বিএনপিবিহীন ২০১৪ সালের ভোটে জাতীয় পার্টিকে ৩৪টি আসনে ছাড় দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেগুলোর একাধিক আসনে এবার নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি দলের অন্য নেতারা স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে নেমে পড়েছেন।
Published : 03 Dec 2023, 12:34 AM
আগের তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু তার কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে এবার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে ভোটে আসা নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা নাসিরুল ইসলাম খানকে মাঠে থাকতে বলা হয়েছে।
একইভাবে গত দুটি নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৮ আসন থেকে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের অবলীলায় জয়ের কারণ ছিল আওয়ামী লীগের সমর্থন। ১৯৮৮ সালের একতরফা নির্বাচনেই কেবল এর আগে এ আসন থেকে জয় পেয়েছিলেন তিনি।
তবে এবার নৌকা পেয়ে ভোটে নেমেছেন ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে জয় পাওয়া মো. আব্দুছ ছাত্তার। আবার সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের হয়ে উপজেলা নির্বাচনে দুইবার জয় পাওয়া মাহমুদ হাসান সুমন, যার জনপ্রিয়তার প্রমাণ মিলেছে আগেও।
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি-দুই দলই এ আসনে সবশেষ ২০০১ সালে লড়াই করেছে; সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অবস্থান প্রধান তিন প্রার্থীর মধ্যে ছিল না।
বিএনপি ও সমমনাদের ভোট বর্জনের মধ্যে আগামী ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে, তাদের সবাই শেষ পর্যন্ত ভোটে অংশ নেবেন কি না, সেই বিষয়টি নিশ্চিত নয়। শরিক ১৪ দলকে কিছু আসনে ছাড় দেওয়া হবে-এমনটি বলা হচ্ছে। তবে জাতীয় পার্টির বিষয়ে কী হবে, সেই বিষয়টি এখনও সুস্পষ্ট নয়।
তফসিল অনুযায়ী, ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষ হওয়ার পরই জোটের শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আসন ভাগাভাগি বা জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন নিয়ে সমঝোতার বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে যেসব আসনে নির্বাচনে আছে, সেগুলোর কোনোটাতে আওয়ামী লীগ ছাড় দেবে কি না, এই প্রশ্নে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।"
কী হবে এবার?
২০০৮ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি তিনটি নির্বাচন করেছে সমঝোতা করেই। এর মধ্যে দুইবার মহাজোট করে এবং ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে জোট না থাকলেও আসন নিয়ে সমঝোতা ছিল দুই দলে। সেবার জাতীয় পার্টির আগ্রহ অনুযায়ী ৩৪ আসনে ছিল না নৌকার কেউ। লাঙ্গলের প্রার্থীরা জয় পান সেসব আসনেই।
এবারও বিএনপির ভোট বর্জনের আলোচনার মধ্যেও জাতীয় পার্টির সঙ্গে বেশ কিছু আসনে সমঝোতার বিষয়টি নিয়েই এগোচ্ছিল আওয়ামী লীগ। তবে সংসদে প্রধান বিরোধী দলের নেতৃত্বের টানাপড়নে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ ও তার অনুসারীরা ভোট থেকে দূরে থাকার পর সমীকরণ পাল্টাতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকে।
বিএনপির বর্জনের ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনেও যখন ভোট নিয়ে নানামুখি তৎপরতা, সে সময় রওশনের অবস্থানের কারণেই জাতীয় পার্টির একটি অংশ শেষ পর্যন্ত ভোটে যায়।
