জমা পড়া ২ হাজার ৭১৬টি মনোনয়নের মধ্যে বাদ পড়েছে ৭৩১টি, যেগুলোর অধিকাংশই স্বতন্ত্র।
Published : 05 Dec 2023, 12:23 AM
বিএনপি-জামায়াত ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চাওয়া ছিল কোনো আসনে যেন একক প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকে। যাচাই বাছাইয়ে প্রতি তিন জনের মধ্যে প্রায় একজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেলেও এমন কোনো আসন নেই যেখানে বৈধ প্রার্থী একজন।
শেরপুর-২ আসনে সবচেয়ে কম দুই জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল ঘোষিত হয়েছে আরও দুই জনের নাম।
২০টি আসনে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা তিন জন করে। সবচেয়ে বেশি ১৩ জন করে বৈধ প্রার্থী আছেন চারটি আসনে। ১৩ জন প্রার্থী আছেন, এমন একটি আসনে আবার সর্বোচ্চ ১২ জনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
আগামী ৭ জানুয়ারির ভোট সামনে রেখে মনোনয়ন যাচাইবাছাইয়ের এই প্রক্রিয়া চলেছে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর।
জমা পড়া ২ হাজার ৭১৬টি মনোনয়নের মধ্যে বাদ পড়েছেন ৭৩১ জন। বৈধ ঘোষিত হয়েছে ১ হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র। তবে এদের মধ্যে তিন জনের দুটি করে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে।
বাতিল হওয়া প্রার্থীদের একটি বড় অংশই স্বতন্ত্র, তবে সেই সংখ্যাটি সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমাব দেবনাথ ও আইন শাখার যুগ্ম সচিব মাহবুবার রহমান সরকার।
কী পরিমাণ স্বতন্ত্র প্রার্থী বাদ পড়েছেন, তা বোঝা যায় ঢাকার ২০টি আসন দেখেই। এ আসনগুলোতে মোট ৪৩ জন স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে বাদ পড়ে গেছেন ৩০ জনেই। এদের বেশিরভাগই ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ হাজির করতে পারেননি।
ঢাকায় বাতিল হয়েছে মোট ৭৮টি মনোনয়নপত্র। ঢাকার তুলনায় বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যাটি কিছুটা বেশি ছিল। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের তিনটি আসনে সব স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেছে।
যারা বাদ গেছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাদের নির্বাচন কমিশনে আপিল করার সুযোগ আছে। এটা চলবে ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সেখানেও রায় পক্ষে না পেলে আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে।
যাদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষিত হয়েছে, চাইলে তাদের বিরুদ্ধেও আপিলের সুযোগ আছে।
আরও পড়ুন
ঋণ খেলাপে কাটা পড়লেন তারা, পুনঃতফসিলে সতর্ক ব্যাংক
মনোনয়নপত্র বৈধ-বাতিল দুটোই বেশি বগুড়া-৭ আসনে
ঢাকার ২০ আসনে বাছাইয়ে টিকলেন যারা
নির্বাচন: বাছাইয়ে বাতিল ৭৩১ মনোনয়নপত্র
আবার ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে। ফলে সেদিনই চূড়ান্তভাবে জানা যাবে, কারা থাকছেন ভোটের লড়াইয়ে।
অবশ্য উচ্চ আদালত প্রচারের মধ্যেও কারও প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করতে পারে। ভোটের আগে আগেও আদালতের আদেশে প্রার্থী হয়ে ভোটে জয়ের রেকর্ড আছে।
গত ১৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল যে তফসিল ঘোষণা করেন, তাতে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমার সুযোগ ছিল।
তবে দশম সংসদ নির্বাচনের মত এবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনারা আন্দোলনে আছে। এ কারণে নির্বাচনে কতগুলো দল আসে, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল।
২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটে এসেছিল ১২টি রাজনৈতিক দল। এবার দলের সংখ্যা অনেক বেশি, সব মিলিয়ে ২৯টি।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বেদনাথ জানান, দলীয় প্রার্থীদের বাদ পড়ার একটি বড় কারণ ছিল খেলাপি ঋণ। এছাড়া বিভিন্ন সেবার বিল বকেয়া থাকা, প্রস্তাবক-সমর্থক সঠিক না হওয়া, হলফনামায় অসত্য তথ্য বা অসঙ্গতি এবং দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেও সভাপতির প্রত্যয়নপত্র না থাকা। দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার তথ্যেও বাতিল হয়েছে আওয়ামী লীগের একজন প্রার্থীর।
