মিয়ানমার থেকে গোলা আসা বন্ধ না হলে জাতিসংঘে তুলব: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নতুন করে রোহিঙ্গা আসা ঠেকানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2022, 11:56 AM
Updated : 17 Sept 2022, 11:56 AM

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে গোলা আসা বন্ধ না হলে বিষয়টি জাতিসংঘে তোলার হুঁশিয়ারি দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মিয়ানমারে সংঘাতে গত কিছু দিন ধরে গোলা আসার ধারাবাহিকতায় শুক্রবার একজনের মৃত্যুর পর তার এই হুঁশিয়ারি এল।

শনিবার ঢাকার ধানমণ্ডিতে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, স্পষ্ট কথা, আমরা এটার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে। আমরা সেই চেষ্টাই করছি।

“আমাদের পক্ষ থেকে না হলে জাতিসংঘের কাছে তুলব, সব কিছু করব।”

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র দল আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘাত চলছে। সেই সংঘাতের গোলা বাংলাদেশে এসে পড়ছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এর আগে জানিয়েছিলেন।

গত ২৮ অগাস্ট দুপুরে বান্দরবানের ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ার পর ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। তার পর আরেক দফায়ও তাকে ডেকে প্রতিবাদ জানানো হয়।

তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “এটা উসকানিমূলক না। এটা স্ট্রে (আকস্মিক চলে এসেছে)।”

এরপর শুক্রবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু ও কোণাপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্যাম্পের ভেতর গোলা পড়ে একজন নিহত হয়।

Also Read: মিয়ানমার ও আরাকান আর্মির মধ্যে যুদ্ধের গোলা সীমান্তে এসে পড়ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

Also Read: মর্টার শেল: মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব, কড়া প্রতিবাদ ঢাকার

Also Read: মিয়ানমারের গোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, হতাহতের খবর

এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএনপি শনিবারই সংবাদ সম্মেলন করে।

তার আগেই ঢাকা আহসানিয়া মিশনের উদ্যোগে একটি বই প্রকাশনা উৎসবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে তা নিয়ে কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সীমানায় এসে যে গোলাবারুদ পড়ছে, এটা নিয়ে খুব কড়া ভাষায় আমরা প্রতিবাদ করেছি। আমাদের বিজিবি ওদের বিজিপির সঙ্গে কথা হচ্ছে নিয়মিত, কথা হচ্ছে তাদের আর্মির সাথেও। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ডেকে পাঠিয়ে আমাদের অবস্থানের কথা সুস্পষ্ট ভাবেজানিয়ে দিয়েছি।”

বাংলাদেশ সংঘাতে জড়াতে চায় না জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রী কখনও যুদ্ধ চান না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হোক। আমরা চাই তাদের যে অভ্যন্তরীণ সমস্যা তাদের সীমানার ভেতরেই থাকুক, তাদের ভেতরে যে তাদের ‘কনফ্লিক্ট’ সেগুলো তাদের ভেতরেই করতে হবে। আমরা মনে করি তারা তাদের ভুল বুঝতে পারবে, তারা ভবিষ্যতে সংযত থাকবেন।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন “আমরা লক্ষ্য করছি আরাকান আর্মি বলে একটি বিদ্রোহী গোষ্টী সেখানে যুদ্ধ করছে। কখনও দেখি তাদের (মিয়ানমার) সঙ্গে ভালো ভাব, আবার কখনও দেখি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ। ভেতরে কী রহস্য, সেটা তারাই জানে।”

মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর বোঝা বাংলাদেশকে টানতে হচ্ছে।

নতুন করে রোহিঙ্গা আসার শঙ্কার বিষয়ে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা যেন না আসে, সে ব্যাপারে বিজিবি, কোস্ট গার্ড কাজ করছে। তারপরেও দুই একজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসছে। তাদেরকে আবার পুশব্যাক করে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”