পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রটি কাছাকাছি কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়।
Published : 17 Sep 2022, 01:23 AM
মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলি ও ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে বান্দরবানের ঘুমধুমের একটি এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র কক্সবাজারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ শুক্রবার রাতে এ কথা জানান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রটি কাছাকাছি কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে।
কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের অনুরোধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে তিনি জানান।
বান্দরবান জেলা প্রশাসকের ফেইসবুক পেইজেও কেন্দ্র স্থানান্তরের কথা বলা হয়।
‘ডিসি বান্দরবান’ ফেইসবুক পেইজে বলা হয়, “বান্দরবান পার্বত্য জেলাধীন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়টি বাংলাদেশ - মায়ানমার সীমান্তে অবস্থিত এবং ২০২২ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার জন্য একটি অনুমোদিত কেন্দ্র। মায়ানমার - বাংলাদেশ সীমান্তের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে এসএসসি পরীক্ষার্থীবৃন্দ ও তাদের অভিভাবকদের উৎকন্ঠা বিবেচনায় নিয়ে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রটি পার্শ্ববর্তী কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে (যা কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত) স্থানান্তর করা হল।
“ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষার্থীকে যথাসময়ে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এসএসসি/ এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ করা হল।”
শুক্রবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে ‘মাইন’ বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশি যুবকের পা উড়ে গেছে।
একই দিন সন্ধ্যায় মিয়ারমারের দিক থেকে কয়েকটি গোলা সীমান্তের এপারে এসে পড়ে। এতে একজন নিহত ও অন্তত পাঁচজন আহত হন বলে স্থানীয়রা জানান। এখন সীমান্তের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাখাইনদের সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘাতের মধ্যে সীমান্তে গোলা এসে পড়েছে; তবে সেটি বিস্ফোরিত হয়নি।
এরপর বেশ কয়েকবার মিয়ানমারের যুদ্ধবিমানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটে। সীমান্তের বাসিন্দারা নিয়মিতই গোলাগুলির শব্দ পাচ্ছিলেন; যাতে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সংবাদ মাধ্যমে জানা গেছে, রাখাইনদের সংগঠন আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বোমা বর্ষণ করে।
সংঘাতের মধ্যে গত ২৮ অগাস্ট দুপুরে বান্দরবানের ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ে।
এরপর ৩১ অগাস্ট রাখাইন রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহরতলীতে আরাকান আর্মির সদস্যরা একটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালিয়ে ১৯ জনকে হত্যা করে বলে প্রকাশিত সংবাদে দাবি করা হয়। আরাকান আর্মির দখলে নেওয়া পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিতে সেনাবাহিনীর এগোনোর খবরও আসে।
এর মধ্যে ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টারের গোলা বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে এসে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোলাগুলির কারণে অনেকেই বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। তারা সীমান্ত থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকার চেষ্টা করছেন। সীমান্ত এলাকায় রাবার বাগানে যেসব শ্রমিক কাজ করেন তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আপাতত সেখানে শ্রমিকরা কাজ করতে যাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন:
সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাগুলি বন্ধ হলেও আতঙ্কে স্থানীয়রা
মিয়ানমারের দূতকে ফের ডেকে নিয়ে গোলাবর্ষণের প্রতিবাদ
মিয়ানমারের নাগরিকদের ঢুকতে দেওয়া হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বান্দরবান সীমান্তে এবার পড়ল মিয়ানমারের যুদ্ধবিমানের গোলা: পুলিশ
মর্টার শেল: মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব, কড়া প্রতিবাদ ঢাকার
মিয়ানমার থেকে উড়ে এসে বান্দরবান সীমান্তে পড়ল দুটি মর্টার শেল
মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল: ‘কড়া’ প্রতিবাদ জানাবে বাংলাদেশ