চলমান আন্দোলনের ১৫তম দিনে এই কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
Published : 18 Feb 2024, 06:09 PM
পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এবার বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ধর্ষক ও নিপীড়কের কুশপুতুল দাহ করেছে ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’।
রোববার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশ এর পাদদেশে চলমান আন্দোলনের ১৫তম দিনে এই কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এদিন বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনি এবং ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আ র ক রাসেলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
সমাবেশে ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে দুর্বার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
সমাবেশে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, “যারা মোস্তাফিজকে ধর্ষক তৈরিতে সাহায্য করেছে তাদের সিন্ডিকেট শনাক্ত করুক। শুধু মোস্তাফিজের বিচারের মাধ্যমে এ ঘটনা শেষ হবে না৷ প্রক্টর, প্রভোস্টসহ যারা সহযোগিতা করেছে তাদেরও বিচার করতে হবে। মাদকের বাণিজ্য হচ্ছে। আপনারা তাদের শনাক্ত করুন। নয়তো আমরা ভাববো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত৷”
সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, “আমরা যে দাবিগুলো জানিয়েছি তা এই ক্যাম্পাস বাঁচানোর দাবি। এখান থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই ক্যাম্পাসে একজন নিপীড়ক শিক্ষক বহাল তবিয়তে আছে, অথচ তাকে অব্যাহতি দেওয়ার কোনো আয়োজন করা হয়নি৷ ২০ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে যদি তার বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয় তাহলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব। ফলে এর পরিণতি প্রশাসনকে ভোগ করতে হবে।”
৩ ফেব্রুয়ারি রাতে আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে কৌশলে হলের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, তার পরিচিত মামুনুর রশীদ মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে।
পরে ভুক্তভোগীর স্বামী ছয়জনকে আসামি করে ঘটনার রাতেই আশুলিয়া থানায় ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন’ আইনে মামলা করেন।
তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো- ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে; নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তি করাসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এ ছাড়া নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত করতে হবে এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে হবে; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে, জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণাপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন:
জাবিতে ধর্ষণ: আচার্যকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান
জাবিতে ধর্ষণ: মশাল মিছিল শেষে উপাচার্য ও শিক্ষার্থীদের বিতণ্ডা
জাবিতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সংহতি সমাবেশে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও
জাবিতে ধর্ষণ: রিমান্ড শেষে কারাগারে ৪ আসামি
জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণ: ঘটনার যে বিবরণ দিল র্যাব
জাহাঙ্গীরনগরে ‘ধর্ষণ’: বাকি দুই আসামিও গ্রেপ্তার
জাবিতে ধর্ষণ: দিনভর বিক্ষোভে নামল আরও অনেকেই
জাবি প্রশাসনের ব্যর্থতায় যৌন নিপীড়ন বন্ধ হয়নি: ইউজিসি
জাবিতে ধর্ষণ: তৃতীয় দিনেও উত্তাল ক্যাম্পাস
আগের ঘটনায় ব্যবস্থা না নেওয়ায় জাবিতে ফের ধর্ষণ: ১৮ নাগরিক
জাবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদের নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’
‘ধর্ষকের জন্ম বিচারহীনতায়’: জাহাঙ্গীরনগরে ক্ষোভ
ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে মশাল মিছিল
জাবিতে ধর্ষণ: জড়িতদের সনদ স্থগিত, ক্যাম্পাসে 'অবাঞ্ছিত'
ধর্ষণ: জাহাঙ্গীরনগরের চার শিক্ষার্থী ৩ দিনের রিমান্ডে
ধর্ষণ: বিক্ষোভে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর
জাবিতে ধর্ষণ: ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজ ও মামুনকে সহায়তা করেন চারজন
জাবিতে স্বামীকে আটকে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার