কাউন্সিলর ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম তারাও চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। স্যার কিন্তু টিটুকে তখন সমর্থন করেছিলেন।”

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলসহ কমিটির বেশিরভাগ এখন টিটুর পক্ষে আছে দাবি করে আব্দুর রব বলেন, “টিটু এই শহরের জননেতা। তার মত পরিচিতি অন্যদের নেই। তিনিই পাস করবেন, এতে সন্দেহ নেই।”

এবার ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩২ পুরুষ, ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫৫ নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯ জন। তারা আগামী ৯ মার্চ ইভিএমে ১২৮ কেন্দ্রে ভোট দেবেন।

মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী ছাড়াও নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ১৪৯ এবং ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী আছেন ৬৯ জন।

নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ফরহাদ আলম বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ায় কাউন্সিলর পদে ৩২ ওয়ার্ডে শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন

ময়মনসিংহ সিটি ভোট: যানজট নিরসনে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করতে চান আলম

ময়মনসিংহ সিটি ভোট: কারও প্রচারে গতি, কেউ পিছিয়ে পড়ছেন

ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন: বিএনপি ভোটে নেই, তবু তারা আশা নিয়ে মাঠে

ইভিএম নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, ভোটার উপস্থিতি আসল বিষয়: ইসি আলমগীর

ময়মনসিংহ সিটি ভোট: ভোটারদের সাড়া কতটা?

ময়মনসিংহ সিটি ভোট: পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে খাদ্য কর্মকর্তা

ফের সুযোগ চান টিটু, পরিবর্তনের ডাক আলম-টজুর

ময়মনসিংহ সিটি ভোট: টিটুর প্রতিদ্বন্দ্বী কে?

ময়মনসিংহ সিটি ভোট: আধুনিক নগরী গড়তে ১৫ দফা টজু’র

ময়মনসিংহ সিটি ভোট: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত একজন কাউন্সিলর

ময়মনসিংহ সিটি ভোট: প্রতীক পেয়ে প্রচারে প্রার্থী

ময়মনসিংহ সিটিতে আওয়ামী লীগ নেতার মনোনয়ন বাতিল

ময়মনসিংহ সিটি ভোট: ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ সরলেন রাজীব, সমর্থন নিয়ে ‘ধোঁয়াশা’

নগরীর সমস্যা নিয়ে পোস্টার: গ্রাফিক ডিজাইনার শামীম কারাগারে

ময়মনসিংহ সিটিতে আওয়ামী লীগ নেতার মনোনয়ন বাতিল

ময়মনসিংহে সিটি ভোটের হাওয়া, প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ

ময়মনসিংহে মেয়র পদে ভোটে আওয়ামী লীগের ছয়জন, বিএনপি নেই