নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নোটিসের জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার।
Published : 27 Feb 2024, 01:03 PM
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সারকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তা।
নির্বাচনি প্রচারের সময় মিছিল করার অভিযোগে তাকে সোমবার রাতে এই নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুসিকের মেয়র পদের উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন।
নোটিসে বলা হয়েছে, “সোমবার বিকালে নগরীর রেইসকোর্স মোড় ও রেলওয়ে ফ্লাইওভার এলাকার রাস্তায় মিছিল করেন আপনি (নিজাম উদ্দিন কায়সার)। সিটি কর্পোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর ১১(২) বিধি অনুসারে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো প্রকার মিছিল বা কোনোরূপ শো-ডাউন করতে পারেন না। এটি উক্ত বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
“এই কার্যক্রমের জন্য কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না- তার জবাব আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা হলো।”
মঙ্গলবার সকালে কারণ দর্শানোর নোটিসের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরহাদ হোসেন বলেন, “সব প্রার্থীকেই পর্যবেক্ষণে রেখেছে নির্বাচন কমিশন। অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ প্রসঙ্গে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, “আমি নির্বাচনি আচরণবিধি মেনেই প্রচার চালাচ্ছি। তবে চারদিকে এখন ঘোড়া মার্কার গণজোয়ার। আমি যেখানেই যাচ্ছি- সেখানে মানুষের ঢল নামছে।”
কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক এই সভাপতি আরও বলেন, “কুমিল্লার মানুষের কণ্ঠে একটাই কথা-তারা পরিবর্তন চায়। ভোটাররা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন- যেহেতু পরিবর্তনের স্লোগান আমিই তুলেছি, এজন্য তারা আমার সঙ্গেই থাকবেন।”
কারণ দর্শানোর নোটিস হাতে পেয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তার জবাব দেওয়া হবে বলে জানান এই প্রার্থী।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের এ উপনির্বাচনে ভোটের মাঠে আছেন চার প্রার্থী। যাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দুজন এবং দুজন ‘বিএনপিপন্থি হিসেবে পরিচিত’।
তারা হলেন- কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসীন বাহার সূচনা, মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি নুর-উর রহমান মাহমুদ তানিম, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কুমিল্লা সিটির সাবেক দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু এবং কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার।
গত ২২ জানুয়ারি তফসিল ঘোষণার পর ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন। প্রতীক পেয়েই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে জোর প্রচার চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। আগামী ৯ মার্চ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমের মাধ্যমে কুমিল্লা সিটির মেয়র নির্বাচন করবেন ভোটাররা।
এর আগে ২০২২ সালের ১৫ জুনের নির্বাচনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) তৃতীয় নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন।
রিফাত ছিলেন কুমিল্লা সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়র। প্রতিদ্বন্দ্বী ও আগের দু’বারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর চেয়ে তিনি মাত্র ৩৪৩ ভোট বেশি পেয়েছিলেন।
ওই বছরের ৭ জুলাই রিফাত মেয়রের দায়িত্ব নেন। কিন্তু গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রিফাতের মৃত্যুতে ১৮ ডিসেম্বর মেয়রের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। পরে গত ২২ জানুয়ারি মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দার এই মহানগরীতে ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০; তাদের মধ্যে নারী ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬, আর হিজড়া ভোটার ২ জন।
মোট ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই সিটি করপোরেশনে গত নির্বাচনে ১০৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করেছিল নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন...
‘স্মার্ট কুমিল্লা’ উপহার দিতে চান সূচনা, ইভিএমে ‘বিশ্বাস নেই’ সাক্কুর
সূচনার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তানিমের
কুমিল্লা সিটি উপনির্বাচন: চার 'শক্তিশালী' প্রার্থীতে ভোট জমার ইঙ্গিত
কুমিল্লা উপনির্বাচন: মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন বাহারকন্যা সূচনা
কুমিল্লা সিটি উপনির্বাচন: সাক্কু-কায়সার ভোটের মাঠে
ময়মনসিংহ-কুমিল্লা সিটি ভোট: মনোনয়ন জমা ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত