পাড়া-মহল্লায় স্থাপন করা হয়েছে নির্বাচনি প্রচারকেন্দ্র; সেখানে প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ভিড় লেগে থাকছে সারাক্ষণ।
Published : 24 Feb 2024, 07:58 PM
মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারে সরগরম ময়মনিসংহ সিটি করপোরেশন। প্রচারের দ্বিতীয় দিনে প্রার্থীরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি শহরের ভোটারদের মধ্যে চলেছে ভোট নিয়ে নানা আলোচনা আর জল্পনা-কল্পনা।
তবে এর মধ্যেও কাউন্সিলর প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ নজরে পড়ার মত। সকাল থেকেই তারা পরিবারের সদস্য-সমর্থকদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। চষে বেড়াচ্ছেন বাসা-বাড়ি, দোকানপাট, মার্কেট, কাঁচাবাজার। এলাকার উন্নয়নের নানা অঙ্গীকার করছেন।
গণসংযোগ, উঠান বৈঠকসহ নানাভাবে ভোটারদের কাছে টানতে কাজ করছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। ভোটের আমেজ পড়তে শুরু করেছে শহরের অলিগলিতে। পাট বা প্লাস্টিকের রশিতে লাগানো পোস্টার ঝুলছে গলিতে-গলিতে। পাড়া-মহল্লায় স্থাপন করা হয়েছে নির্বাচনি প্রচার। সেখানে প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ভিড় লেগে থাকছে সারাক্ষণ।
মেয়র পদে ময়মনসিংহ সিটির সদ্য সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু (দেওয়াল ঘড়ি), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলম (ঘোড়া), শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কী টজু (হাতি), কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ রেজাউল হক (হরিণ) এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে লড়াই করছেন।
ইকরামুল হক টিটু শনিবার নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকার অনুভব কমিউনিটি সেন্টারে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সমাবেশ ও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালান। বিকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দোকানপাট, পাড়া-মহল্লায় পোস্টার বিতরণ করেন।
দেওয়াল ঘড়িকে উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে টিটু বলেন, “উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ করতে নগরবাসী আবারও এ প্রতীকে আস্থা রাখবে। বিগত পাঁচ বছরে শতভাগ উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি।
“সাধারণ মানুষ আমার প্রতি তাদের সমর্থন দিলে চলমান উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করতে পারব। সাধারণ জনতার পাশাপাশি নেতাকর্মীরাও আমার সঙ্গে রয়েছে। আশা রাখছি, জয় সহজেই আসবে।”
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলম নগরীর কাঁচিঝুলিসহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রচার চালিয়েছেন।
এ সময় ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী বলেন, “মানুষকে সুন্দর ও স্মার্ট শহর উপহার দিতেই প্রার্থী হয়েছি। প্রতীক হাতে পেয়েই মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছি। আমার পক্ষে সাধারণ মানুষের বেশ সাড়া রয়েছে। কারণ বিগত সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। আমি এই শহরে পরিবর্তন ঘটাতে চাই।”
সাদেক খান মিল্কী টজু নগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে দুপুরে প্রচার চালান। এ সময় তিনি বলেন, “নগরীর মানুষ আকাশ দেখতে চায়, পরিচ্ছন্ন জায়গায় বসবাস করতে চায়, যানজট সমস্যার নিরসন চায়।
“তাই তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি প্রার্থী হয়েছি। পছন্দের প্রতীক হাতি পেয়েছি। মানুষ পরিবর্তনের লক্ষ্যে হাতি প্রতীকেই আস্থা রাখবে।”
দুপুরে নগরীর মৃত্যুঞ্জয় স্কুল রোডে প্রচার চালান জাতীয় পার্টির প্রার্থী শহিদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল। নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি প্রচারপত্র বিতরণ করেন।
এ সময় লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী বলেন, “ময়মনসিংহের মাটি বেগম রওশন এরশাদের ঘাঁটি। বেশ কয়েকবার রওশন এরশাদ সদরের সংসদ সদস্য ছিলেন। এই হিসেবে এখানে জাতীয় পার্টির একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে।
“লাঙ্গলের পক্ষে ভোটারদের ব্যাপক সাড়া রয়েছে। জয়ী হলে অপরিকল্পিত নগরীকে ঢেলে সাজাবো।”
এ সিটি নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩২ পুরুষ, ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫৫ নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯ জন। তারা ৯ মার্চ ইভিএমে ১২৮ কেন্দ্রে ভোট দেবেন।
মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী ছাড়াও নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ এবং ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী আছেন ৬৯ জন।
নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিল নির্বাচিত হয়েছেন ফরহাদ আলম।
আরও পড়ুন:
ময়মনসিংহ সিটি ভোট: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত একজন কাউন্সিলর
ময়মনসিংহ সিটি ভোট: প্রতীক পেয়ে প্রচারে প্রার্থী
ময়মনসিংহ সিটিতে আওয়ামী লীগ নেতার মনোনয়ন বাতিল
ময়মনসিংহ সিটি ভোট: ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ সরলেন রাজীব, সমর্থন নিয়ে ‘ধোঁয়াশা’
নগরীর সমস্যা নিয়ে পোস্টার: গ্রাফিক ডিজাইনার শামীম কারাগারে
ময়মনসিংহ সিটিতে আওয়ামী লীগ নেতার মনোনয়ন বাতিল