১৭ এপ্রিল প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের নাম সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এই সরকারের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়।
Published : 17 Apr 2025, 12:22 AM
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে শব্দ সৈনিকদের ভূমিকা অনেক৷ লেখার শুরুটা তাই তাদের নিয়ে, আরও স্পষ্ট করে বললে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নিয়ে৷
একাত্তরে তখনও সশস্ত্র সংগঠন তৈরি হয়নি৷ তার আগেই শব্দ সৈনিকদের দশজনের একটি দল ২৬ মার্চ স্বতঃস্ফূর্তভাবে চট্টগ্রামের কালুরঘাট ট্রান্সমিটার ভবনে গিয়ে স্বাধীন বাংলা (বিপ্লবী) বেতার কেন্দ্র গড়ে তোলেন৷ ৩০ মার্চ পর্যন্ত ওই কেন্দ্রের প্রচার চলে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে৷ ওইদিনই ট্রান্সমিটার ভবনে পাকিস্তানি বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করা হয়৷ ১ কিলোওয়াট ট্রান্সমিটারটি ডিসমেন্টাল করে তারা চলে যান পটিয়ায়৷ ৩ এপ্রিল থেকে স্বাধীন বাংলা (বিপ্লবী) বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান আবারও শুরু হয় রামগড় সীমান্তবর্তী মুক্ত অঞ্চলে, যা চলে ২৫ মে ১৯৭১ পর্যন্ত৷ পরে ভারত সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ৫০ কিলোওয়াট ক্ষমতার একটি ট্রান্সমিটারে কলকাতার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে আরও ব্যাপকভাবে এর কার্যক্রম শুরু হয়৷ ওইসময় ‘বিপ্লবী’ শব্দটি বাদ দিয়ে নাম করা হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র৷
এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত দশজন শব্দসৈনিকের নাম রয়েছে বেলাল মোহাম্মদ রচিত ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ গ্রন্থে৷ ওই গ্রন্থের বিবরণ অনুযায়ী অনুষ্ঠান বিভাগে ছিলেন বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কাসেম সন্দ্বীপ, আবদুল্লাহ-আল-ফারুক, মুস্তফা আনোয়ার ও কাজী হাবিবউদ্দীন আহমদ৷ আর প্রকৌশল বিভাগে সৈয়দ আব্দুর শাকের, রাশেদুল হোসেন, আমিনুর রহমান, শারফুজ্জামান ও রেজাউল করিম চৌধুরী ছিলেন৷ এছাড়াও নৈমিক্তিকভাবে অনুষ্ঠান প্রচার বা ঘোষণা এবং নেপথ্যে উৎসাহদাতা হিসেবে যুক্ত ছিলেন অনেকেই৷
সীমিত জনবল আর সামর্থ্যের মধ্যেও যুদ্ধের দিনগুলোতে টানা সম্প্রচার চালু রেখেছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতারের শব্দসৈনিকেরা, যা দেশের আপামর জনসাধারণকে স্বাধীনতার পথে উৎসাহ, সাহস ও আশা জুগিয়েছে৷ একাত্তরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিকদের ভূমিকা তাই শ্রদ্ধার সঙ্গে চিরস্মরণীয়৷
এদিকে একাত্তরের এপ্রিলের শুরুতেই দেশের নানা অংশে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশের বাঙালি সদস্য ও ছাত্রজনতা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে শুরু করেন৷