একাদশের সংসদ নির্বাচনে তিন সহস্রাধিক মনোনয়ন জমা পড়েছিল। সেবারও বাছাইয়ে ৭৮৬ জনের বাদ যায়, বৈধ হয় ২২৭৯টি মনোনয়নপত্র।
২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের বর্জনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে একক প্রার্থী থাকায় ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। বিএনপি এখনও সেই নির্বাচনের জন্য কথা শোনায় আওয়ামী লীগকে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে লড়াইয়ের আমেজে ভাটা
ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছিল তিন বারের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনকে। শেষ সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমরকে ভাগিয়ে এনে মনোনয়ন তুলে দেওয়া হয় তার হাতে।
এ আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান মনির স্বতন্ত্র পরিচয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। সেখানে অন্য প্রার্থী থাকলেও ধারণা করা হয়েছিল, দলের ভেতরেই জমবে লড়াই। কিন্তু বাতিল হয়ে গেছে মনিরের মনোনয়ন।
কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নৌকার প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে সৈয়দা জাকিয়া নুর লিপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে তার আপন ভাই ছেলে সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ উদ্দিনের ছেলে শরীফ আহাম্মদ সাদীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। সেখানেও লড়াই জমবে বলে ধারণা করা হয়েছিল।
তবে শাফায়েতুল ইসলাম ও শরীফ সাদীর মনোনয়ন বাতিলে নির্বাচনি এলাকায় ভোটের আমেজ থাকবে কি না, তা নিয়ে আছে সংশয়। সেখানে জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হলেও দলটির সামর্থ্য নিয়ে আছে প্রশ্ন।
বিএনপির বর্জনের মুখে এবার নির্বাচনি আমেজের প্রধান কারণই ছিল আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
ক্ষমতাসীন দলের একটি সিদ্ধান্তেই মূলত স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা রেকর্ড ৭৪৭ জনে গিয়ে দাঁড়ায়।
স্বতন্ত্রের রেকর্ড: প্রতিদ্বন্দ্বিতার হাতিয়ার না শঙ্কার
বিএনপি শেষ পর্যন্ত ভোটে আসছে না, এ বিষয়টি যখন স্পষ্ট হয়ে গেছে, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি আসনে আসনে অন্য প্রার্থী প্রস্তুত রাখতে বলেন।
দলের ভাষ্য ছিল, ‘ডামি প্রার্থী’ দেখতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রধান; তবে তৃণমূলে গেছে অন্য বার্তা। বিপুল উৎসাহে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়ে যান আওয়ামী লীগ নেতারা। অন্য দলে গিয়ে নয়, তারা সবাই দলনিরপেক্ষ হিসেবে প্রার্থিতা জমা দেন।
তবে যাচাইবাছাইয়ে দেখা গেছে, এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর বহুজনই বাদ পড়ে গেছেন। এর কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার একটি শর্ত।
আইন অনুযায়ী সাবেক সংসদ সদস্য না হলে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়াতে নির্বাচনি এলাকার ভোটারদের এক শতাংশের সমর্থনের প্রমাণ দিতে হয় মনোনয়নের সঙ্গে। কিন্তু দৈবচয়নের ভিত্তিতে গোটা দশেক ভোটারের বিষয়টি যাচাই বাছাই করে কারও ক্ষেত্রে গড়মিল পেলে মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
যাচাই বাছাইয়ে দেখা যায়, কোথাও একজন ভোটার সই করার কথা অস্বীকার করেছেন, কোথাও দেখা গেছে সেই ভোটার অন্য নির্বাচনি এলাকার, কোথাও ভোটারের ঠিকানায় গিয়ে পাওয়া যায়নি, কোথাও দেখা গেছে তালিকায় সই আছে, অথচ ভোটার দেশের বাইরে, এমনকি মৃত মানুষের নামেই সই দেওয়া হয়েছে।
ইসির বিচারে প্রার্থী ‘অযোগ্য’ হলে দলের কিছু করার নাই: কাদের
রাজধানীর তিনটি আসনের মধ্যে ঢাকা-১৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেড আই রাসেল যেসব ভোটারের সমর্থনের তালিকা জমা দেন, তাদের মধ্যে দ্বৈব চয়নের ভিত্তিতে ১০ জনের মধ্যে সাত জনকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি।
একই আসনের মোহাম্মদ এমরুল কায়েস খান তার তালিকার ৫ জনই অন্য আসনের ভোটার।