এবার তার অনুসারী মশিউর রহমান রাঙ্গাঁকে রংপুর-১, ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদের রংপুর-৩, জিয়াউল হক মৃধার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, রুস্তম আলী ফরাজীর পিরোজপুর-৩ আসনে তাদেরকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এগুলোসহ আরও কিছু আসন না পেয়ে নিজেও ময়মনসিংহ-৪ আসনে দাঁড়াচ্ছেন না রওশন।
জাতীয় পার্টিতে নেতৃত্বের এ টানাপড়েনে এবার আওয়ামী লীগের কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি; যদিও ২০১৪ সালের পর নানা সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মধ্যস্থতা করতে দেখা গেছে।
এবার ভোটে আসার শর্ত হিসেবে জাতীয় পার্টিকে নিজের মতো চালানোর শর্ত দিয়েছেন জি এম কাদের বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর। যদিও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য আসেনি। রওশন ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোয় আওয়ামী লীগের জাতীয় পার্টি ভাবনায় কিছুটা পরিবর্তন এসেছে বলে নেতারা বলছেন।
আরও পড়ুন:
গৃহবিবাদ নিয়েই ভোটে জাতীয় পার্টি
জিএম কাদের ও চুন্নুকে দায় দিয়ে ভোটে না যাওয়ার ঘোষণা রওশনের
রওশনের ‘সম্মানের আসন’ মুসাকে দিল জাতীয় পার্টি
এবার কেবল নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান ফুরফুরে মেজাজে আছেন। কারণ এ আসনে আওয়ামী লীগ কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রাখেনি।
চ্যালেঞ্জের মুখে চুন্নু-ফখরুল ইমাম
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এক সময় রওশনের প্রতি অনুগত হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। তবে এরশাদের মৃত্যুর পর তিনি ভিড়ে যান জি এম কাদেরের কাছে।
গত তিনটি নির্বাচনে চুন্নুকে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ এবং এরশাদের পতনের পর তিনি এ আসন থেকে সংসদে যাওয়ার সুযোগ পান।
গত তিনটি নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের নাসিরুল ইসলাম খানকে প্রথমে মনোনয়ন দেওয়া হলেও পরে তাকে বসিয়ে দেওয়া হয়। তিনবারই জাতীয় পার্টি চুন্নুকে সমর্থন জানান তিনি।
এ তিন নির্বাচনের মধ্যে ২০০৮ ও ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচন করেছিল আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে জোট না হলেও আসন সমঝোতা হয়েছিল।
টানা দুইবার উপজেলা নির্বাচনে জয় পাওয়া নাসিরুল এবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে তার পদ ছাড়ার পরই আলোচনা জোরালো হতে থাকে এবার চুন্নুকে আর ছাড় দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী বলেন, “আমি একবার না, মোট চারবার নৌকা পেয়েছি। এর আগে নির্বাচন করিনি, কিন্তু এবার আর ছাড় নয়। এবার নেত্রী (শেখ হাসিনা) বলেই দিয়েছেন ফ্রি (উন্মুক্ত) থাকবে আমার আসন।”
তিনি বলেন, “জনগণই তো আমাকে উঠতে দেবে না। আমিও চার বছর ধরে মাঠে আছি। ওনি (জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু) কত বড় নেতা এবার দেখা যাবে।
“মাগনা মাগনা ভোট দেই, তিনি এমপি হন। এবার আর হবে না।”
সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৬ সালে কেবল নয়, এ আসনে ১৯৮৮ সালের একতরফা নির্বাচনেও জিততে পারেনি জাতীয় পার্টি। এরশাদ সরকারের পতনের পর ভোটের ফলে ১৯৯৬ সালে চুন্নু দ্বিতীয় এবং ২০০১ সালে তৃতীয় হন।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়ার পর বিএনপির সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুককে ভোটে চুন্নু বলতে গেলে উড়িয়ে দেন। পরের দুটি নির্বাচনেও তিনি অবলীলায় জিতে আসেন।
তিনবার তো আপনাকে ছাড় দিয়েছিল, এবার কি ছাড় পাবেন?-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এ প্রশ্নে চুন্নু বলেন, “তাদের (আওয়ামী লীগ) অনেকেই আমার পাশে আছে। এখন প্রশ্ন হল নির্বাচনে ভোটার আসবে কি না?”