ওইসময় প্রতিরোধের ধরন কেমন ছিল তা জানতে জীবদ্দশায় মুখোমুখি হতে পেরেছিলাম বীর মুক্তিযোদ্ধা এ জেড এম আমিনুল ইসলাম চৌধুরীর৷ সিরাজগঞ্জের তৎকালীন ছাত্রনেতা তিনি৷ তাদের উদ্যোগেই ওই জেলায় প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘সিরাজগঞ্জের তৎকালীন এসডিও এ কে এম সামসুদ্দিন সাহেব পুলিশের যত রাইফেল ও গুলি ছিল তা আমাদেরকে সরবরাহ করেন৷ আমরা তখন ঈশ্বরদী থেকে সিরাজগঞ্জ আসার একমাত্র রেলপথে প্রতিরোধ গড়ি, উল্লাপাড়ায় ঘাটিনা নামক রেলব্রিজে৷ কয়েক হাজার মানুষ লাঙ্গল, ফালা, লাঠি, বল্লম, সুরকি, জোয়াল, মোটকথা ঘরে যা ছিল তা নিয়েই সেখানে অবস্থান নেয়৷
১০ এপ্রিল ১৯৭১৷ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঈশ্বরদী থেকে ট্রেন নিয়ে আসে৷ ট্রেনের সামনে-পেছনে ইঞ্জিন, মাঝখানে ওয়াগন৷ ওয়াগনের দরজায় বালির বস্তা দিয়ে বাঙ্কার করা৷ সেখানে পজিশন নিয়ে থাকে সেনারা৷ কিন্তু ঘাটিনা ব্রিজের কাছে আসতেই ওরা বাধার মুখে পড়ে৷ গ্রামের মানুষ আগেই রেললাইন তুলে ফেলে বিভিন্ন জায়গায়৷ ফলে ওরা ঢুকতে পারে না৷
১৭ এপ্রিল ওরা ঈশ্বরদী থেকে ননবেঙ্গলি বিহারিদেরও সঙ্গে নিয়ে আসে৷ বিহারিরা নেমে রেললাইন মেরামত করে দিলে তারা ট্রেন নিয়ে সামনে এগোয়৷ কিন্তু আবারও প্রতিরোধের মুখে পিছু হটে৷ সেনারা তখন ক্ষিপ্ত হয়ে মর্টারসহ হেভি অস্ত্র নিয়ে ঢোকে৷ অনবরত গুলি চালাই আমরাও৷ কিন্তু গোলাবারুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় টিকতে পারি না৷ ওরা তখন সিরাজগঞ্জে ঢুকে প্রথম ওয়াপদা রেস্ট হাউজে এবং পরে বিএ কলেজ, পিডাব্লিউডির রেস্ট হাউজ, যমুনা পাড়ের বিএল সরকারি স্কুলে ক্যাম্প করে৷ শহরের বাইরে ভাটপিয়ারী ও শৈলাবাড়ি ছাড়াও থানায় থানায় গড়ে ক্যাম্প৷ এরপরই গ্রামে গ্রামে ঢুকে মানুষের বাড়িতে হামলা করে ঘরগুলো জ্বালিয়ে দিতে থাকে৷”
জেলা শহরগুলো দখলে নিয়েই পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি নিধনে নামে৷ কুষ্টিয়া, লালমনিরহাট, যশোর, রাজশাহী, সৈয়দপুরসহ অনেক জেলায় বিহারিরাও বাঙালি নিধনে অংশ নেয়৷ একাত্তরে বাঙালিদের ওপর বিহারিদের নৃশংসতার মাত্রাটি অনুমান করা যায় নানা ঘটনায়৷ তেমনি একটি ঘটনার কথা জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ হোসেন৷ রেলওয়েতে বাবার চাকরির সুবাদেই তারা থাকতেন সৈয়দপুরে, আতিয়ার কলোনির এল-৭৬-বি নম্বর কোয়ার্টারে৷ তার মা সুফিয়া খাতুনকে সেখানেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়৷
ওই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হন মুরাদ হোসেন৷ হৃদয়বিদারক সেই স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিহারিদের নেতা ছিল মতিন হাশমি, সৈয়দপুর কলেজের প্রিন্সিপাল। পুরো বিহারি এলাকার নেতৃত্ব দিতেন। আমি তখন লুকিয়ে ছিলাম গ্রামের দিকে৷ তারিখটা ১৪ এপ্রিল, ১৯৭১৷ মেইন রোডের পাশেই ছিল আমাদের কোয়ার্টার৷ মার্চের শুরুতেই ছাদের ওপর একটা বাংলাদেশের পতাকা ও একটা কালো পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছিলাম৷ বাংলাদেশের পতাকা উড়তে দেখে ওরা ক্ষিপ্ত হয়৷
বিহারিরা প্রথম এসে আম্মাকে বলে, ‘উসকো উতার দো’। আম্মা বলেন, ‘আমার ছেলে টাঙিয়েছে৷ এটা আমি নামাতে পারবে না৷’ ওরা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানি সেনাদের ভয় দেখিয়ে আবারও পতাকা নামাতে বলে৷ কিন্তু এবারও আম্মা অস্বীকৃতি জানায়৷ রাগ হয়ে ওরা গালাগালি করে চলে যায়৷
