“তারা সামান্য ভুল করেছে; ওনাদের দলের নাম হওয়া উচিৎ আমজনতার শত্রু পার্টি”, বলেন আমজনতার দলের সাধনা মহল।
Published : 17 Apr 2025, 06:29 PM
ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে নতুন আত্মপ্রকাশ করা ‘বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টির’ নাম নিয়ে আপত্তি তুলেছে ‘আমজনতার দল’।
মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বাধীন এ রাজনৈতিক দলটি বলছে, তাদের দলের নামের আগে ‘আ’ শব্দ বসিয়ে নতুন দল করা হয়েছে, যেটা ‘বাজে সংস্কৃতি’।
রফিকুল আমীনের দলটিকে যেন নিবন্ধন দেওয়া না হয়, সে দাবি জানিয়ে আমজনতার দল নির্বাচন কমিশনে (ইসি) একটি আবেদনও দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের সামনে ‘বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টির’ বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান কিছু মানুষ।
আমজনতার দলের সদস্য সচিব মো. তারেক রহমান বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনকে অবগত করতে এসেছি যে, একটা দল এক্সিসটিং রয়েছে। এর নামের আগে একটা ‘আ’ ও বাংলাদেশ লাগিয়ে দিয়ে নতুন দল করছে, এটা বাজে সংস্কৃতি।”
এর আগে সকালে বনানীতে শেরাটন হোটেলে এক অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টির’ আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
এরপর বিকালে আমজনতার দলের প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে একই নামে বা কাছাকাছি নামে কোনো দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার বিষয়ে চিঠি দেয়।
এ বিষয়ে আমজনতার দলের সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, গণঅধিকার পরিষদ দুই ভাগ হওয়ার পর একাংশ নিবন্ধন পায়, অন্য অংশের নিবন্ধনের বিষয়টি ‘পেন্ডিং’ রয়েছে। এ অবস্থায় নাম পাল্টে এ বছরের ২৮ জানুয়ারি আমজনতার দলের আত্মপ্রকাশ করে।
তিনি বলেন, “আমজনতার দল ইসির কাছে নথিভুক্ত নাম। সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও এ নামে আমন্ত্রণ পাচ্ছি।
“আমরা জানুয়ারিতে নথিভুক্ত ও নিবন্ধনের ফরম সংগ্রহ করেছি। এ নামে আরেকটা দল নথিভুক্ত হতে পারে না। এ নামের কাছাকাছি কোনো দল এলেও তা অগ্রাহ্য করব- এ বিষয়টি আমরা কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।”
নাম হওয়া উচিৎ ‘আমজনতার শত্রু পার্টি’
ইসিতে চিঠি দেওয়ার পর নির্বাচন ভবনের সামনে আমজনতার দলের সদস্য সচিব মো. তারেক রহমান বলেন, “যদি এমন হত যে তারা আমাদের অংশ ছিল, বিবাদ হয়ে ভাগ হয়ে গেছে। জাপার যেমন এ অংশ, ওই অংশ। এটা আমজনতার অংশ নয়। নতুন দল করেছে, নতুন নাম সিলেক্ট করা দরকার ছিল।”
তিনি বলেন, “আমরা তো রফিকুল আমীনের দলের অংশ নই, তাদের দলের কেউ এখান থেকে যায়নি। আমজনতার দল দুভাগ হলে জানতে পারতাম; তারা তো আমজনতার কেউ নয়।”
আমজনতার দলের প্রতিনিধি সাধনা মহল বলেন, “তারা সামান্য ভুল করেছে। ওনাদের দলের নাম হওয়া উচিত আমজনতার শত্রু পার্টি।
“ডেসটিনি রূপ দিয়ে অপকার ছাড়া কি কোনো নাগরিকের উপকার হয়েছে? এ দেশে কি কালো টাকার মালিক, চোর, ডাকাতদের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন দেওয়ার কথা ছিল। এগুলো বাস্তবায়ন করা যাবে না।”
তিনি বলেন, “ডেসটিনির মালিক বাংলাদেশে রাজনীতি করবে নাকি? সে প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজব।
“চিহ্নিত পুরনো, একেবারে চেনাজানা, কে না জানে ডেসটিনির বাটপারির কথা। সে বাটপার দল কালোটাকা ঢালবে, পেশি শক্তি আনবে। সেই কালো টাকা, মাসলম্যানের রাজনীতি, নির্বাচন, নিবন্ধন কোনোটাই এ নির্বাচন কমিশন করবেন না। আমরা আস্থা রাখছি, নতুন ইসি নিশ্চয়ই বিষয়টাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।”
২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরে নিজেদের দ্বন্দ্বে দলটি দুই ভাগ হয়ে যায়।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক পদ থেকে সরে যান রেজা কিবরিয়া।
এরপর গণঅধিকার পরিষদের একটি অংশের নেতৃত্বে ছিলেন নুরুল হক নুর ও রাশেদ খান। অপর অংশটি চলছিল মিয়া মশিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বে।
এর মধ্যে গত ২৮ জানুয়ারি মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নাম বদলে হয় ‘আমজনতার দল’।
ডেসটিনির ক্ষতিগ্রস্তদের বিক্ষোভ ইসির সামনে
ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনকে নতুন দলের দলের নিবন্ধন না দিতে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন করেছে ডেসটিনির ‘ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা’।
তারা বিনিয়োগকারীদের পাওনা দ্রুত পরিশোধের দাবি জানান। রফিকুল আমীনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগানও দেন তারা।
‘ডেসটিনির অর্থ লুটেরা প্রতারক রফিকুল আমিনের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রতিবাদে’ এ মানবন্ধন করা হয়।
আরও পড়ুন-