ঢাকা-১৭ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ খান তালিকার বাছাই করা ১০ জনের অধিকাংশই সঠিক নয়। ‘মনগড়া’ তালিকা দিয়েছেন বলে প্রমাণ হয়।
ঢাকা-১১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছারোয়ার হোসেন এর মনোনয়নপত্রে সমর্থনকারীর স্বাক্ষর নেই; আবার ১০ জনের মধ্যে একজন ‘মৃত’ বলে প্রমাণ পেয়েছেন মনোনয়ন বাছাই করা নির্বাহী হাকিম।
কাগজে কলমে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বেশিরভাগই ছিলেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। তাদের বড় অংশ বাতিল হয়ে যাওয়ায় নির্বাচনী এলাকায় ‘আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ’ লড়াইয়ের যে আলোচনা এতদিন চলছিল, তা থিতিয়ে গেছে অনেকটা।
অথচ বিএনপি ও তার সঙ্গে আন্দোলনে থাকা দলগুলোর বর্জনের মধ্যে ৩০ নভেম্বরের পর থেকে দেশজুড়ে নির্বাচনি হাওয়া যতটুকু বইছে, তা ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ আওয়ামী লীগ নেতাদের কারণেই।
বিএনপির ভোট বর্জনে ২০১৪ সালেও যেসব আসনে লড়াই হয়েছিল, তার প্রায় সবগুলোতেই নৌকার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে যাদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে, তাদের মধ্যে আছেন ফরিদপুর-৪ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য মজিবর রহমান চৌধুরী (নিক্সন), সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, হবিগঞ্জ-৪ আসনে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
চার আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নেই
ক্ষমতাসীন দল এবার যে ২৯৮ জনকে মনোনয়ন দিয়েছিল, তাদের মধ্যে ২৯৪ জন বৈধ ঘোষিত হয়েছেন।
কক্সবাজার-১ আসনে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদকে ফিরিয়ে এনে বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ। খেলাপি ঋণ থাকার কারণ দেখিয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
নৌকার শাম্মীর মনোনয়নপত্র বাতিল, এমপি পঙ্কজ টিকলেন
একই কারণে বাতিল হয়েছে নোয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণের মনোনয়ন।
কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ফৌজদারি মামলা থেকে অব্যাহতির কাগজ দেখাতে না পারায়।
দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহম্মেদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম।
তবে একই আসনে ভোটের লড়াইয়ের অনুমতি পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করা বর্তমান সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ। তিনি গত নির্বাচনে জিতেছিলেন নৌকা নিয়ে।
খেলাপি ঋণে কাটা
নোয়াখালী-৪ ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন বিকল্পধারার মহাসচিব আব্দুল মান্নান। দুটি আসনেই বাতিল হয়েছে মনোনয়ন। গত সংসদ নির্বাচনে তিনি লক্ষ্মীপুর-৪ থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থনে জয় পান নৌকা প্রতীক নিয়ে।
জামিনদার হিসাবে ঋণ খেলাপির কারণে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে মাহী বি চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের কিরণ ও বিকল্পধারার মান্নানের মনোনয়ন বাতিল
মুন্সীগঞ্জের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপন জানান, এফিনিটি কমিউনিকেশন লিমিটেডের জামিনদার হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণখেলাপির তালিকায় নাম রয়েছে মাহীর।
এছাড়া সিলেট-২ আসনের গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
গণফোরামের এমপি মোকাব্বিরের মনোনয়ন বাতিল
মোকাব্বির খান গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি হিসেবে তার মনোনয়নপত্রে নিজেই সই করেন। কিন্তু তিনি যে দলের নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন তার কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি।
ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পরিবর্তন করায় বাতিল হয়েছে তিনবারের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের প্রার্থিতা।