কিছুক্ষণ পরেই সেনাসহ বিহারিদের একটি সশস্ত্র দল এসে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে৷ আম্মা রেহালে রেখে কোরান শরিফ পড়ছিলেন৷ সামনের দরজা ভেঙে ওরা ঘরের ভেতরে যখন ঢোকে, তখন তিনি কোরান শরিফ বুকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকেন৷ আম্মাকে ওরা কোপ দিয়ে দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফেলে৷ রক্তে ভেসে যায় পুরো ঘর৷ আল্লাহর কালাম কোরান শরিফও মাটিতে পড়ে রক্তে ভিজে যায়৷ পরে আম্মার লাশ পাকিস্তানি আর্মিরা ট্রাকে তুলে নিয়ে যায়৷
আশপাশের পরিচিতজনরা আম্মার করুণ ও নির্মম এ মৃত্যু প্রত্যক্ষ করেছেন৷ তাদের মুখেই শুনেছি সবকিছু৷ ওরা চলে গেলে পাশের বাসার একজন ঘর থেকে রক্তমাখা কোরান শরিফটি তুলে নেন৷ পরে সেটি আমরা সংগ্রহ করি৷ ওই কোরান শরিফটাই আম্মার শেষ স্মৃতি, যার পাতায় পাতায় রয়েছে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ৷ ওটা হাতে নিলে এখনও বুকের ভেতরে ঝড় ওঠে৷ দেশ তো স্বাধীন হয়েছে কিন্তু আমরা তো মাকে ফিরে পাইনি, তার লাশও পাইনি৷ ফলে তার কবরও নেই৷ পুরো দেশের মাটিতেই মিশে আছে আমার মায়ের রক্ত৷ কিন্তু এ দেশ কি মনে রাখবে আমার শহীদ মাকে?’’
একাত্তরের এপ্রিল থেকে বাঙালি নিধনে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে বিহারিদের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র সংঘের তৎকালীন নেতারাও যোগ দেয়৷ জানা যায়, মিরপুরে আলবদী গ্রামের গণহত্যা নিয়ে কথা হয় প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লার সঙ্গে৷ তার বর্ণনায় এভাবে উঠে আসে আলবদী গ্রামের গণহত্যার স্মৃতি, ‘‘বাবাসহ ছিলাম আলবদী গ্রামে, খালু রোস্তম বেপারির বাড়িতে৷ ২৪ এপ্রিল, ১৯৭১৷ ভোর তখনও হয়নি৷ গ্রামের পশ্চিমে তুরাগ নদীর পাড়ে পাকিস্তানি সেনাদের হেলিকপ্টার নামে৷ ওই সময়ই কাদের মোল্লা, বিহারি আক্তার গুন্ডা, নেওয়াজ ও ডোমারা দলবল নিয়ে আলবদী গ্রামে ঢোকে সশস্ত্র অবস্থায়৷ আমরা তখন ছোট্ট একটি খালের কচুরিপানায় লুকিয়ে থাকি৷ সকাল আনুমানিক নয়টা৷ খালের পঞ্চাশ গজ দূরে ধরে আনা হয় ৫০-৬০ জনকে৷ তাদের লাইন করে দাঁড় করায়। তারপর হঠাৎ গুলির শব্দ৷ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে লাইনের সবাই৷ মানুষের আর্তচিৎকারে ভারি হয়ে ওঠে আলবদী গ্রামের বাতাস৷ ওইদিন ওরা আমার খালুসহ তিনশ চুয়াল্লিশ জনকে হত্যা করে৷”
দেশের ভেতর যখন পাকিস্তানি সেনা ও তার দোসররা হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে তখন স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলতে থাকে ভারতে৷ ১০ এপ্রিল, ১৯৭১, বাংলাদেশ সরকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রদান করে৷ যা বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান বলে ধরে নেওয়া হয়৷ ওইদিন সত্তরের নির্বাচনে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মিলিত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে ও এই সংবিধান প্রতিষ্ঠা করে৷
তারা পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেন৷ আরও সিদ্ধান্ত হয় সৈয়দ নজরুল ইসলাম হবেন উপরাষ্ট্রপতি, যিনি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন আর তাজউদ্দীন আহমদ যুদ্ধকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন৷
