'আমাদের দূষণ নয় সবুজ শক্তির প্রয়োজন', 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ক্লাইমেট জাস্টিস' সহ নানা পরিবেশবান্ধব স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে শোভযাত্রায় অংশ নেন তরুণরা।
Published : 22 Apr 2025, 02:05 PM
তারুণ্যের ফ্ল্যাশ মব ও শোভযাত্রায় শুরু হয়েছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে দেশের প্রথম উৎসব 'রিনিউয়েবল এনার্জি ফেস্ট ২০২৫’।
একশনএইড বাংলাদেশ, বুয়েট এবং জাস্ট এনার্টি ট্রানজিশন নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (জেটিনেট-বিডি) এর যৌথ উদ্যোগে দুই দিন এ উৎসব চলবে।
'ফান্ড আওয়ার ফিউচার' বৈশ্বিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার উৎসবের প্রথম দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরে ফ্ল্যাশ মব ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
যুব সংঘের ২০ জন সদস্য ফ্ল্যাশ মবে অংশ নেন। পরে দোয়েল চত্বর থেকে হাই কোর্ট ঘুরে প্রেসক্লাব পর্যন্ত হয় শোভাযাত্রা।
'আমাদের দূষণ নয় সবুজ শক্তির প্রয়োজন', 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ক্লাইমেট জাস্টিস' সহ নানা পরিবেশবান্ধব স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে শোভযাত্রায় অংশ নেন তরুণরা।
এসময় জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর ডাক দেওয়া হয়। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘রিনিউয়েবল এনার্জি ফেস্ট’ এর লক্ষ্য এবং কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবিরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান প্রতিষ্ঠানটির জাস্ট এনার্জ ট্রানজিশন টিমের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ।
এছাড়া বুয়েটের অধ্যাপক এম এ এ শওকত চৌধুরী এবং ইডকাল, সিটি ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউএবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসআরইএ) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে।
দেশে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের জরুরি প্রয়োজনীয়তা এবং এক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, "এই উৎসবে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, বিশেষজ্ঞ ও তরুণ প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। আমাদের মূল লক্ষ্য-সংলাপ ও উদ্ভাবনী মেলার মাধ্যমে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের ভিত্তি স্থাপন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উদ্ভাবন তুলে ধরা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।”
তিনি বলেন, “উদ্ভাবন মেলা ও ইয়ুথ হাব তরুণদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ। সমাপনীতে স্থানীয় উদ্ভাবকদের আইডিয়া উপস্থাপন এবং সেরা উদ্ভাবকদের পুরুস্কৃত করা হবে। এই উৎসব সবুজ ও ন্যায্য ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার।”
টেকসই জ্বালানি রূপান্তরে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ফারাহ্ কবির বলেন, "আজকের এই ফ্ল্যাশ মব ও র্যালি প্রমাণ করে যে আমাদের যুব সমাজ একটি ন্যায্য ও টেকসই জ্বালানি ভবিষ্যৎ চায়। জীবাশ্ম জ্বালানির দূষণ থেকে মুক্তি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি সবুজ বাংলাদেশ নির্মাণে সবাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এই উৎসব সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।"
উৎসবের অংশ হিসেবে বুয়েট ইসিই ভবন চত্বরে 'উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি মেলা' এবং 'ইয়ুথ হাবে' দেশীয় উদ্ভাবকদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ক প্রযুক্তি ও ধারণা প্রদর্শন করা হবে।
প্রযুক্তি মেলায় প্রতিষ্ঠিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি পণ্য ও সেবা তুলে ধরা হবে। ইয়ুথ হাবে তরুণরা ডায়ালগ ও কর্মশালার মাধ্যাম তাদের ভাবনা ও উদ্ভাবনী ধারণা সকলের সামনে তুলে ধরবে এবং জলবায়ু আন্দোলানে সক্রিয় ভূমিকা নিতে উৎসাহিত হবে।
উৎসবের দুই দিনে মোট ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ পলিসি ডায়ালগ সেশন হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব, নীতি ও সুশাসন, অর্থায়ন ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো ও প্রযুক্তি, নারীর অংশগ্রহণ এবং জলবায়ু ও ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের জন্য তরুণদের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা। এসব আলোচনা থেকে উঠে আসা সুপারিশগুলো নীতি নির্ধারকদের কাছে সুপারিশ আকারে পেশ করা হবে।
উৎসবের শেষ দিনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়ার কথা রয়েছে।