চট্টগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের মনোনয়নপত্রে দলীয় প্রধান স্বাক্ষরিত কাগজপত্র জমা দিতে না পারায় তা বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
‘কিংস পার্টির’ তারাও
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গজিয়ে উঠা কয়েকটি দল ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। এবারও কয়েকটি নতুন দলকে বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে ‘কিংস পার্টি’ বলা হচ্ছে।
আলোচিত এই দলগুলোর প্রার্থীদের একটি অংশ বাদ পড়েছেন যাচাই বাছাইয়ে।
বাদের তালিকায় আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী, বেশির ভাগই স্বতন্ত্র
লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এম এ আউয়ালের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ঋণ খেলাপির কারণে। তিনি ২০১৪ সালে এই আসনে তরীকত ফেডারেশনের প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের ছাড়ে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
টাঙ্গাইল-৬ আসনে ভোট করতে বিএনপি থেকে বিএনএমে যোগ দেওয়া খন্দকার ওয়াহিদ মুরাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে খেলাপি ঋণের কারণে।
একই কারণে বাতিল হয়েছে চাঁদপুর-৪ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ সেলিমের মনোনয়ন।
ঢাকা-৭ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী নুরুন নাহারের মনোনয়নপত্রও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-২ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সোহেল রানার মনোনয়ন বাতিল হয়েছে নানা জটিলতায়।
পাবনা-২ আসনে বিএনএম প্রার্থী শিল্পী ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত খেলাপি ঋণের কারণে।
জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি), জাকের পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, খেলাফত আন্দোলনসহ আরও বেশ কিছু দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে নানা কারণে।
যেভাবে করা যাবে আপিল
নির্বাচন কমিশনের আইন শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুছ সালাম জানান, মনোনয়নপত্র বাতিল ও গ্রহণের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী বা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান রিটার্নিং অফিসারের আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে ৫ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল ৪টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন।
এ জন্য কমিশন বরাবর স্মারকলিপি আকারে (আপিলের মূল কাগজপত্র ১ সেট ও ছায়ালিপি ৬ সেটসহ) আপিল করতে পারবেন।
মনোনয়নপত্র বাতিল বা গ্রহণে সংক্ষুব্ধ? জেনে নিন আপিলের নিয়ম
এজন্য ১০টি অঞ্চলের জন্য ১০টি বুথ করা হয়েছে নির্বাচন ভবনে। ১০ জন কর্মকর্তার কাছে আপিল আবেদন জমা দিতে হবে।
সালাম জানান, ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন ১০০টি করে আপিলের শুনানি হবে ক্রমানুসারে। শুনানি শেষে আপিলের ফলাফল মনিটরে প্রদর্শন, রায়ের পিডিএফ কপি ও আপিলের সিদ্ধান্ত রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের ই-মেইলে পাঠানোর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
রায়ের অনুলিপি নির্বাচন ভবনের অভ্যর্থনা ডেস্ক থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
১৭ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার পরদিন প্রতীক বরাদ্দ করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরপর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। ৭ জানুয়ারি হবে ভোট।
পুরনো খবর
জোটের অঙ্কে ১৪ দল থেকে এবার কারা
বছরে ‘সাড়ে ৫ কোটি টাকা’ আয় করেন সাকিব
নির্বাচন: বাছাইয়ে বাতিল ৭৩১ মনোনয়নপত্র
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আয় 'কমেছে', সম্পদ 'বেড়েছে'
জাপা নিজের শক্তিতে নির্বাচন করলে স্বাগত জানাই: কাদের
শাহজাহান ওমরের পাশে বন্দুক নিয়ে বিএনপি নেতা, ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ দাবি
বকেয়া গৃহকর দিয়ে বৈধ হলেন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী
ঢাকা-১৭: জাতীয় পার্টির জিএম কাদের, সালমা দুজনের মনোনয়নপত্রই বৈধ