হলফনামা অনুযায়ী, এখন মোমেনের বার্ষিক আয় ২৬ লাখ টাকার বেশি; যা ২০১৮ সালে ছিল প্রায় ৩৫ লাখ।
Published : 04 Dec 2023, 08:47 PM
সিলেট-১ সদর আসনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বার্ষিক আয় প্রায় দশ লাখ টাকা কমেছে। তবে অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে বলে তথ্য দিয়েছেন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায়।
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে সিলেট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া মোমেনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হলফনামায় তার পেশা উল্লেখ করেছেন, ‘রাজনীতি ও অন্যান্য’। স্নাতকোত্তর পাস মোমেনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
এ ছাড়া বার্ষিক আয়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা ও ভোটের প্রতিশ্রুতি ও অর্জনসহ বিভিন্ন তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে।
হলফনামা অনুযায়ী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বার্ষিক আয় ২৬ লাখ টাকার বেশি; যা ২০১৮ সালে ছিল প্রায় ৩৫ লাখের বেশি। বর্তমানে বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা, পেশা থেকে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও ব্যাংকের মুনাফা বাবদ প্রায় ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রে আমার পেশা ‘শিক্ষকতা ও অন্যান্য’ উল্লেখ করা হয়েছিল।
তখন তার মোট বার্ষিক আয় ছিলো ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৭১ টাকা; যার মধ্যে ২৭ লাখ ৪১ হাজার ২২৪ টাকা আসত শিক্ষকতা থেকে। আর বাকি টাকা আসতো বাসাভাড়া, ব্যবসা, শেয়ার বা সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাত থেকে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট বার্ষিক আয় ২৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৬৬ টাকা দেখিয়েছেন; যা ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় ১০ লাখ টাকা কম।
মন্ত্রী বলেন, এখন তার আয়ের ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৪ টাকা আসে বাড়ি ভাড়া থেকে, ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা পেশাগত আয় ও ৯ লাখ ৬০ হাজার ৫৫২ টাকা ব্যাংক মুনাফা থেকে আসে।
তবে আয় কমলেও স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে বলে হলফনামায় তথ্য দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
এ প্রসঙ্গে হলফনামায় বলা হয়েছে, বর্তমানে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে যা; ২০১৮ সালে ছিল ৭ কোটি ১৫ লাখ টাকার কিছু বেশি।
২০১৮ সালে মোমেনের অস্থাবর সম্পত্তির মোট পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার কিছুটা বেশি। যার মধ্যে ছিল নগদ ১ কোটি ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৭১০ টাকা, ১৯৪৬ মার্কিন ডলার, ব্যাংকে জমাকৃত ১ কোটি ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৩৮৮ টাকা, কোম্পানীর শেয়ার বা বন্ড ১০ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য প্রায় ৪৮ লাখ টাকা।
এ সময় তার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ৫ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও ৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র।
এবারের হলফনামা অনুযায়ী, মোমেনের অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকারও বেশি দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নগদ ৩৪ লাখ ২৩ হাজার ২৪১ টাকা, ব্যাংকে জমা ৩ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার ৬৯৫ টাকা, কোম্পানির শেয়ার বা বন্ড ৮ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ টাকা, গাড়ি ২০ লাখ টাকার এবং অন্যান্য প্রায় ১১ লাখ টাকা।
তবে তার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পত্তি অপরিবর্তিত রয়েছে।
তবে মোমেনের স্থাবর সম্পদ ২০১৮ সালের তুলনায় তেমন বাড়েনি। ২০১৮ সালে স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ছিল ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকার অকৃষি জমি, ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮৫ টাকার দালান ও ৩ কোটি ৮২ লাখ ৬ হাজার টাকার বাড়ি।
এ সময় তার স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পত্তি ছিল না।
বর্তমানে মোমেনের স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে আছে ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকার অকৃষি জমি, ১৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকার দালান ও ৪ কোটি ১৯ লাখ ৩১ হাজার টাকার বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট।
সিলেট-১ সদর আসনে আব্দুল মোমেনের বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।
এর আগে টানা দুই মেয়াদে এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন মোমেনের বড় ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
স্বাধীনতার পর থেকে সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত প্রার্থীর দলই সরকার গঠন করেছে, ফলে এই আসনটি ভোটের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।