আমরা বাচ্চারা তখন কালা গাড়ির ভয়ে স্কুলে যেতে ভয় পেতাম। ঘর থেকে সবসময় সতর্ক করে দেওয়া হতো যেন বাসে বা রাস্তায় কেউ কিছু দিলে না খাই। কালো গ্লাসওয়ালা গাড়ি হঠাৎ থামতে দেখলে দৌড় দিতে হবে।
Published : 20 Mar 2018, 10:26 AM
কালা গাড়ি বাচ্চা ধরে নেয়। বিক্রি করে দেয়। কেটে নাকি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, কিডনি বিক্রি করে দেয়। এলাকায় এরকম ঘটনা তখন প্রায়ই শোনা যেত। একবার তো এক বাচ্চাকে কালা গাড়ি ভেঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছিলো। নদীতে ফেরি চালু থাকায় তা সম্ভব হয়েছিল। তখন যদি নদীতে সেতু থাকতো, গাড়ি থামতো না।
সে যুগ গেছে। এখন আর এলাকায় তেমনটা শোনা যায় না। কালা গাড়ি এখন আর বাচ্চা ধরে না। এখন বুড়ো ধরে। জলজ্যান্ত আস্ত মানুষ দিনে-দুপুরে ধরে নিয়ে যায়। মেরে কেটে বস্তাবন্দি করে নদীতে ফেলে দেয়। লাশ ভেসে উঠে নদীতে। তারপর কালো গ্লাসওয়ালা গাড়ি নিষিদ্ধ হয় দেশে।
এই হলো ইউরোপের পর্যটক জনপ্রিয় বড় শহরগুলোর অবস্থা। এসব দেখেও কেউ দেখে না। ফুলওয়ালারাও ফুল বিক্রি ছাড়ে না। ব্যবসা তো মন্দ নয়। একটি ফুলের মূল্য এক থেকে পাঁচ ইউরো পর্যন্ত হয় থাকে। বর্তমান বাজার দরে এক ইউরো সমান ১০২ টাকা। দশটি ফুল বিক্রি করতে পারলে আয় হবে ১ হাজার ২০ টাকা। বা অনেক সময় তার চেয়েও বেশি। প্রতিটি পাঁচ ইউরো করে গুণ করলে যা হবে আরকি।
জার্মানির একটি ছোট শহরে থাকি। আগের কোনো গল্পে বলেছি হয়তো, এ শহরে সবজি, কাঁচা মরিচের বড়ই অভাব। নিজেই চাষ করে ফলিয়ে খাই। গেল ভালোবাসা দিবসে এ শহরে বসেছিলো শীতকালীন অস্থায়ী মার্কেট। সেই মার্কেটে ফুল নিয়ে এক ফুলওয়ালা হাজির। ভালোবাসা দিবস, যাকেই সামনে পাচ্ছেন তাকেই হাতে ফুল ধরিয়ে দিচ্ছেন।
পুলিজাই এসে ব্যাগ তল্লাশি করলে ব্যাগের ভেতর বাঁধাই করা আরও কয়েকখানা ছবি পান। জার্মান ভাষায় তরজমা করা অনেক রোগের নাম উল্লেখ করা কিছু কাগজপত্র পান। এক ছবির সঙ্গে অন্য ছবির কোনো মিল নাই।
বোঝেন এবার, দেশে তার আরও কতজনের কিডনি খারাপ! পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় লোকটিকে গাঢ় বাদামী রঙের বলে বিদেশি ইঙ্গিত করা হয়েছে। তবে লোকটির নিজ দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি
এই লেখকের আরও লেখা
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |