কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, ভাল পলিথিন শিট বাজারে ২০-২৫ টাকা গজে পাওয়া গেলেও এখানে দ্বিগুণ ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
Published : 01 Feb 2024, 06:11 PM
আরও পড়ুনগাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমায় আগতদের অনেকেই মূল ময়দানে জায়গা না পেয়ে আশপাশের রাস্তায় অস্থায়ী তাঁবু খাটানোর জন্য স্থানীয় দোকানদারদের কাছ পলিথিন শিট ও প্লাস্টিকের বস্তা কিনছেন। সুযোগ বুঝে মৌসুমি দোকানদাররাও বেশি দামে বিক্রি করছেন এসব পণ্য।
পুরনো চটের বস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবার মূল ময়দানের অনেক জায়গাতেই আয়োজকরা শামিয়ানা দিতে পারেননি। জেলা থেকে আগতরা নিজেদের কাপড় ও চট দিয়ে শামিয়ানা তৈরি করে খিত্তায় খিত্তায় বসেছেন।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বিভিন্ন জেলার মানুষ দলে দলে ইজতেমায় আসছেন। তারা মূল ময়দানে ঠাঁই না পেয়ে আশপাশের রাস্তা; এমনকি ভবনের ছাদেও অবস্থান নিচ্ছেন। তারা পলিথিন ও চট দিয়ে অস্থায়ী তাঁবু তৈরি করছেন।
তার জন্যও পলিথিন ও চটের বস্তার কদর বেড়েছে। পাশাপাশি অস্থায়ী তাঁবু খাটাতেও অনেকেই এ পণ্য খরিদ করছেন। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, সাধারণ দামের চেয়ে দ্বিগুণ মূল্যে তাদের এসব পণ্য ক্রয় করতে হচ্ছে।
পলিথিন শিট ও ফয়েল কাগজের তৈরি মলাট বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। আর তিনজনের থাকার প্লাস্টিক বস্তার দাম পড়ছে ৩০০ টাকা।
কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, ভাল পলিথিন শিট বাজারে ২০-২৫ টাকা গজে পাওয়া গেলেও এখানে দ্বিগুণ ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। কেউ কেউ ৬০ টাকা দিয়েও খরিদ করছেন। চট বা প্লাস্টিকের বস্তার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে। কেউ দেখার নেই। আগতরাও বাধ্য হয়েই কিনছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ইজতেমার ময়দান ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। কামারপাড়া সড়ক, বাটা রোড, ময়দান সংলগ্ন স্থান ও সড়কের পাশে এসব অস্থায়ী দোকান বসেছে।
এর পাশাপাশি জায়নামাজ, তসবিসহ প্রার্থনার নানা সামগ্রীর দোকান বসেছে ইজতেমা চত্বরে। বসেছে গরম কাপড়ের দোকানও। সেখানে চাদর, হাতমোজা, টুপি, গলাবন্ধ ইত্যাদির বিক্রিও ভাল হচ্ছে।
ইজতেমার ৭ নম্বর গেইটের সামনে পলিথিনে মোড়ানো কাগজের তৈরি মলাট বিক্রি করছিলেন পারভেজ আহমেদ। তিনি বলছিলেন, “আমি একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। আমার এক স্বজন কারখানার ঝুট মালামালের ব্যবসা করেন। কোনো একটি কারখানা থেকে ঝুট হিসেবে কাগজগুলো বের হয়েছিল। সেখান থেকে পাইকারি দরদাম করে আমি ইজতেমায় এনে বিক্রি করছি। এখানে যারা আসছেন তারা তা কিনেও নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, “ছয় টাকায় কাগজ কিনে এনে ১০ টাকায় বিক্রি করছি। চার টাকা লাভ হচ্ছে। কারও কাছে যদি টাকা কম থাকে, তাহলেও চেষ্টা করি তাকে দিয়ে দিতে।”
সবকিছুতে প্রায় দ্বিগুণ লাভ করছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে পারভেজ বলেন, “সবাই যে সমান টাকা দিচ্ছে তা না। আর যেহেতু চাহিদা আছে তাই বিক্রি করছি।”
পাশের আরেকটি দোকানে সাখাওয়াত হোসেন প্লাস্টিকের বস্তার তৈরি চট বিক্রি করছিলেন। তিনি জানান, প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমায় চট সংকট দেখা দেয়। এ চিন্তায় আগে থেকেই বস্তা তৈরি করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমি ৪০০ টাকা দাম চাচ্ছি। ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছি। ৩০০ টাকার কমে তো আর বিক্রি করা যায় না।”
ময়দানের পাশে প্রতি গজ পলিথিন ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছিলেন আরাফাত হোসেন। তিনি বলেন, “এবারের ইজতেমায় কিছু অংশে শামিয়ানা টানানো হয়নি। ময়দান ছেড়ে অনেকেই বসেছেন রাস্তার পাশে। তাই গজ পলিথিনের চাহিদা রয়েছে। আমরা সামান্য কিছু লাভে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছি গজ পলিথিন।”
পাশেই পটেটো ক্র্যাকার্সের প্যাকেটে তৈরি পলিথিন বিক্রি করছিলেন আনিছ। তিনি বলেন, “প্রতি পিস পলিথিন ২০ টাকায় বিক্রি করছি। এতে সামান্য আয় হলেও এখানকার মানুষদের খুব উপকার হচ্ছে।”
আরও পড়ুন
ইজতেমা: তুরাগ তীরের ঢল ময়দান ছাপিয়ে ভবনের ছাদে
দাঙ্গা-হাঙ্গামাকারীরা তাবলিগ জামাতের অনুসারী হতে পারে না: ধর্মমন্ত্রী
বিশ্ব ইজতেমা: শুরুর আগেই পূর্ণ ময়দান, মানুষ বসছে সড়কের পাশে
টঙ্গীতে ইজতেমায় আসা দুইজনের মৃত্যু
ইজতেমার প্রথম পর্ব: জোবায়ের পক্ষের অনুসারীরা আসছেন
ইজতেমা ঘিরে নাশকতার আশঙ্কা নেই: র্যাব ডিজি
ইজতেমা ঘিরে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান আইজিপির
ইজতেমা: গাড়ি পার্কিং ও চলাচলে পুলিশের নির্দেশনা
ইজতেমায় কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই: র্যাব
বিশ্ব ইজতেমা: পুলিশের একগুচ্ছ নির্দেশনা
ইজতেমা: শামিয়ানা অসম্পূর্ণ, আগতদের চট নিয়ে আসার পরামর্শ
এবার ইজতেমায় হকার বসতে পারবে না: পুলিশ
টঙ্গীতে স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি, প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ
ইজতেমায় চলবে ১১ জোড়া বিশেষ ট্রেন