ভোটার আসবে না কেন- এই প্রশ্নে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, “যদি প্যানিক সৃষ্টি হয়, বিএনপি তো ভোটে আসবে না, যদি তারা বোমাটোমা মারে তাহলে তো ভোটার আসা নিয়ে সন্দেহ থাকবে।”
এলাকায় তো গেলেন, কী বুঝলেন?- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আর কয়েকটা দিন গেলে বোঝা যাবে।”
ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের মুখোমুখি হচ্ছেন জাতীয় পার্টির আরেক নেতা ফখরুল ইমামও। গত দুটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাশে থাকলেও এবার তারা দূরে। নবম সংসদ নির্বাচনে নৌকা নিয়ে জয় পাওয়া আওয়ামী লীগের মো. আবসুছ ছাত্তার এবারও দলের প্রার্থী। আবার স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমনও।
এরশাদ সরকারের পতনের ১৯৯১ সালে এ আসনে জয় পাওয়া খুররম খান চৌধুরী বিএনপিতে চলে যাওয়ার পর পরবর্তী অংশগ্রহণমূলক তিনটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আর জয় পায়নি। ১৯৯৬ সালে রওশন এরশাদ এ আসন থেকে এক হাজারের মতো ভোটে হেরেছিলেন। তবে ২০০১ সালে পাত্তাও পায়নি জাপা প্রার্থী।
ওই বছর সেখানে জয় পায় বিএনপি, দ্বিতীয় হয় আওয়ামী লীগ, তৃতীয় অবস্থানে ছিল নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানো এক নেতা। জামানত হারায় জাতীয় পার্টি।
২০০৮ সালে এই আসনে বিএনপির দ্বিগুণেরও বেশি ভোটে জয় পান নৌকার ছাত্তার। পরে সমঝোতার স্বার্থে ২০১৪ সালে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয় ফখরুল ইমামকে, যিনি ১৯৮৮ সালে একতরফা নির্বাচনে প্রথমবার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুছ ছাত্তারের বক্তব্য জানতে পারেনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। তিনি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে শনিবার বিকাল থেকে রাত অবধি নানা বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতা সুমন বলেন, “দুইবার উপজেলায় জিতেছি। তৃণমূলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। দলের অধিকাংশ লোক আমার সমর্থনে আছেন।”
লড়াই ত্রিমুখী হবে বলে মনেই করেন না তিনি। তিনি সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তার চাচা নৌকার ছাত্তারকে ধরে রেখেছেন।
টানা দুইবারের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নেতাকে কেন প্রতিদ্বন্দ্বী ধরছেন না, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, “উনি (ফখরুল ইমাম) তো বহিরাগত, তার বাড়ি তো গৌরীপুর, ওনি এখনও এলাকায়ই আসেননি। তাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না।”
তবে ফখরুল ইমাম দাবি করেন, তার বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে কোনো আলোচনা আছে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “কোনো কথাবার্তা হয়নি।… আমার লড়াই হল আসন ধরে রাখার।
“গত দুটি নির্বাচনে তো জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সমর্থনে”- এই মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, “না হলে (সমঝোতা) কী করব বলেন?”
আওয়ামী লীগের সমর্থন ছাড়া আপনার পক্ষে কি ভোটে জেতা সম্ভব হবে?-এ প্রশ্নে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমি কবে প্রথমে এমপি হয়েছি জানেন? ১৯৮৮ সালে (আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও বামপন্থিরা সেই নির্বাচন বর্জন করে)।
“এই আসন থেকে সব মিলিয়ে ছয়বার (আসলে চারবার। এর মধ্যে দুইবারই আওয়ামী লীগের সমর্থনে) জিতেছে জাতীয় পার্টি। একবার ম্যাডাম (রওশন এরশাদ) এক হাজার ভোটে হেরেছেন। নেতিবাচক ভাবার কোনো কারণ নেই। নির্বাচনে হারজিত আছে। আমি লড়াই করছি।”
ছাড় নয় জি এম কাদেরকেও
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবার রংপুর-৩ এর পাশাপাশি প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ঢাকা-১৭ আসনেও।
