পরিপত্রে বলা হয়েছে, ঠিকাদার/সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
Published : 16 Apr 2025, 08:56 PM
সরকারিভাবে বিদেশ সফরে কর্মকর্তাদের স্ত্রী, সন্তান বা স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবকে এ বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার স্বাক্ষরে ২৩ মার্চে এ বিষয়ে পরিপত্র জারি হয়, যা বুধবার প্রকাশ্যে আসে।
বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের নতুন দিক নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্রে বলা হয়েছে, ঠিকাদার/সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে। জরুরি কারণ ছাড়া উপদেষ্টা বা সিনিয়র সচিব/সচিব, একান্ত সচিব/সহকারী একান্ত সচিবদের সহযাত্রী হিসাবে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
সরকারিভাবে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা তাদের স্ত্রী/স্বামী বা সন্তানদের সফরসঙ্গী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন না।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের জারি করা পরিপত্রের ধারায় নির্দেশিত বিষয়গুলো অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
গত বছরের ৯ ডিসেম্বর সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করাসহ কয়েকটি বিষয় নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করেছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছিল-
১. সাধারণভাবে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হবে।
২. বছরের সম্ভাব্য বিদেশ ভ্রমণের একটা তালিকা জানিয়ে রাখতে হবে।
৩. বিদেশ ভ্রমণের জন্য মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ডেটাবেজ তৈরি করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এর কাঠামো তৈরি করে দেবে এবং এর তথ্য সংরক্ষণ করবে।
৪. সকল স্তরের সরকারি কর্মকর্তারা একাধারে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করবেন।
৫. মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ সাধারণভাবে পরিহার করবেন। তবে জাতীয় স্বার্থে অনুরূপ ভ্রমণ একান্ত অপরিহার্য হলে তেমন অপরিহার্যতার বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
৬. মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অধীনস্থ অধিদপ্তর বা সংস্থা প্রধানরা ‘একান্ত অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থ’ ছাড়া একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণে যাবেন না।
৭. বিদেশে অনুষ্ঠেয় সেমিনার বা ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের জন্য উপদেষ্টা ও সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণের প্রস্তাবের ক্ষেত্রে আমন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং অন্যান্য অংশগ্রহণকারী দেশ থেকে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন, সেই তথ্য যুক্ত করে দিতে হবে।
৮. বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব পেশের সময় ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রস্তাবিত কর্মকর্তার ওই কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতা ও উপযোগিতার বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে।
৯. কেনা-কাটা, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন কিংবা ফ্যাক্টরি একসেপ্টেন্স টেস্ট ইত্যাদির ক্ষেত্রে কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ পাঠানোর কথা বিবেচনা করতে হবে।
১০. সরকারি অর্থে কম প্রয়োজনীয় ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
১১. সকল স্তরের সরকারি কর্মকর্তা বিদেশে বিনোদন ভ্রমণ পরিহার করবেন।
১২. সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষণ ছুটিতে যাওয়া পরিহার করবেন।
১৩. বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত কর্মকর্তার পূর্ববর্তী এক বছরের বিদেশ ভ্রমণের বিস্তারিত সংযুক্ত করতে হবে।
এর আগেও ডলার সংকটের কারণে বিদেশ ভ্রমণ সীমিত করে নির্দেশনা জারি করেছিল সরকার।