গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতাসহ বাকিদের সাত দিনের রিমান্ডে চেয়েছিল পুলিশ।
Published : 04 Feb 2024, 06:14 PM
গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ চার শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
রোববার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাবেয়া বেগম শুনানি শেষে তাদের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমোদন দেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে শনিবার রাতে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে জঙ্গলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মিজানুর রহমান সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন।
মামলার ছয় আসামির মধ্যে চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, যাদের জিজ্ঞাসাবাদে তিন দিনের রিমান্ডে পেল পুলিশ। তারা হলেন- মোস্তাফিজুর রহমান, সাব্বির হাসান, সাগর সিদ্দীকি এবং হাসানুজ্জামান।
বাকি দুই আসামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার আমন্ত গ্রামের মুরাদ হোসেন এবং একই গ্রামের বাসিন্দা মো. মামুনুর রহমান মামুন পলাতক রয়েছেন।
গ্রেপ্তারদের এদিন বিকাল ৫টার দিকে আদালতে হাজির করে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
শুনানিতে আইনজীবী খালিদ হোসেন তাদের রিমান্ড আবেদন বাতিল চান। রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল।
গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাবির মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে হলের পাশে জঙ্গলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর রাত থেকে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়েছে পুরো ক্যাম্পাস।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এখনও চলছে, তারা তিন দফা দাবি দিয়েছেন।
মামলায় মোস্তাফিজ ও মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি চারজনের বিরুদ্ধে মারধর ও আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে রোববার দুপুরে আশুলিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলনে জানান ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফি।
পুলিশ ভোরের দিকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও জাবি শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার বালিয়াহাটি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
গ্রেপ্তার বাকি তিনজনও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে সাব্বির হাসান সাগরের বাড়ি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার পারভবানিপুর গ্রামে, সাগর সিদ্দীকির বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী গ্রামে এবং হাসানুজ্জামানের বাড়ি রংপুরের কোতোয়ালি সদর থানার গন্দাদাশ গ্রাম।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি বলেন, ভুক্তভোগীর স্বামী রাতেই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন।
১৯ বছর বয়সী ওই তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামীকে ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে স্ত্রীকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে কৌশলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন আসামি মোস্তাফিজ ও মামুনুর রশীদ মামুন। তাদেরকে নানাভাবে সহায়তা করেন বাকি চারজন।
জাবিতে ধর্ষণ: ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজ ও মামুনকে সহায়তা করেন চারজন