এ দুটি আসনের মধ্যে রংপুর সদরে জাতীয় পার্টির শক্তি প্রশ্নাতীত। সেখানে দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বা দলের অন্য প্রার্থীরা সব সময় সহজ জয়ে পেয়ে আসছেন।
তবে ঢাকা-১৭ আসনে জি এম কাদেরের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আলী আরাফাত। এখানে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা।
আরাফাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "নির্বাচনে যে কেউ আসুক আমি তাকে ইতিবাচকভাবেই দেখি। নির্বাচনে প্রার্থী বেশি হওয়ার বিষয়টা ইতিবাচক। এতে ভোটারদের আগ্রহ বাড়বে, নির্বাচনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, এটাও ইতিবাচক দিক হিসেবেই দেখি। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ঘাটতি রাখব না। শ্রম, মেধা সবটুকু দিয়ে মানুষের কাছে ভোটের জন্য যাব।"
জি এম কাদেরের স্ত্রী শেরীফা কাদেরকে ঢাকা-১৮ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। এ আসনে আগে নির্বাচন করতেন আওয়ামী লীগের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। তার মৃত্যুর পর ২০২০ সালের নভেম্বরের উপনির্বাচনে জয় পাওয়া মোহাম্মদ হাবিব হাসান এবারও নৌকার প্রার্থী।
ওসমান পরিবারের জাপা প্রার্থীর পাশেই শুধু আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা নারায়ণগঞ্জের খান সাহেব ওসমান আলী পরিবারের এক সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান এবারও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী।
তার ভাই এ কে এম সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টি থেকে। এ আসনে দৃশ্যত টানা চারবার লাঙ্গলের বিপক্ষে যায়নি আওয়ামী লীগ।
নবম সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে মহাজোটের মনোনয়ন পান জাতীয় পার্টির নাসিম ওসমান। পরেরবার ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনেও এ আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের বছরেই নাসিম ওসমান মারা গেলে উপনির্বাচনে সেখানে জাতীয় পার্টি মনোনয়ন দেয় তার ভাই এ কে এম সেলিম ওসমানকে। এ উপনির্বাচনেও প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হয় মহাজোট থেকে। এবারও জাতীয় পার্টি তাকে আবার প্রার্থী করেছে।
আরও পড়ুন:
আওয়ামী লীগের ফাঁকা রাখা আসনে জাপার প্রার্থী সেলিম ওসমান
আওয়ামী লীগের ছাড় ‘চান না’ জি এম কাদেরের উপদেষ্টা
ভোটের মাঠে দুই দলের প্রার্থীদের ইতোমধ্যে নেমে যাওয়ার এমন প্রেক্ষাপটে ২০১৪ সালের মতো আসন ছাড়ের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো আলোচনা হচ্ছে না বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিশেষ দূত মাসরুর মওলা।
তিনি বলেন, “আমরা আলোচনার অপেক্ষা করছি না। আলোচনার তো প্রয়োজন বোধ করছি না।
“ইলেকশনের কথা যদি ধরেন, গণতন্ত্রের কথা যদি চিন্তা করেন, সেখানে আলোচনা বা সমঝোতার কী দরকার? সেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে, মানুষ তার ইচ্ছামতো ভোট দেবে।”
আওয়ামী লীগ ছাড় না দিলে ভোটে জাতীয় পার্টি কতটা ভালো করতে পারবে- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “সরকার যদি সত্যিকারের ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করে, ভোট যদি সঠিক হয়, তাহলে অবশ্যই আমরা ভোট পাব।
“আমরা তো আর আওয়ামী লীগের ভোট পাব না, কিন্তু দেশে অ্যান্টি আওয়ামী লীগ (আওয়ামী লীগ বিরোধী) ভোট তো আছে। সেই ভোট তো অবশ্যই পাব। সে ক্ষেত্রে আমরা আশা করি সম্মানজনক অবস্থান থাকবে আমাদের।”
আসন সমঝোতা নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এই প্রশ্নে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “এই ধরনের কোনো কথা এখনও হয়নি।”
আলোচনা কি হতে পারে- জানতে চাইলে জবাব আসে, “বলা মুশকিল।”
জোটের আসন ভাগাভাগি কীভাবে, অপেক্ষা আরও এক সপ্তাহ
৩২ নয়, ভোটে আসা দলের সংখ্যা ২৯টি: ইসি
স্বতন্ত্রের রেকর্ড: প্রতিদ্বন্দ্বিতার হাতিয়ার না শঙ্কার