ওই কর্মকর্তা জামালপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মরত আছেন।
Published : 27 Feb 2024, 07:22 PM
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
জামালপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিন্নাত শামসুন্নাহার রুমা পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে নগরীর বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।
বিষয়টিকে এই খাদ্য কর্মকর্তা সহজভাবে নিলেও নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
প্রতীক বরাদ্দের পরপর জমজমাট হয়ে উঠেছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। ৩৩টি ওয়ার্ডে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা যাচ্ছেন ভোটারদের দারে দারে; দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।
এরইমধ্যে নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ঠেলাগাড়ি প্রতীকের শরাফ উদ্দিনের পক্ষে প্রচারে অংশ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন খাদ্য কর্মকর্তা জিন্নাত শামসুন্নাহার।
২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর কাউন্সিলর প্রার্থী শরাফ উদ্দিন ও মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাদেকুল হক খান মিল্কী টজুর পক্ষে রুমার প্রচারের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে; যা নিয়ে চলছে সমালোচনা।
সাধারণ ভোটাররা বলছেন, কোনো সরকারি কর্মকর্তা প্রকাশ্যে কারো পক্ষে ভোট চাইতে এবারি প্রথম দেখেছেন তারা।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোনিয়া আক্তার বলেন, “রুমা ভাবি এই এলাকার সকলের পরিচিত। তার বাসা আমাদের বাসার পাশেই। তিনি কাউন্সিলর প্রার্থী শরাফ উদ্দিনের পক্ষে ভোট চাইছেন।
“এলাকায় এসে প্রচারপত্র বিলির পাশাপাশি ঠেলাগাড়ি প্রতীকে ভোট দিতে বলেছেন। শুনেছি তিনি সরকারি চাকরি করেন। তবে আমাদের এলাকার উন্নয়নে যে কাজ করবে আমরা তাকেই ভোট দিব।”
একই এলাকার আরেক ভোটার জিন্নাত আরা বলেন, “১৬ নম্বর ওয়ার্ডে শরাফ উদ্দিন এবং আব্দুল মান্নানের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এই এলাকায় উভয়ের কর্মী সমর্থক রয়েছেন। রুমা ঠেলাগাড়ি প্রতীকে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।”
জামালপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিন্নাত শামসুন্নাহার রুমা বলেন, “আমার পছন্দের লোক আমার আত্মীয়ও হতে পারে, তাই তার জন্য কারো কাছে ভোট চাইতেই পারি। আমার চাকরি ঠিক রেখে সবকিছু করছি।
“আমি টজু ভাইকে পছন্দ করছি, শরাফ ভাইকে পছন্দ করছি বা তাদের পক্ষে প্রচারণা করছি এ বিষয়ে যা পারেন লেখেন। আমার বক্তব্য রেকর্ড করে ভাইরাল করেন। তাতে আমার কিছু যায় আসে না।”
ময়মনসিংহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, “কোনো সরকারি কর্মকর্তা কারও পক্ষ নিয়ে নির্বাচনে প্রচারণায় নামতে পারবেন না। সে বিষয়ে সুস্পষ্ট আইন রয়েছে। যদি এ বিষয়ে অভিযোগ পাই তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ময়মনসিংহের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নাঈম মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, “সরকারি চাকরি করে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে এলাকার কেউ প্রার্থী হলে তার পক্ষে সমর্থন থাকতে পারে। প্রকাশ্যে প্রচারে নামা যাবে না।
“এ বিষয়টি আপনার কাছ থেকে শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সদ্য সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু (দেওয়াল ঘড়ি), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলম (ঘোড়া), শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কী টজু (হাতি), কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ রেজাউল হক (হরিণ) এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে লড়াই করছেন।
এ ছাড়া নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন এবং ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরমধ্যে নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিল পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ফরহাদ আলম।
ময়মনসিংহ সিটিতে মোট ভোটার তিন লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৬৩ হাজার ৮৩২ পুরুষ এবং এক লাখ ৭২ হাজার ৬৫৫ নারী। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯ জন।
আগামী ৯ মার্চ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ১২৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:
ময়মনসিংহ সিটি ভোট: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত একজন কাউন্সিলর
ময়মনসিংহ সিটি ভোট: প্রতীক পেয়ে প্রচারে প্রার্থী