মঞ্চের দাবির ব্যাপারে মঙ্গলবারের সিন্ডিকেট সভা থেকে স্পষ্ট ঘোষণা চান আন্দোলনকারীরা।
Published : 19 Feb 2024, 11:23 PM
পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল করেছে 'নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ'।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে এই মশাল মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবন হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
চলমান আন্দোলনের ১৬তম দিনে এই কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, “আমরা দীর্ঘ ১৬ দিন ধরে নিপীড়ক ও তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছি৷ কিন্তু আমরা এখনও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিপীড়কদের বিরুদ্ধে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখিনি৷
“মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা রয়েছে। সেখানে যদি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আসা শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাব।”
২২ ফেব্রুয়ারি ভর্তি পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত হলে সেই দায় প্রশাসনের নিতে হবে বলে জানান তিনি।
সমাবেশে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, “প্রশাসনের নাকের ডগায় থাকার পরেও নিপীড়কদের বিচার হচ্ছে না। তারা রাজার মতো হলগুলোতে অবস্থান করছে এবং বহাল তবিয়তে নিজেদের রাজত্ব কায়েম করছে।”
মঞ্চের সদস্যসচিব মাহফুজুল ইসলাম মেঘ বলেন, “মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করা, যৌন নিপীড়ক শিক্ষক জনির বিরুদ্ধে বিচার নিশ্চিত করাসহ সব দাবি মেনে নিতে হবে। সিন্ডিকেটে আমরা এ বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা চাই, নয়তো আমরা ভর্তি পরীক্ষা আটকাতে বাধ্য হব।”
৩ ফেব্রুয়ারি রাতে আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে কৌশলে হলের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, তার পরিচিত মামুনুর রশীদ মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে।
পরে ভুক্তভোগীর স্বামী ছয়জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন’ আইনে মামলা করেন।
তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো- ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে; নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তি করাসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এ ছাড়া নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত করতে হবে এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে হবে; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে, জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণাপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন:
জাবিতে ধর্ষণ: তৃতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
জাবিতে ধর্ষণ: আচার্যকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান
জাবিতে ধর্ষণ: মশাল মিছিল শেষে উপাচার্য ও শিক্ষার্থীদের বিতণ্ডা
জাবিতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সংহতি সমাবেশে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও
জাবিতে ধর্ষণ: রিমান্ড শেষে কারাগারে ৪ আসামি
জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণ: ঘটনার যে বিবরণ দিল র্যাব
জাহাঙ্গীরনগরে ‘ধর্ষণ’: বাকি দুই আসামিও গ্রেপ্তার
জাবিতে ধর্ষণ: দিনভর বিক্ষোভে নামল আরও অনেকেই
জাবি প্রশাসনের ব্যর্থতায় যৌন নিপীড়ন বন্ধ হয়নি: ইউজিসি
জাবিতে ধর্ষণ: তৃতীয় দিনেও উত্তাল ক্যাম্পাস
আগের ঘটনায় ব্যবস্থা না নেওয়ায় জাবিতে ফের ধর্ষণ: ১৮ নাগরিক
জাবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদের নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’
‘ধর্ষকের জন্ম বিচারহীনতায়’: জাহাঙ্গীরনগরে ক্ষোভ
ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে মশাল মিছিল
জাবিতে ধর্ষণ: জড়িতদের সনদ স্থগিত, ক্যাম্পাসে 'অবাঞ্ছিত'
ধর্ষণ: জাহাঙ্গীরনগরের চার শিক্ষার্থী ৩ দিনের রিমান্ডে
ধর্ষণ: বিক্ষোভে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর
জাবিতে ধর্ষণ: ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজ ও মামুনকে সহায়তা করেন চারজন
জাবিতে স্বামীকে আটকে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার