এর আগে দুটি উঠান বৈঠকের পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলার অভিযোগ করেছিলেন মনিরুল হক সাক্কু।
Published : 05 Mar 2024, 11:11 PM
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনের প্রচার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা ও মারধরের অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী তাহসিন বাহার সূচনার সমর্থকরা।
মঙ্গলবার সকালে হামলা ও মারধরের প্রতিবাদ জানিয়ে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ দাবি করেন, এতে তিনজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় রাতেই কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত শতাধিক জনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান কাউন্সিলর।
সোমবার রাতে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী ও কুমিল্লা সিটির সাবেক দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু অভিযোগ করে বলেন, বিকালে তার একটি উঠান বৈঠকে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া একই সময়ে নগরীর রেসকোর্স এলাকায় ‘রেড রুফ ইন’ নামক তার হোটেল ও রেস্তোরাঁয় হামলা হয়েছে। এ হামলার জন্য তিনি বাস প্রতীকের প্রার্থী তাহসিন বাহার সূচনার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন।
এর আগে শুক্রবার বিকালে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাটাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গদারমার কলোনিতে সাক্কুর একটি উঠান বৈঠকে হামলা চালানো হয়। সেখানে চেয়ার ও মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়। সেদিনও সাক্কু, এ হামলার জন্য সূচনার সমর্থকদের দায়ী করেছিলেন।
যদিও দুটি হামলার অভিযোগই সূচনার পক্ষ থেকে নাকচ করে দেওয়া হয়।
এই অবস্থার মধ্যেই এবার সাক্কুর কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ আনলেন সূচনার সমর্থক হিসেবে পরিচিত কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সরকার মাহমুদ জাবেদ।
এ সময় সেখানে সূচনার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুর রহমান, স্থানীয় নারী কাউন্সিলর কাউসারা বেগম সুমী উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লা সিটি ভোট: সাক্কুর উঠান বৈঠকে হামলা-ভাঙচুর
সাক্কুর বৈঠকে হাতবোমা বিস্ফোরণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা
লিখিত বক্তব্যে সরকার মাহমুদ জাবেদ বলেন, “সোমবার বিকালে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরুষ ও নারী নেতাকর্মীদের নিয়ে বাস মার্কার প্রচার চালাই। বিকাল ৫টার দিকে রেসকোর্স এলাকার পুরাতন পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় ইমরুলের বাসার সামনের রাস্তায় পৌঁছালে মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর ঘড়ি প্রতীকের শতাধিক কর্মী জড়ো হয়ে বাস প্রতীকের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে তারা।
“এতে বাস প্রতীকের কর্মী শাহীনুর রহমান ও মো. কামরুল ইসলাম আহত হয়। এ সময় আমি কর্মীদের রক্ষার চেষ্টা করলে আমাকেও তারা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।”
কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ এ সময় দাবি করেন, সোমবার সাক্কুর কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাটি ছিল ‘বানোয়াট ও পরিকল্পিত’। তিনি বলেন, “বাস প্রতীকের কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাকে আড়াল করতেই সেটি করা হয়।”
তবে বাস প্রতীকের কর্মী সরকার মাহমুদ জাবেদের এ ধরনের অভিযোগকে ‘হাস্যকর ও নাটক’ বলে দাবি করেছেন মনিরুল হক সাক্কু।
তিনি বলেন, “রেসর্কোস এলাকায় আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কীভাবে কাউন্সিলর জাবেদের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে- সেই ভিডিও এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। আমার কর্মীরা যে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে তার একটি ভিডিও বা সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে বলেন। বরং তারা কীভাবে নাটক সাজিয়েছে সেই ভিডিও কুমিল্লার মানুষের কাছে আছে।”
সাক্কু এ সময় জানান, তার উঠান বৈঠকে হাতবোমার বিস্ফোরণ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদের আহত ও ভাঙচুরের ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় এরই মধ্যে দুটি মামলা হয়েছে।
৯ মার্চ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএমে) মাধ্যমে কুমিল্লা সিটিতে মেয়র পদে ভোটগ্রহণ হবে। এতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দুজন এবং সাক্কুসহ বিএনপির সাবেক দুজন নেতা লড়ছেন।
আরও পড়ুন:
এমপি বাহারকে ইসির চিঠি, মেয়ের প্রচারে না থাকার অনুরোধ
এমপি বাহার মেয়ের জন্য ভোট চাইছেন, অভিযোগ তানিমের
সাক্কুর বৈঠকে হাতবোমা বিস্ফোরণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা
কুমিল্লা সিটি ভোট: সাক্কুর উঠান বৈঠকে হামলা-ভাঙচুর
কুমিল্লা সিটির উপনির্বাচন: কায়সারকে কারণ দর্শানোর নোটিস
কুমিল্লা সিটির উপনির্বাচন: ‘পরিবর্তনের ইতিহাস রচনা’ করতে চান কায়সার-তানিম
‘নতুন অধ্যায়’ গড়তে চান সূচনা, আরেকবার সুযোগ চান সাক্কু
কুমিল্লা সিটির উপনির্বাচন: প্রতীক নিয়ে মাঠে চার প্রার্থী
কুমিল্লা সিটি উপনির্বাচন: সূচনা ছাড়া সবারই অভিযোগ
২০০৮ সালের পর কারা জমি কিনেছেন সেই তালিকা দেখুন: সাক্কুর স্ত্রী