মন্ত্রিসভার সদস্য হন: এম মনসুর আলী (অর্থ বাণিজ্য ও শিল্প) ও এএইচএম কামারুজ্জামান (স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষি) এবং খন্দকার মোশতাক আহমদ (পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ মন্ত্রী)৷
জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী প্রবাসী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার ও মেজর জেনারেল আবদুর রব চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন৷ এইচটি ইমাম মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷
গঠিত সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি হয় ১৭ এপ্রিল, মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায়৷ পরে ইতিহাসের হাত ধরেই বৈদ্যনাথতলা হয়ে যায় মুজিবনগর৷
কথা হয় মুজিবনগরে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে গার্ড অব অনার প্রদানকারী বারোজনের মধ্যে বেঁচে থাকা চারজন আনসার সদস্যের সঙ্গে৷ তারা হলেন মো. সিরাজ উদ্দীন, মো. হামিদুল হক, মো. আজিমুদ্দীন ও মো. লিয়াকত আলী৷
মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দীনের ভাষ্য ছিল এরকম, ‘‘মঞ্চ তৈরির দায়িত্ব ছিল স্থানীয় সংগ্রাম কমিটির মোমিন, জজ মাস্টার, আইয়ুব ডাক্তার, সৈয়দ মাস্টার, রফিক মাস্টার, রুস্তম উকিল, জামাত মাস্টার, সুশীল কুমার বিশ্বাস প্রমুখের৷ মাটির ওপরে তক্তা বিছানো হয়৷ কাপড়, দড়ি, বাঁশ, দেবদারুর পাতা দিয়ে সাজানো হয় অনুষ্ঠানস্থল৷ দুটি বাঁশ পুঁতে দেবদারুর পাতায় তৈরি করা হয় গেট৷ চেয়ার, মাইক আর টেবিল আসে ভারত থেকে৷ শেষরাতের দিকে আমাদের ক্যাম্প থেকে আনা হয় চৌকি।”
তিনি আরও বলেন, “অনুষ্ঠানটি শুরু হয় বেলা ১১টায়৷ জাতীয় নেতারা মঞ্চে উঠলে আসাদুল হক, শাহাবুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, পিন্টু বিশ্বাস, আইয়ুব প্রমুখ জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ দেন৷ কোরান তেলাওয়াত করেন মো. বাকের আলী।”
১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন দলের হুইপ এমএনএ আবদুল মান্নান৷ চিফ হুইপ অধ্যাপক ইউসুফ আলী স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন৷ শপথ করান সৈয়দ নজরুল ইসলাম৷ এরপরই অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ভাষণ দেন৷ মূলত এই শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের নাম সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে৷ এই সরকারের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়।
এরপরই ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে তৈরি হতে থাকে ইয়ুথ ক্যাম্প। সেখান থেকে বাছাইকৃত যুবকদের পাঠানো হয় ট্রেনিংয়ে। ভারত সরকারের সহযোগিতায় বিভিন্ন ট্রেনিং ক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিতে থাকে শত শত যুবক। পাকিস্তানি সেনাদের নির্মম হতাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ এবং দেশকে স্বাধীন করা স্বপ্ন বুকে নিয়ে অস্ত্রহাতে লড়াইয়ের শপথ নেন তারা।