সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা করা ২৩৩ জনের মধ্যে ৩৬ জনের বাতিল করেছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা।
Published : 15 Feb 2024, 07:26 PM
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে এক আওয়ামী লীগ নেতার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ পদে এখন ছয়জন টিকে আছেন।
অপরদিকে সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা করা ২৩৩ জনের মধ্যে ৩৬ জনের বাতিল করা হয়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী।
মনোনয়নপত্র যাছাই-বাচাইয়ের দিনে বৃহস্পতিবার স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও আনন্দমোহন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি অধ্যাপক মো. গোলাম ফেরদৌস জিলুর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।
সকাল থেকে নগরীর টাউন হল তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে মনোনয়নপত্র যাছাই-বাচাই শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
ময়মনসিংহ অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, মেয়র পদে একজনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। ছয়জনের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। এ ছাড়া সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ জনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
“স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের মোট ভোটারের এক শতাংশের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমা দিতে হয়। মেয়র পদপ্রার্থী গোলাম ফেরদৌস যে তালিকা দিয়েছেন তাতে গড়মিল থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।”
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে তারা শুক্র থেকে রোববার পর্যন্ত তিনদিন বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিল করার সুযোগ পাবেন বলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান।
মেয়র পদে যাদের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে, তাদের মধ্যে পাঁচজন আওয়ামী লীগ নেতা এবং বাকি একজন জাতীয় পার্টির।
মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে- সদ্য সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ এহতেশামূল আলম, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু, নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট ফারমার্জ আল নূর রাজীব, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ড. মো. রেজাউল হক এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল।
ময়মনসিংহে মেয়র পদে ভোটে আওয়ামী লীগের ছয়জন, বিএনপি নেই
৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মেয়র পদে সাতজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬৪ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন
আপিলের সময়সীমা ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি; আপিল নিষ্পত্তি ১৯-২০ ফেব্রুয়ারি
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ ফেব্রুয়ারি
প্রতীক বরাদ্দ ২৩ ফেব্রুয়ারি
৯ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ সিটিতে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে।
১১৩ বছরের পুরনো ময়মনসিংহ পৌরসভাকে ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর সিটি করপোরেশন হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ২০১৯ সালের ৫ মে প্রথম সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ হয়।
এ ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন পৌরসভার সাবেক মেয়র ইকরামুল হক টিটু। তখন কেবল সাধারণ কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ভোট হয়।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯০ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭১ জন পুরুষ এবং ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১০ জন নারী। এ ছাড়া হিজড়া ভোটার নয়জন। প্রথমবারের সিটি ভোটে কেন্দ্র ছিল ১২৭টি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ‘কেন্দ্রে ভোটারদের টানতে এবং দলীয় বিভেদ দূর করতে’ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে কাউকে দলীয় প্রতীক না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
এই অবস্থায় দ্বিধা-বিভক্ত ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগে মেয়র পদের উপনির্বাচনে কারা কারা প্রার্থী হচ্ছেন এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আলোচনা চলছিল।
তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই বিএনপি জানিয়েছে, এই সরকারের অধীনে কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেবে না দলটি। তার প্রতিফলন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদে পড়লেও অনেক ওয়ার্ডেই বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।