“সেখানে কাতারের ব্যবসায়ীরা সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন,” বলেন তিনি।
Published : 24 Apr 2025, 12:58 AM
বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়ে সেদেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
বুধবার দোহায় কাতারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ সাউদ বিন আবদুল রহমান বিন হাসান আল-থানির সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “কাতারের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা যেতে পারে। সেখানে কাতারের ব্যবসায়ীরা সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন।”
বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য জানান।
প্রেস সচিব বলেন, “বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা কাতারের মন্ত্রীকে বলেছেন, বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং ও অর্থনৈতিক হাব হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোসহ বিনিয়োগ পরিষেবা উন্নয়ন করা হচ্ছে।”
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন করে উৎপাদিত পণ্য দেশের বাইরে রপ্তানি করতে পারবেন কাতারের ব্যবসায়ীরা।
তিনি কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে সেদেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
কাতার তিন বছর পর পর বাংলাদেশ থেকে ৭২৫ জন করে সেনাসদস্য নেবে। প্রধান উপদেষ্টা কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রীকে এই সেনাসদস্যের সংখ্যা বাড়ানোর অনুরোধ জানান।
এদিকে কাতারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী শেখ ফয়সাল বিন আল থানিও এদিন অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
মাদ্রাসাগুলোতে প্রযুক্তি শিক্ষার জন্য কাতার চ্যারিটির সহায়তা কামনা
বাংলাদেশের লাখ লাখ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর জন্য প্রযুক্তি শিক্ষা চালু করতে কাতার চ্যারিটির সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
বাসস জানিয়েছে, মঙ্গলবার দোহায় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে কাতার চ্যারিটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নওয়াফ আবদুল্লাহ আল হাম্মাদির সাথে এক বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে কাতারের এ সংস্থার চলমান মানবিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন, যার মধ্যে রয়েছে এতিমদের জন্য স্পনসরশিপ প্রোগ্রাম এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এলপিজি বিতরণ।
তিনি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক দক্ষতা অর্জনে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তোলার ওপর জোর দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য যে কোনো সহায়তাকে আমরা স্বাগত জানাব।”
তিনি বলেন, কাতার চ্যারিটি বাংলাদেশি মাদ্রাসাগুলোর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হতে পারে এবং তাদের পাঠ্যক্রমে প্রযুক্তি বিষয়ক পাঠ যুক্ত করার প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে পারে।
জবাবে, কাতার চ্যারিটি প্রধান বলেন, তার সংস্থা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মাদ্রাসাকে দক্ষতা এবং জীবিকা নির্বাহের কর্মসূচিতে সহায়তা করেছে। তিনি আশ্বাস দেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাবটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।
বাসস লিখেছে, আলোচনাকালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অব্যাহত মানবিক সহায়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস কাতার চ্যারিটিকে তাদের এলপিজি বিতরণ অব্যাহত রাখার এবং শরণার্থী জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।
নারী শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের মেয়েদের, বিশেষ করে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ উদ্যোগ এবং দারিদ্র্য বিমোচনে এর ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়।