বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন বিজিবির মহাপরিচালক। এর মধ্যেই কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তবর্তী এলাকা গোলাগুলির বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী জানান, রোববার রাত ১১টা থেকে সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত হোয়াইক্যং সীমান্তের বসবাসকারীরা মিয়ানমারের ভেতর থেকে গোলাগুলির শব্দ পান।
হোয়াইক্যং ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাজী জালাল আহমদ বলেন, “কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবার সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কয়েকটি এলাকা থেকে ভারি অস্ত্রের বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এতে আমাদের এলাকা পর্যন্ত কেঁপে উঠছে। এলাকার মানুষ আতঙ্কের মধ্য রয়েছে। “
সীমান্তের বাসিন্দারা বলেন, বিকট শব্দে মনে হচ্ছে, ভূ-কম্পন হচ্ছে। তাই এখানে বসবাসরত লোকজন ভয়ভীতির মধ্য রয়েছেন।
টেকনাফ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, “সীমান্তে আবারো গোলাগুলির খবর জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জেনেছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া সীমান্তের তিনশ মিটারের মধ্যে বসবাসকারীদের পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে আমরা তাদের খোঁজ খবর রাখছি।”
এদিকে, সোমবার সকাল থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন শুরু করেছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ।
বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কর্নেল মোহাম্মদ মেহেদী হোসাইন কবির জানিয়েছেন নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সীমান্ত পরিস্থিতি পরিদর্শন করছেন বিজিবির মহাপরিচালক।
কর্নেল মেহেদী বলেন, “সোমবার সকালে বিশেষ হেলিকপ্টারে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ কক্সবাজার পৌঁছান। এরপর সকাল ১০টা থেকে ঘুমধুমের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন শুরু করেন।
"পরিদর্শনকালে বিজিবির সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।"
দুপুরে সীমান্ত পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে বিজিবির মহাপরিচালক আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান বিজিবির এ কর্মকর্তা।
প্রায় দুই মাস ধরে বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু, কোনার পাড়া, উত্তর পাড়া, বাইশফাঁড়ি ও চাকমা পাড়াসহ উখিয়া এবং টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংর্ঘষ চলছে।
এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমার দিক থেকে ছোড়া মর্টার শেলসহ বিভিন্ন গোলাবারুদ বাংলাদেশে এসে পড়েছিল। মিয়ানমারের জেট ফাইটার হেলিকপ্টারও কয়েকবার আকাশসীমা লংঘনের ঘটনা ঘটিয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে ঘুমধুমের কোনার পাড়া সীমান্তের শূণ্যরেখার ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা শিশু নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়।
সীমান্তে গোলাগুলির এসব ঘটনায় ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বেশ কয়েকবার তলব করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন
মিয়ানমারকে ’ফায়দা’ লুটতে দেব না: রাষ্ট্রদূতদের ডেকে জানাল ঢাকা
বাংলাদেশের দূতকে ডেকে ফের আরাকান আর্মি ও আরসাকে দুষল মিয়ানমার
মিয়ানমার সীমান্তে ‘মাইন’ বিস্ফোরণে বাংলাদেশি আহত
মিয়ানমারের গোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, হতাহতের খবর
মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবিতেই আস্থা রাখছে সরকার
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আতঙ্ক, ঝুঁকিপূর্ণদের ‘তালিকা হচ্ছে’
মিয়ানমারের গোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, হতাহতের খবর
মিয়ানমার থেকে গোলা আসা বন্ধ না হলে জাতিসংঘে তুলব: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সীমান্তে ‘আতঙ্ক’, ঘুমধুমের এসএসসির কেন্দ্র গেল কুতুপালংয়ে
সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাগুলি বন্ধ হলেও আতঙ্কে স্থানীয়রা
মিয়ানমারের দূতকে ফের ডেকে নিয়ে গোলাবর্ষণের প্রতিবাদ
মিয়ানমারের নাগরিকদের ঢুকতে দেওয়া হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বান্দরবান সীমান্তে এবার পড়ল মিয়ানমারের যুদ্ধবিমানের গোলা: পুলিশ
মর্টার শেল: মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব, কড়া প্রতিবাদ ঢাকার
মিয়ানমার থেকে উড়ে এসে বান্দরবান সীমান্তে পড়ল দুটি মর্টার শেল