“সাংস্কৃতিকভাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধিতাই আমাদের সংস্কৃতির মূল চরিত্র। তার মানে সকল প্রকার জাতিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।”
Published : 18 Apr 2025, 06:55 PM
গণঅভ্যুত্থানের পরেও শেখ হাসিনা সরকারের সংবিধান বহাল রাখায় বিদ্যমান সরকারকে ‘বৈধ’ মনে করেন না কবি ও তাত্ত্বিক ফরহাদ মজহার।
সকল প্রকার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর প্রত্যয় জানিয়ে তিনি বলেছেন, “এই গণঅভ্যুত্থান আমাদেরকে নতুন রাষ্ট্র গঠনের দিকে নেয় নাই। গণঅভ্যুত্থানের শেষে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সংবিধান বহাল রাখা হয়েছে। তা ঠিক বলে মনে করি না।
“এই সংবিধানের অধীনের সরকারকে বৈধ মনে করি না। আমি জনগণের পক্ষে কথা বলি। এ সরকারে পক্ষে সবসময় থাকার প্রশ্নই আসে না।”
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে ইমাজিনেক্সট ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘জাতীয় সাংস্কৃতি: প্রেক্ষিতে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় কথা বলছিলেন ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেন, “জাতিবাদের একটি রূপ হচ্ছে বাঙালি জাতিবাদ, যার ইতিহাস হচ্ছে ফ্যাসিবাদ। ফ্যাসিবাদ, ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সাংস্কৃতিকভাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধিতাই আমাদের সংস্কৃতির মূল চরিত্র। তার মানে সকল প্রকার জাতিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।”
আর এই অবস্থান ‘বাঙালি জাতিবাদের’ পাশাপাশি সব প্রকার ধর্মীয় জাতিবাদের বিরুদ্ধেও জানিয়ে তিনি বলেন, “ইসলামে জাতিবাদের স্থান নেই।”
শিক্ষার্থীদের জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিকে দেশের ‘নতুন গঠনতন্ত্র’ হিসেবে বর্ণনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, “সংবিধান মানে আইন। ইংরেজ আইন প্রণয়ন করে, জনগণ গঠনতন্ত্র করে; সংবিধান মানেই হচ্ছে ঔপনিবেশিক শাসক। আপনি লুটের মাফিয়া শ্রেণির পক্ষে একটা শাসনতন্ত্র বানাবেন। একটা আইন দিয়ে গরিবদেরকে শোষণ করবেন। সাধারণ মানুষকে শোষণ করবেন। আগের মতই চলবেন। আর গঠনতন্ত্র মানে জনগণ নিজেরা অংশগ্রহণ করে।”
তার মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবারের পহেলা বৈশাখের মাধ্যমে ‘সবার উৎসবের’ নজির দেখিয়েছে।
“এবারের পহেলা বৈশাখে বাঙালি ছাড়াও ছোট ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী অংশগ্রহণ করেছ। এই উৎসবে ধর্মনিরপেক্ষ, ধার্মিক, আস্তিক, নাস্তিক, সনাতন ধর্মালম্বী, বৌদ্ধ ধর্মালম্বী এবং সকলে অংশগ্রহণ করেছে।”
‘নিরাপদ সড়ক চাই’–এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে ইমাজিনেক্সট ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র ও নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ ইমতিয়াজের সঞ্চালনায় ধারণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাফর ফিরোজ।
বক্তব্য দেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি শহীদুল ইসলাম।