জুবায়েরপন্থিদের মুরব্বি প্রকৌশলী আব্দুর নূর বলেন, “৬৪ জেলার মধ্যে ৪০ জেলায় এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।”
Published : 29 Jan 2024, 08:33 PM
গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের কিছু অংশে প্যান্ডেলের শামিয়ানার কাজ সম্পন্ন হলেও চটের অভাবে বিশাল এলাকা এখনও ফাঁকা রয়েছে। সেখানে শুধু বাঁশের খুঁটি পুঁতে রাখা হয়েছে।
এই অবস্থায় বিভিন্ন জেলা থেকে ইজতেমায় আগতদের শামিয়ানার চট নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
ইজতেমার প্রথম পর্বের আয়োজক জুবায়েরপন্থিদের মুরব্বি প্রকৌশলী আব্দুর নূর বলছেন, “গত বছর সা’দ অনুসারীদের মাঠ হস্তান্তরে বিলম্ব হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ময়দানে শামিয়ানা টানানো ছিল। রোদ-বৃষ্টিতে সিংহভাগ চট নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে এবার চট সংকট দেখা দিয়েছে।
“চট সংকট থাকায় এবার পুরো মাঠে শামিয়ানা টানানো সম্ভব হয়নি। তাই ইজতেমার মুরুব্বিদের পরামর্শ অনুযায়ী, বিভিন্ন জেলা থেকে ইজতেমাস্থলে আগত তাবলিগ জামাতের সাথিদের নিজ দায়িত্বে শামিয়ানা এনে টাঙ্গানোর অনুরোধ করা হয়েছে। ৬৪ জেলার মধ্যে ৪০ জেলায় এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।”
আগতরা এলেই শামিয়ানার কাজ সম্পন্ন হবে জানিয়ে প্রকৌশলী আব্দুর নূর বলেন, সোমবার রাতেই জেলাভিত্তিক খিত্তায় (অবস্থান) শামিয়ানা টানানোর জন্য তাবলিগ কর্মীরা আসবেন। এ ছাড়া পাহারা ও খিত্তাসহ বিভিন্ন নজমের কর্মী/সাথীরাও সোমবার রাতে ইজতেমাস্থলে চলে আসবেন। আর বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জেলার চিল্লাধারীরা ময়দানে চলে আসবেন।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে আলাদাভাবে। জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ২, ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি। চার দিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি।
সে হিসাবে এখন মাঠ প্রস্তুতির কাজ করছেন জুবায়ের অনুসারীরা। ইজতেমা শুরুর বাকি আর মাত্র তিনদিন।
সোমবার সকালে ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, বিদেশি মেহমানদের থাকার জায়গা, রান্নাঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা প্রস্তুত করা হয়েছে। বিদেশি মেহমানখানার পাশেই তৈরি করা হয়েছে বয়ানের মঞ্চ। মঞ্চের সামনে কয়েক একর জায়গায় টানানো হয়েছে চটের সামিয়ানা।
এর বাইরে পুরো মাঠে শুধু বাঁশ পুঁতে রাখা হয়েছে। জেলার লোকজন এখনও পুরোপুরি আসেননি। তবে কিছু স্বেচ্ছাসেবীকে ময়দানের শেষ মুহূর্তের কাজ করতে দেখা গেছে।
মাঠের উত্তর-পূর্ব পাশে কথা হয় চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা তাবলিগের সাথি ষাটোর্ধ্ব মো. মোজাম্মেল হকের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, “৪৪ বছর ধরে ইজতেমায় অংশ নিচ্ছি। এবারই প্রথম নিজ দায়িত্বে শামিয়ানার চট নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।
“প্রতিটি জেলার জন্য ১৮ ফুট প্রস্থ ও ৩৬ ফুট লম্বা জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাবলিগের সাথিরা ইজতেমা শেষে আবার নিজ দায়িত্বে তাদের এ শামিয়ানার চট খুলে নিয়ে যাবেন।”
শামিয়ানার বিষয়ে জানতে চাইলে জুবায়ের অনুসারী ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বি মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “আগের চটগুলো নষ্ট হয়ে গেছে, ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এ কারণে চট সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা জেলাগুলোকে নিজ নিজ দায়িত্বে শামিয়ানা নিয়ে আসতে বলেছি। তারা এলেই পুরো মাঠে শামিয়ানা টানানো হয়ে যাবে।”
আরও পড়ুন:
এবার ইজতেমায় হকার বসতে পারবে না: পুলিশ
টঙ্গীতে স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি, প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ
ইজতেমায় চলবে ১১ জোড়া বিশেষ ট্রেন